গণহারে দেশান্তরি হচ্ছে রোহিঙ্গারা

রোহিঙ্গা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

ইয়াঙ্গুন: নির্যাতন ও গ্রেপ্তার আতঙ্কে মিয়ানমার ত্যাগ করছে হাজার হাজার রোহিঙ্গা মুসলিম। রোহিঙ্গাদের উপর চলমান সরকারি বাহিনীর অভিযানে নৌকাযোগে থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়ায় পাড়ি জমাচ্ছে। মিয়ানমারের একটি এনজিও শুক্রবার এ তথ্য জানিয়েছে।

আরাকান প্রজেক্টের প্রধান ক্রিস লিউয়া আনাদুলো গণমাধ্যমকে বলেন, ‘গত এক সপ্তাহে আমরা ৮,০০০ রোহিঙ্গাকে উত্তর রাখাইন রাজ্য ত্যাগ করতে দেখেছি।  যেটি ২০১৩ সাল হতে প্রতি মাসে এ অঞ্চল ত্যাগ করত।’ দুই বছর আগে পশ্চিম মিয়ানমারে সংখ্যালঘু মুসলিম রোহিঙ্গা ও বৌদ্ধদের মধ্যে সহিংসতা শুরু হওয়ার পর থেকে গত সপ্তাহেই সবচেয়ে বেশি সংখ্যক রোহিঙ্গা দেশত্যাগ করেছে বলে মনে করা হচ্ছে।

মিয়ানমার ও বাংলাদেশের জল সীমান্তের কথা উল্লেখ করে লিউয়া আরো বলেন, ‘মিয়ানমারের পুলিশ দিনের বেলায় নৌকাগুলোকে নাফ নদীর মোহনায় আসতে দিচ্ছে। রোহিঙ্গাদের জাহাজে তোলার আগে তাদের কাছে অর্থ দাবিও করা হচ্ছে। অর্থ না দিলে রোহিঙ্গাদের জাহাজ বা নৌকায় উঠতে দেয়া হচ্ছে না। পরিকল্পিতভাবে এটি করা হচ্ছে।’

তিনি বলেন, নির্যাতন হতে মুক্তি পেতে রোহিঙ্গারা ব্যাপক সংখ্যায় প্রতিবছর মিয়ানমার ত্যাগ করে। বিশেষ করে বর্ষাকাল শেষ হয়ে আসলে এ সংখ্যা ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পায়। সম্প্রতি ধারাবাহিকভাবে রোহিঙ্গা ও ধর্মীয় নেতাদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে বলেও জানান লিউয়া।

তিনি জানান, ‘সম্প্রতি রোহিঙ্গা মুসলিমদের উপর ব্যাপক নির্যাতনের কারণে কয়েকজন মারা যায়। এ ঘটনায় রোহিঙ্গাদের মধ্য আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।’

দক্ষিণ এশিয়ায় সম্প্রতি আল-কায়েদা তাদের একটি নতুন শাখা খোলার ঘোষণা দিয়েছে। মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ এই ঘোষণার অজুহাতে রোহিঙ্গাদের উপর কঠোর ব্যবস্থা নিচ্ছে। আল-কায়েদা নেতা আইমান আল জাওয়াহিরি এক ভিডিও বার্তায় মিয়ানমারের মুসলমানদের অবস্থার উন্নয়নের ঘোষণা দেন।

জাওয়াহিরি এটিকে মিয়ানমারের মুসলমানদের জন্য ‘সুসংবাদ’ হিসেবে বণর্না করে বলেন, ‘অবিচার ও নিপীড়ন থেকে উদ্ধার তাদের মুক্ত করা হবে।’

খবর জানায়, ২০১২ সাল থেকে শতশত লোক নিহত হয়েছে যাদের অধিকাংশই রোহিঙ্গা মুসলিম। এছাড়া ১,৪০,০০০ লোক গৃহহীন হয়েছে। হাজার হাজার মুসলমান নৌকাযোগে পালিয়ে গেছে। পালাতে গিয়েও পাচারকারীদেরকে  বিশাল পরিমাণে অর্থ দিতে হয়েছে।

আবদ্ধ নৌকার উপর চাপাচাপি করে সমুদ্র পাড়ি দিয়ে রোহিঙ্গারা থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া কিংবা অস্ট্রেলিয়ায় যাচ্ছে কাজ পাওয়ার আশায়।

দক্ষিণ থাইল্যান্ডে মানবপাচারকারী  এবং দুর্নীতিগ্রস্ত স্থানীয় কর্মকর্তাদের নির্যাতনের শিকারও হচ্ছেন রোহিঙ্গা মুসলিমরা।

সূত্র: এএফপি, আরটিএনএন

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন