‘গরু দেখতে আসছেন কিনতে নয়’

fec-image

‘বাজারে গরু কেনা মানুষ নাই’ চল বাবা গরু নিয়ে বাড়িতে যাই। কাল বালাঘাটা বাজারে তোলব’। এভাবে নিজের ছেলেকে ডেকে কথাগুলো বলছিলেন গরু বিক্রেতা মোজাফ্ফর আহমদ। পাশের ছাইঙ্গা এলাকা থেকে আনুমানিক ৪মন ওজনের একটি গরু নিয়ে এসেছেন কালাঘাটা বাজারে। দাম হাকিয়েছেন ১লাখ টাকা।

তারমতো আবু বক্কর ফেন্সিঘোণা এলাকা থেকে বিশালাকৃতির গরু নিয়ে এসেছেন কালাঘাটা বাজারে। তার গরুটি বাজারের সবচেয়ে বড়। তিনি গরুর দাম হাকিয়েছেন ১লাখ ৫০ হাজার টাকা। সকাল থেকে অপেক্ষা করছিলেন ক্রেতার জন্য। বাজারে উৎসুক মানুষ এলেও ক্রেতা আসেনি। কথা হলে এই গরু ব্যাপারী বলেন, বাড়ির পাশে অনেক ভালো দাম হাকিয়েছিল গরুটির। কিন্তু বাজারে এনে তারচেয়ে কম দাম হাকাচ্ছে ক্রেতারা। এই বাজারের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ গরু এনেছেন নবী হোসেন। তার গরুটি ১লাখ ৩০ হাজার টাকা দাম হাকানো হলেও ১লাখ ১২ হাজার টাকা পর্যন্ত দাম উঠেছে। বুধবার দুপুরে শহরের কালাঘাটা গরুর বাজারে গিয়ে গরু ব্যবসায়ীদের এমন চিত্র দেখা গেছে। স্থানীয় সীরাতুন্নবী (স:) মাহফিল কমিটি এই বাজারটির ব্যবস্থাপনায় রয়েছে।

পবিত্র ঈদ-উল আযহা অর্থাৎ কোরবানী ঈদের আর বাকি মাত্র পাচঁ দিন। কিন্তু এখনো বান্দরবানে জমে উঠেনি পশুর বাজার। গরু বিক্রেতারা জানান, তারা এতোদিন লকডাউন উঠে গেলে বাজারে গরুর ক্রেতা বাড়বে ধারণা করেছিলেন, কিন্ত বাজারের অবস্থা মন্দা। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, করোনা আতঙ্কে এবার ক্রেতারা কিছুটা বাজার বিমুখ। কেউ কেউ সরাসরি বিভিন্ন খামারে গিয়ে গরু কিনছেন।

সরেজমিনে দেখা যায়, কালাঘাটা নতুন ব্রিজ সংলগ্ন খোলা মাঠে অনেকটা সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করে বাজারটি সাজানো হয়েছে। প্যান্ডেল থেকে কিছুক্ষণ পর পর ঘোষণা দেওয়া হচ্ছে মাস্ক ব্যবহার ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য। এসময় কথা হলে বাজার কমিটির সদস্য শাহ আলম জানান, সকাল থেকে ৩-৪টি গরু বিক্রি হয়েছে। প্রথমদিন ক্রেতা কম। তবে ঈদের আগে বাজার জমে উঠবে বলে মনে করেন তিনি। বাজারে গরু দেখতে আসা আবদুস সবুর জানান, তিনি গরু কিনতে আসেননি, বাজার দেখতে এসেছেন। গরু কেনার সময় আরও কয়েকদিন আছে।

জানা গেছে, বান্দরবান শহরে এবারের কোরবানীর ঈদে বালাঘাটা ও কালাঘাটা দুই স্থানে স্বাস্থ্যবিধি মেনে গরুর বাজারের অনুমতি দিয়েছে প্রশাসন। এই প্রসঙ্গে জেলা প্রশাসক ইয়াছমিন পারভীন তিবরীজি বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে বাজার পরিচালনার জন্য সবধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। মাইকিং করা হচ্ছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য সবার সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন তিনি।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন