গুইমারায় ৪ জুমচাষীকে অপহরণের অভিযোগ ইউপিডিএফের বিরুদ্ধে


খাগড়াছড়ির গুইমারা উপজেলায় সাপ্তাহিক বাজার বয়কট অমান্য করে কৃষিপণ্য নিয়ে বাজারে যাওয়ার পথে চার জুমচাষীকে অপহরণ করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে প্রসীত বিকাশ খীসার নেতৃত্বাধীন পাহাড়ের আঞ্চলিক সংগঠন ইউপিডিএফ (ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট)-এর বিরুদ্ধে।
মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) সকালে গুইমারা উপজেলার যৌথখামার নামক এলাকা হতে ইউপিডিএফ (প্রসীত) এর পোস্ট পরিচালক অংচি মারমা’র নেতৃত্বে ৫/৬ জন সশস্ত্র সন্ত্রাসী কর্তৃক ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের ০৪ জন জুমচাষিকে জোর পূর্বক ভয় দেখিয়ে অপহরণ করে তারা। পরে নিরাপত্তা বাহিনীর তৎপরতায় কয়েক ঘণ্টা পর দুপুর দেড়টার দিকে দেওয়ানপাড়া এলাকায় তাদের ছেড়ে দেওয়া হয় বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে।
অপহৃতরা হলেন—খাগড়াছড়ি জেলার গুইমারা থানার তৈকাতং এলাকার ভারত কুমার ত্রিপুরা, দলদলি পাড়ার প্রীতি কুমার ত্রিপুরা, নোয়াপাড়ার সোনানন্দ ত্রিপুরা এবং মোহন ত্রিপুরা। এরা সবাই স্থানীয় ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের জুমচাষী। পরিবার-পরিজন নিয়ে কৃষিকাজের ওপর নির্ভরশীল সাধারণ মানুষ তারা।
জানা যায় যে, গত ০৭ অক্টোবর ২০২৫ তারিখ হতে ইউপিডিএফ (প্রসীত) কর্তৃক গুইমারা বাজার বয়কট চলমান রয়েছে। কিন্তু বাজার বয়কট উপেক্ষা করে ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের ০৪ জন লোক কলা, জাম্বুরা ও অন্যান্য কাঁচামাল নিয়ে গুইমারা বাজারে আসার পথে তাদেরকে অস্ত্রের মুখে ভয় দেখিয়ে অপহরণ করা হয় ।
অপহরণের সময় তাদের ওপর শারীরিক নির্যাতন বা মুক্তিপণ দাবি করা হয়েছে কিনা—তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এলাকাটি দুর্গম ও ইউপিডিএফ অধ্যুষিত হওয়ায় বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহে প্রতিবন্ধকতা দেখা দেয়।
তবে গুইমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ এনামুল হক চৌধুরী বলেন, “বিষয়টি আমরা অবগত হয়েছি। তবে এখনো লিখিত কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে’।
যদিও অভিযোগ অস্বীকার করে ইউপিডিএফের সংগঠক জিমিথ চাকমা বলেন, “ইউপিডিএফের কোনো সদস্য কাউকে অপহরণ করেনি। ত্রিপুরা চারজন ব্যবসায়ীর সঙ্গে পাড়াবাসীর কথাকাটাকাটি হয়েছিল।
অন্যদিকে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেছেন, ইউপিডিএফ ‘বাজার বয়কট’-এর নামে সাধারণ মানুষের জীবন-জীবিকাকে জিম্মি করে রেখেছে। কৃষক ও শ্রমজীবীরা উৎপাদিত ফসল বাজারে নিতে না পারায় পরিবারগুলো চরম আর্থিক সংকটে পড়েছে। বয়কট অমান্য করলেই অপহরণ, চাঁদাবাজি ও ভয়ভীতি প্রদর্শনের শিকার হচ্ছেন সাধারণ মানুষ।
সচেতন মহল বলছে, পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তি ও স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত করে ইউপিডিএফসহ সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর কর্মকাণ্ড সাধারণ মানুষকে চরম দুর্ভোগে ফেলছে। তারা এসব সন্ত্রাসী তৎপরতা দমনে প্রশাসনের কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

















