parbattanews

গুইমারায় ত্রিপুরা তরুণীকে গণধর্ষণের অভিযোগে বাঙালি যুবক আটক

hhh

স্টাফ রিপোর্টার:

খাগড়াছড়ি জেলার গুইমারাতে অঞ্জলি ত্রিপুরা (১৭) নামে এক পাহাড়ি তরুণীকে দু’দিনব্যাপী অাটকিয়ে রেখে অব্যাহতভাবে গণধর্ষণের অভিযোগে এক বাঙালি যুবককে আটক করেছে পুলিশ। আটক আব্দুল মজিদ মিস্ত্রি(২৮) মৃত সিরাজুল ইসলামের ছেলে। মঙ্গলবার রাতে ওই তরুণীর মৌখিক অভিযোগের ভিত্তিতে মজিদকে আটক করে গুইমারা থানা পুলিশ।

ধর্ষিতা অঞ্জলি ত্রিপুরা রামগড় উপজেলার ফাতাছড়ার দিত্য কার্বারি পাড়ার পূর্ণকুমার ত্রিপুরার মেয়ে। সে গুইমারার বিশিষ্ট শিক্ষানুরাগী কুমেন্দ্র ত্রিপুরার মেয়ে কল্যাণ ত্রিপুরার বাসায় দীর্ঘ পাঁচ মাস যাবৎ গৃহকর্মীর কাজ করে আসছিল।

অঞ্জলি ত্রিপুরা বুধবার সকালে গুইমারা থানায় অবস্থানকালে পার্বত্যনিউজকে জানায়, গত সোমবার সকাল ৮টার দিকে গুইমারার সাপ্তাহিক হাটবারে (মঙ্গলবার) বেচার জন্য তার গৃহকত্রী কল্যাণ ত্রিপুরার মালিকানাধীন কলা বাগানে কলা কাটার জন্য যায়। একই সময় স্থানীয় মজিদ মিস্ত্রি ঘাঁস কাটার জন্য সেখানে যায়। এসময় সে অঞ্জলি ত্রিপুরাকে একা পেয়ে তার মুখ চেপে ধরে পার্শ্ববর্তী সেগুন বাগানে নিয়ে যায়। সেখানে দুই পাহাড়ের চিপায় আটকিয়ে রেখে মজিদসহ আরো তিন জন মিলে তাকে পালাক্রমে ধর্ষণ করে বলে জানায় অঞ্জলি ত্রিপুরা। তখন গুড়িগুড়ি বৃষ্টি হচ্ছিল। এভাবে তারা আটকিয়ে রেখে সোমবার সকালে গণধর্ষণ করে।

অত:পর গাছের সাথে মুখ, হাত-পা বেঁধে রাখে। পরে বিকেলে আবার ধর্ষণ করে।এভাবে সোমবার রাত্রী পার করে মঙ্গলবার সকালে অত:পর বিকেলে পুনরায় ধর্ষণ করে মজিদসহ ওই চার যুবক। পরে মঙ্গলবার রাত নয়টার দিকে কল্যাণ ত্রিপুরার বাড়ির পার্শ্ববর্তী একটি কূপের কাছে ফেলে পালিয়ে যায় অভিযুক্তরা। সেখান থেকে অঞ্জলি ত্রিপুরা কল্যাণ ত্রিপুরার বাসায় না গিয়ে সরাসরি কুমেন্দ্র ত্রিপুরার বাসায় গিয়ে তাকে ঘটনাটি খুলে বলে।

এর আগে সোমবার রাতে অঞ্জলি ত্রিপুরা বাসায় না ফিরলে তাকে বিভিন্ন স্থানে খোঁজা-খুঁজি করে না পেয়ে গুইমারা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করেন কুমেন্দ্র ত্রিপুরা। জিডি নং: ১১৯০/১৮/৭/১৫।

ঘটনা শুনে কুমেন্দ্র ত্রিপুরা মঙ্গলবার রাতেই সেনাবাহিনী এবং পুলিশকে বিষয়টি জানায়। পরে গুইমারা সামরিক হাসপাতালে অঞ্জলি ত্রিপুরাকে চিকিৎসা দেয়া হয়। এসময় তার মৌখিক অভিযোগের ভিত্তিতে মঙ্গলবার রাতেই মজিদকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে আসা হয়।তবে অঞ্জলি মজিদের নাম করলেও বাকী ৩জনের নাম জানাতে পারেনি।

এদিকে মৌখিক অভিযোগের ভিত্তিতে তৎক্ষণাৎ একজনকে আটক করা হলেও ধর্ষণে জড়িতদের গ্রেফতার করতে প্রশাসন আন্তরিক নয় বলে অভিযোগ করেন স্থানীয় ত্রিপুরারা।

গুইমারা থানার সেকেন্ড অফিসার এসআই হায়াত উল্লাহ জানান, আমরা মৌখিক অভিযোগের ভিত্তিতেই মজিদকে আটক করেছি। সে জড়িত আছে কিনা বিষয়টি ক্ষতিয়ে দেখা হচ্ছে। বাকীদের আটক করতে পুলিশ আন্তরিকভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এবিষয়ে একটি মামলা প্রক্রিয়াধীন বলে জানান তিনি।

এদিকে অন্য একটি সূত্র জানিয়েছে, ধর্ষণে জড়িত তিন জনের মধ্যে বাকী দু’জনকেও শনাক্ত করা গেছে। সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে তাদের নাম প্রকাশ করা সম্ভব হচ্ছে না। অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাদেরকেও গ্রেফতার করা হবে।

ধর্ষিতার মা চঁন্দ্র রাণী ত্রিপুরা জানান, ছয় ভাইবোনের মধ্যে অঞ্জলি ত্রিপুরা সবার চেয়ে বড়। পারিবারিক অভাব-অনটনের কারণে তাকে কাজ করতে দিয়েছি। তিনি অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।

এ বিষয়ে আটক মজিদকে জিজ্ঞেস করলে তিনি বিষয়টি অস্বীকার করে জানান, গত এক-দেড় মাস আগে কুমেন্দ্র ত্রিপুরার সাথে গাছ নিয়ে তার সাথে বিবাদ হয়। সে সূত্রতার জের ধরেই আমার বিরুদ্ধে পরিকল্পিতভাবে এসব অভিযোগ আনা হয়েছে।

Exit mobile version