Notice: Trying to get property 'post_excerpt' of non-object in /home/parbatta/public_html/wp-content/themes/artheme-parbattanews/single.php on line 53

Notice: Trying to get property 'guid' of non-object in /home/parbatta/public_html/wp-content/themes/artheme-parbattanews/single.php on line 55

গুইমারা রিজিয়ন বৈশাখী মেলায় দর্শনার্থীদের উপচে পড়া ভিড়

15.04.2017_Gumara Sena MELA NEWS Pic (2)

নিজস্ব প্রতিবেদক, মাটিরাঙ্গা:

গুইমারা রিজিয়ন আয়োজিত তিন দিনব্যাপী মেলার দ্বিতীয় দিনে শনিবার মেলা মাঠে ছিল নানা গোষ্ঠি-সম্প্রদায়ের নানা বয়সী দর্শনার্থীদের উপচেপড়া ভীড়। দর্শনার্থীদের ভীড়ে মেলা মাঠ ছিল টুই-টুম্বর। বিশাল মাঠের কোথাও যেন তিল ধারনের ঠাঁই নেই। দুপুরের রৌদ্র শেষ হতে না হতেই জনস্রোত সৃষ্টি হয় মেলা মাঠ অভিমুখে। নানা গোষ্ঠি-সম্প্রদায়ের হাজারো দর্শনার্থীদের উপস্থিতিতে মিলন ক্ষেত্রে পরিনত হয় গুইমারা রিজিয়ন স্পোর্টস কমপ্লেক্স।

মেলার দ্বিতীয় দিন সন্ধ্যা ছ’টার দিকে মেলা মাঠ পরিদর্শন করেন গুইমারা রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ কামরুজ্জামান এনডিসি, পিএসসি, জি। এসময় তার সাথে ছিলেন বিজিবি’র গুইমারা সেক্টর কমান্ডার কর্ণেল জাবেদ সুলতান, মাটিরাঙ্গা জোন অধিনায়ক লে. কর্ণেল কাজী শামশের উদ্দিন পিএসসি জি, পলাশপুর জোন অধিনায়ক লে. কর্ণেল মোহাম্মদ খালিদ আহমেদ ও মানিকছড়ি উপজেলা চেয়ারম্যান ম্রাগ্য মারমাসহ পদস্থ সামরিক কর্মকর্তাগণ।

এসময় মেলার বিভিন্ন স্টল ঘুরে দেখেন ইমারা রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ কামরুজ্জামান। মেলার সার্বিক বিষয়াদি সম্পর্কেও তিনি খোঁজ-খবর নেন। এসময় মেলায় দর্শনার্থীদের ব্যাপক উপস্থিতি আর মানুষে মানুষে সম্প্রীতির মেলবন্ধন দেখে তিনি উচ্ছাস প্রকাশ করেছেন বলে পার্বত্যনিউজকে জানিয়েছেন পলাশপুর জোন অধিনায়ক লে. কর্ণেল মোহাম্মদ খালিদ আহমেদ।

15.04.2017_Gumara Sena MELA NEWS Pic (1)

এদিকে মেলার দ্বিতীয় দিন মেলা মাঠে মারমা তরুন-তরুনীদের ব্যাপক উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। তাদের প্রানোচ্ছল উপস্থিতি যেন সম্প্রীতির বন্ধনকে সুদৃঢ় করেছে। মেলা মাঠেই কথা হয় মেলায় বান্ধবীদের সাথে ঘুরতে আসা একাধিক মারমা তরুনীর সাথে। তারা মনে করে নিরাপত্তাবাহিনী এ মেলার আয়োজন করে শুধুমাত্র বিনোদনই নয়, নতুন নতুন সংস্কৃতির সাথে এখানকার মানুষের পরিচয় ঘটিয়েছে। ঐতিহ্য তুলে ধরার পাশাপাশি নিরাপত্তাবাহিনীর এমন আয়োজন আমাদের সাংগ্রাই উৎসবকে এগিয়ে দিয়েছে। তারা ভবিষ্যতে এ মেলা তিন দিন থেকে বাড়িয়ে সাত দিন করারও দাবি করেছে।

দ্বিতীয় দিনে মেলা মাঠে গরুর গাড়ি ও ঘোড়ায় চড়তে পারা ছিল বিশেষ আকর্ষন। শিশুরা মনের আনন্দে গরুর গাড়িতে আর ঘোড়ায় চড়েছে। গরুর গাড়ি আর ঘোড়া পাশে দাঁড়িয়ে ফটোশেসন বা সেলফি তোলার প্রতিযোগিতা ছিল বিকালজুড়ে।

বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া মো. মাসুদ রানা মনে করে নাগরদোলা, সাপ-বানরের খেলা, পুতুল নাচসহ হরেক রকম আয়োজন এখানকার অনেকের কাছে নতুন। আর এ নতুনের সাথে পরিচয় ঘটিয়ে নিরাপত্তাবাহিনী দেশীয় সংস্কৃতি লালনের সুযোগ তৈরি করেছে। পাশাপাশি একই মাঠে বিভিন্ন সম্প্রদায়ে অবাধ ঘুরাফেরা আর ছবি তোলার মাধ্যমে এখানকার বৈরিতা ভুলে সাম্প্রদায়িক-সম্প্রীতির মেলবন্ধন রচিত হয়েছে। তার মতে এমন মেলার আয়োজন অব্যাহত থাকলে পাহাড়ে শান্তির পায়রা উড়বেই।

15.04.2017_Gumara Sena MELA NEWS Pic (3)

মেলার আয়োজনে গুইমারা রিজিয়ন কর্তৃপক্ষের প্রশংসা করে মানিকছড়ি উপজেলা চেয়ারম্যান ম্রাগ্য মারমা আমাদের যা করার কথা নিরাপত্তাবাহিনী তা করে আমাদেরকে দেখিয়ে দিয়েছে স্বদিচ্ছা থাকলে মানুষে মানুষে সম্প্রীতি আর ভাতৃত্ববোধ রচনা করা খুব কঠিন কিছু না। মেলায় পাহাড়ি-বাঙ্গালী জনগোষ্ঠির মিলন মেলাকে পাহাড়ের শান্তি প্রতিষ্ঠায় সহায়ক ভূমিকা রাখবে এমন প্রত্যাশা করে বলেন, আমরা পাহাড়ে বুলেটের গন্ধ নয়, শান্তির সুবাতাস পেতে চাই। তিনি বলেন, কেউ চাইলেও জোর করে কাউকে আটকে রাখা যায়না বা ভাইয়ে-ভাইয়ে সম্পর্ক ছিন্ন করা যায় না। এ মেলা এমন দৃষ্টান্ত তৈরি করেছে।

মেলাকে ঘিরে গুইমারা রিজিয়নের পাঁচ উপজেলার নানা গোষ্ঠি-সম্প্রদায়ের মানুষের মাঝে উৎসবের আমেজ সৃষ্টি হয়েছে রোববার দিনের আলো ফুরিয়ে যাবার সাথে সাথেই তিন দিনের বর্নিল উৎসবের পর্দা নামবে। সব আয়োজনের পরিসমাপ্তি ঘটবে। নিথর হয়ে পড়বে প্রানোচ্ছল গুইমারা রিজিয়ন স্পোর্টস কমপ্লেক্স মাঠ।

গুইমারা সেনা রিজিয়নের বৈশাখী মেলা আয়োজনের মধ্য দিয়ে রিজিয়নের আওতাধীন পাঁচ উপজেলা পাহাড়ি-বাঙ্গালী জনগোষ্ঠিকে এক সূতোয় বাঁধার যে আপ্রাণ চেষ্টা করেছে। এখানকার মানুষে মানুষে যে সাম্প্রদায়িক-সম্প্রীতির মেলবন্ধন রচনার চেষ্টা করেছে সেই শিক্ষাটাই বেঁচে থাকবে মানুষের হৃদয়ে। পাহাড়ি এ জনপদে পাহাড়ি-বাঙ্গালীর মধ্যে শান্তি-সম্প্রীতি ও ঐক্য আরও সুদৃঢ় করতে গুইমারা রিজিয়নের এমন উদ্যোগ ভবিষ্যতে ও অব্যাহত থাকবে এমনটাই মনে করছেন সচেতন মহল।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন