নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে গত ১৪ অক্টোবর (৮নং ওয়ার্ড) ফাত্রাঝিরি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে জালভোট দেওয়াকে কেন্দ্র করে নিহত দুই পরিবারে চলছে চরম অভাব-অনটন। ঘটনার ৪দিন অতিবাহিত হয়ে গেলেও নিহতের পরিবারগুলো এখনো পর্যন্ত সরকারি-বেসরকারি কোন সহায়তা পায়নি বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন।
সুত্রে জানা গেছে, সদ্য সমাপ্ত ঘুমধুম ইউপি নির্বাচনে কেন্দ্রে জাল ভোট দেওয়া-নেওয়াকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা সৃষ্টি হলে বিজিবি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গুলি ছুড়ে। এ সময় ঘটনাস্থলে মংকিচা চাকমা (৫২) নামের এক উপজাতী মারা যায়। সে ফাত্রাঝিরি এলাকার মৃত চৈমেরাউন চাকমার ছেলে। এতে আহত ২জনের মধ্যে আরেক একই এলাকার ক্লালাউ চাকমার ছেলে অংচাইমং চাকমা (৪৫) হাসপাতালে নেওয়ার। পথে মারা যায়। এদিকে নিহত দু’জনের ময়না তদন্ত শেষে গত বুধবার বিকেলে ফাত্রাঝিরি নিজ এলাকার পারিবারিক শশ্মানে অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন হয়।
নিহত অংচাইমং চাকমার নিকটত্মীয় ফাত্রাঝিরি এলাকার বাসিন্দা অক্কই চাকমা বলেন, ১৪ অক্টোবর ঘুমধুমে শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু দুপুরের নাগাদ ৮নং ওয়ার্ড কেন্দ্রে ভেজাল ভোট দেওয়া নিয়ে উত্তেজনা সৃষ্টি হলে বিজিবি’র সদস্যরা হঠাৎ গুলি বর্ষণ করে। এতে এরা দু’জন মারা যায়। সে বলেন, ওইদিন গুলি করার মতো ঘটনা ঘটেনি। এই দুই পরিবার একমাত্র উপার্জনকারীদের হারিয়ে চরম অভাব-অনটন চলছে। বিশেষ করে অংচাইমং এর পরিবার একেবারে নি:স্ব হয়ে গেছে।
নিহত মংকিচা চাকমার ছেলে আবু চন্দ্র চাকমা কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন, ঘটনার ৪দিন অতিবাহিত হয়ে গেলেও এখনো পর্যন্ত সরকারি-বেসরকারি কোন প্রকার সাহায্য-সহযোগিতা পায়নি। তাদের পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী ছিলেন তার পিতা, এখন কে তাদের সংসারের দায়িত্ব নেবে খোঁজে পাচ্ছেন না।
৮নং ওয়ার্ডের নবনির্বাচিত মেম্বার বাবুল কান্তি চাকমা বলেন, জালভোটে বাধা দিতে গেলে বিজিবি বিনা উস্কানীতে গুলি চালালে ২জন উপজাতি মারা যায় এবং ১জন গুরুতর আহত হয়। নিহত পরিবার গুলোকে সহায়তায় কেউ এগিয়ে আসেনি। তার নিজ উদ্যোগে সামাজিক ভাবে লোকজনের নিকট কিছু টাকা উত্তোলন করে নিহতদের পরিবারকে দেওয়া হয়েছে। স্বজনহারা এসব পরিবার গুলোকে শান্তনা দেবার মতো তার কোন ভাষা নেই। বর্তমানে এসব পরিবার গুলোতে চলছে। মানবেতর দিনযাপন।