ঘুমধুম সীমান্তে বার বার বন্যার কারণ খুঁজছে মানুষ

fec-image

বান্দরবানের ঘুমধুম চলতি বর্ষা মৌসুমে বার বার পানিবন্দী হয়ে পড়ছে মানুষ। ভারী বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ি ঢলে দফায় দফায় ডুবে যাচ্ছে বিভিন্ন গ্রাম। রেকর্ড সৃষ্টি করছে পানিবন্দীর স্কেল। আর এই নিয়ে এলাকার মানুষের মাঝে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে। বার বার বন্যার কারণ খুঁজছে মানুষ।

জানা গেছে, মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে গত সোমবার ঘুমধুম, তুমব্রু এলাকাটি পানিতে তলিয়ে যায়। ওই দিন এক তরুণ বন্যার পানিতে ঢুবে মৃত্যু হয়েছে। পরে আরও এক শিশুর লাশ উদ্ধার করা হয় নদী থেকে। ২৪ ঘন্টা পানিবন্দী থাকার পর বুধবার থেকে কিছুটা স্বাভাবিক হয় বন্যা পরিস্থিতি। আশ্রয় কেন্দ্র থেকে বাড়িতে ফিরতে থাকে মানুষ। দোকানপাট পরিষ্কার শুরু করেন ব্যবসায়ীরা। কিন্তু গত শনিবার রাত থেকে আবারও ভারী বৃষ্টিপাত শুরু হলে এলাকাটি দ্বিতীয়বারের মতো বন্যার শিকার হয়েছে। এই দুই বন্যায় ঘুমধুমের বহু ঘরবাড়ি, ফসল, গবাদি পশুর, মৎস্য প্রজেক্টের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। জনজীবনে বেড়েছে দূর্ভোগ।

এদিকে দফায় দফায় ঘুমধুম-তুমব্রু প্লাবিত হওয়ার কারণ খুঁজছে এলাকার জনপ্রতিনিধিসহ সচেতন নাগরিক সমাজ। ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান একেএম জাহাঙ্গীর বলেন, বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা এটা স্বাভাবিক। কিন্তু এবারের পরিস্থিতি গত কয়েক যুগ থেকে ভিন্ন।  তারমতে, পাশ্ববর্তী তুমব্রু খালের গভীরতা কমে যাওয়াও একটি কারণ।

প্রবীণ শিক্ষক হামিদুল হক বলেন, গত সপ্তায় ঘুমধুমে ইতিহাসের স্মরণীয় বন্যার শিকার হয়েছে। আর এমন বন্যার কারণ হিসেবে সীমান্ত সড়ক, তুমব্রু খালের নব্যতা হ্রাস। তিনি আরও বলেন, বর্তমানে তুমব্রু খালটি ছড়ায় পরিণত হয়েছে। শুষ্ক মৌসুমে সেখানে চাষ করা যায়। এছাড়া সীমান্তে মিয়ানমারের বাঁধ নির্মাণ করায় দ্রুত পানি নামার জায়গা কমে গেছে। তুমব্রু বিভিন্ন জমিতে মাটি ভরাট করে ঘরবাড়ি নির্মাণ হওয়ায় প্রাকৃতিকভাবে পানি চলাচলের জায়গাও কমে যাওয়ার একটি কারণ রয়েছে বলে মনে করেণ তিনি।

শিক্ষক হামিদুল হকের তথ্যের সঙ্গে মিল পাওয়া যায় স্থানীয় বাসিন্দা এ্যাডভোকেট তারেক আজিজ এর মতামতে। তিনিও মনে করেন, পার্শ্ববর্তী দেশ মিয়ানমার সীমান্তে ২০১৯ সালে বাঁধ নির্মাণ, নো ম্যান্স ল্যান্ড এলাকায় পাহাড়ি ঢলে খাল ভরাট এবং সীমান্ত সড়কের কারণে পাহাড়ি ঢলের পানি দ্রুত সরে যেতে পারছে না। ফলে পানি বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের পানি নিম্ন এলাকায় ঢুকে পড়ছে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন