ঘূর্ণিঝড় মহাসেন মোকাবেলায় বান্দরবানে ব্যাপক প্রস্তুতি

Bandarban 2

জমির উদ্দিন,

বান্দরবান, বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় ‘মহাসেন’ উপকুলের দিকে অগ্রসর হয়ে আঘাত হানলে সম্ভাব্য দুর্যোগ মোকাবেলার লক্ষ্যে বান্দাবান জেলা প্রশাসন ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে। জেলায় ৮টি নিয়ন্ত্রন কক্ষ, ভ্রাম্যমান ও মাট পর্যায়ে ৩৮টি মেডিকেল টিম, এবং স্থানীয় প্রশাসন ও দূর্যোগ মোকাবেলায় উদ্ধার কাজে সেনা বাহিনী ও বিজিবি, দমকল বাহিনীকে সর্তক অবস্থায় রাখা হয়েছে। এ ছাড়া প্রবল বর্ষনে পাহাড় ধসের আশংঙ্কায় লামার ও নাইক্ষংছড়ি উপজেলায় পাহাড়ের পাদদেশে ঝুকিপূর্ন বসবাসকারী সকল জনসাধারনকে বুধবার সকাল থেকে সরানো কাজ শুরু হয়েছে।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, কক্সবাজার জেলা সংলগ্ন বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি ও লামা উপজেলায় নেওয়া হয়েছে বিশেষ ব্যবস্থা। এবিষয়ে বান্দরবান জেলা প্রশাসনের নেজারত ডেপুটি কালেক্টর শামিম হোসাইন জানিয়েছেন, কক্সবাজার উপকুলবর্তী নাইক্ষংছড়ির সদর, বাইশারী ও ঘুমধুম ইউনিয়নে নেওয়া হয়েছে বিশেষ ব্যাবস্থা। বুধবার সকাল থেকে পাহাড়ের পাদদেশে ঝুকিপূর্ন স্থানে বসবাসকারী সকল জনসাধারনকে সরিয়ে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। এছাড়া লামা উপজেলার ফাইতং ইউনিয়নেও পাহাড়ে ঝুকিপূর্ণ বসবাস কারীদেরও সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে মনিটরিং করা হচ্ছে। উপজেলা ও ইউনিয়নে দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি কাজ করছে। তিনি আরও জানান, সদর ইউনিয়নে দুইটি নিয়ন্ত্রণ কক্ষ, ভ্রম্যমান ও মাঠপর্যয়ে ছয়টি মেডিকেল টিম, লামা উপজেলায় ১টি নিয়ন্ত্রণ কক্ষ ভ্রাম্যমান এবং মাঠ পর্যয়ে সাতটি মেডিকেল টিম, নাইক্ষংছড়িতে একটি নিয়ন্ত্রণ কক্ষ এবং ভ্রাম্যমান ও মাঠ পর্যয়ে পাঁচটি মেডিকেল টিম,আলীকদম উপজেলায় একটি নিয়ন্ত্রণ কক্ষ এবং ভ্রাম্যমান ও মাঠ পর্যায়ে চারটি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। অন্য তিন উপজেলায়ও নিয়ন্ত্রণ কক্ষ এবং ভ্রম্যমান ও মাঠপর্যয়ে মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্র ছাড়াও সরকারী-বেসরকারী প্রায়মারী ও উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় গুলোকে আশ্রয় কেন্দ্র হিসেবে ব্যাবহারের সিন্ধান্ত নিয়েছে জেলা প্রশাসন। এছাড়া শুকনো খাবার ও পযাপ্ত পরিমান খাদ্য শস্য মজুদ রয়েছে।
জেলা সিভিল সার্জন ডা. মং তেঝ জানিয়েছেন, জেলা ভ্রাম্যমান ও মাট পর্যায়ে ৩৮টি মেডিকেল টিম সরজমিনে পাঠানো হয়েছে। দূর্গত জনগনকে চিকিৎসাসহ প্রয়োজনীয় ওষধ সরবরাহ করা হবে।  
এদিকে বান্দরবান সদরসহ অন্যান্য ৬ উপজেলায় পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে বসবাসকারীদের নিরাপদ স্থানে সরে যেতে মাইকিং করা হচ্ছে। জেলা সদর, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে মনিটরিং করা হচ্ছে। সেখানকার দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি কাজ করছে। দূর্যোগ মোকাবেলায় সব প্রস্তুতি নিয়েছে প্রশাসন। পাহাড় ধস ও ঝঁকিপূর্ণের বিষয়ে দূর্গম এলাকাগুলোতে উপজেলা প্রশাসন, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান-সদস্য, হেডম্যান-কারবারীদের মাধ্যমে স্থানীয় জনসাধারনকে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে জেলা প্রশাসন নির্দেশনা দিয়েছে। প্রবল বৃষ্টিতে পাহাড় ধসে প্রাণহানির ঘটনা এড়াতে সকল ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে প্রশাসন।
বান্দরবান জেলায় কর্মরত সকল সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীকে কর্মস্থল ত্যাগ না করে নিজ নিজ অবস্থানে থাকার নির্দেশ দিয়েছে জেলা প্রশাসন। গত রোববার জেলার আইন-শৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভা চলাকালে জেলা প্রশাসক কে এম তারিকুল ইসলাম সরকারের এ সিদ্ধান্তের কথা জানান। জেলা প্রশাসক জানান, চট্রগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার সরকারের এ নির্দেশনার কথা জানিয়েছেন। জেলায় সকাল থেকে আকাশ কালো মেঘাচ্ছন্ন রয়েছে, মাঝে মাঝে দমকা হাওয়া বয়েছে। থমে থেমে ভারী ও হালকা বৃষ্টিপাত হচ্ছে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন