parbattanews

চকরিয়ায় উন্নয়নের ছোঁয়ায় বদলে গেছে হারবাংয়ের গ্রামীণ জনপদ

‘শেখ হাসিনার দর্শন বাংলাদেশের উন্নয়ন’ এ স্লোগানে সারা দেশের প্রতিটি জনপদকে উন্নয়ন ও বাস্তবায়নের লক্ষ্যে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে সরকার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বপ্ন গ্রাম হবে শহর। সেই স্বপ্ন বাস্তবে রূপ দিতে গ্রামীণ জনপদের চিত্র উন্নয়নের ছোঁয়ায় বদলে যাচ্ছে। এরই আলোকে পর্যটন নগরী কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার হারবাং ইউনিয়নের গ্রামীণ জনপদেও বইছে সরকারের নানা উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের ছোঁয়া। সেই সাথে পরিবর্তন হতে চলছে ইউনিয়নের সাধারণ মানুষের জীবনমানসহ প্রতিটি ক্ষেত্রে অভূতপূর্ব উন্নয়ন।

সরেজমিন ঘুরে জানা গেছে, পর্যটন নগরী কক্সবাজারের প্রথম প্রবেশদ্বার হলো চকরিয়া উপজেলার ১ নম্বর হারবাং ইউনিয়ন। আয়তন ও জনসংখ্যার দিক দিয়ে উপজেলার বৃহত্তর ইউনিয়ন হিসেবে সু-পরিচিত। এই ইউনিয়নের আয়তন ৭৭ বর্গ কিলোমিটার। জনসংখ্যা হচ্ছে প্রায় ৬০ হাজার। এতে মোট ভোটার রয়েছে ২৫ হাজার। ইতিহাস ঐতিহ্যঘেরা এ ইউনিয়নে আদিকাল থেকেই হিন্দু, বৌদ্ধ, রাখাইনসহ নানা সম্প্রদায়ের মানুষ বসবাস করে আসছেন। তারা শিক্ষার দিক দিয়েও পিছিয়ে নেই। এই জনপদের অনেক ব্যক্তিরা দেশের বিভিন্ন জায়গায় সরকারি উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা। এখানকার মানুষ একে অপরের প্রতি সম্প্রতির মেলবন্ধন। উন্নয়নের দিক দিয়ে দীর্ঘদিন পিছিয়ে ছিল হারবাংয়ের গ্রামীণ জনপদ। অবহেলিত শব্দটি আর থাকছে না। পরিবর্তনের ছোঁয়ায় বদলে যাচ্ছে সবকিছুই। ইউপি চেয়ারম্যান মেহরাজ উদ্দিন মিরাজের হাত ধরে হারবাং ইউনিয়নের প্রতিটি ওয়ার্ডকে উন্নয়নের মাধ্যম ঢেলে সাজানো হচ্ছে। বিশেষ করে রাস্তাঘাট, ব্রিজ-কালভার্ট, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, বিদ্যুৎ, কর্মসংস্থান ও অবকাঠামো, জীবনযাত্রারমান, যোগাযোগ ব্যবস্থার ফলে এসেছে আমূল পরিবর্তন। শুধু কৃষিকাজ নয়, এখানকার মানুষ এখন বহু ধরনের পেশায় নিজেদের যুক্ত করে জীবন বদলে নিচ্ছে। যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত ও সহজ হওয়ার কারণে ব্যবসা-বাণিজ্যে যেমন গতি এসেছে, তেমনি অর্থনৈতিক ভাবে উন্নয়নও হচ্ছে। এ জনপদের প্রতিটি পরিবার এখন উন্নত জীবনের স্বপ্ন দেখেন। বর্তমানে ইউনিয়নের মধ্যে যেসব উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে তা শেষ হলে এলাকায় যোগাযোগ ব্যবস্থার যুগান্তকারী অধ্যায়ের সূচনা হবে।

উপজেলা প্রকৌশলী কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, হারবাং ইউনিয়নে ২০২২-২৩ অর্থ বছরে ইতোমধ্যে প্রায় ১৬ কোটি টাকা ব্যয়ে বিভিন্ন গ্রামীণ সড়ক কার্পেটিং, ব্রিজ, ভূমি অফিস ও বিদ্যালযের ঊর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণ কাজ শেষ হয়েছে। যেসব গ্রামীণ সড়কে উন্নয়ন করা হয়েছে তা হলো-হারবাং আরএনএসডি শিলখালী সড়ক কার্পেটিং দ্বারা উন্নয়ন, হারবাং ফরেস্ট অফিস কোরবানিয়া ঘোনা সড়ক কার্পেটিং দ্বারা উন্নয়ন, আইআরআইডি-৩ প্রকল্পের অধীনে হারবাং মাস্টার পাড়া-কালাসিকদার পাড়া-রাখাইন পাড়া সড়ক কার্পেটিং দ্বারা উন্নয়ন নির্মাণ, আরসিআইবি প্রকল্পের অধীনে হারবাং-বরইতলী সংযোগ সড়ক কার্পেটিং দ্বারা উন্নয়ন, হারবাং ভূমি অফিস নির্মাণ, পিডিবি-৪ অধীনে পূর্ব হারবাং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ঊর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণ নির্মাণসহ ব্যাপক উন্নয়ন করা হয়েছে। বর্তমানে ইউনিয়নে আরও কয়েকটি প্রকল্পের কাজ টেন্ডারধীন ও চলমান প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

হারবাং ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা (ইউপি সচিব) মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন কাদের জানান, ২০২২-২৩ অর্থ বছরে হারবাং ইউনিয়নের ৯টি ওয়ার্ডের বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায় ইউনিয়ন পরিষদের নামে বরাদ্দকৃত সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের অর্থায়নের মাধ্যমে প্রায় সাড়ে ৬ কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ সম্পন্ন হয়েছে বর্তমান চেয়ারম্যান জনাব মেহরাজ উদ্দিনের সময়ে। উন্নয়নের ছোঁয়ায় বদলে গেছে হারবাংয়ের গ্রামীণ রাস্তা-ঘাট। এমন কোনো গ্রাম, পাড়া ও মহল্লা নাই যেখানে উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। মাটির রাস্তা ফ্লাট সলিং, এইচবিবি, কালভার্ট, বিভিন্ন রাস্তা আরসিসিকরণ, গাইড ওয়াল, মাটি দ্বারা উন্নয়নসহ বিভিন্ন চলাচল অনুপযোগী রাস্তাঘাট সংস্কার করা হয়েছে। এছাড়াও মসজিদ, মাদ্রাসা, এতিমখানা, হেফজখানা, মন্দির, প্যাগোড়া, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন ধর্মীয় ও সামাজিক প্রতিষ্ঠানকে অনুদান বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। বর্তমান চেয়ারম্যান মেহরাজ উদ্দিন চকরিয়া-পেকুয়া আসনের মাননীয় সংসদ সদস্য জাফর আলমের বিভিন্ন উন্নয়ন তহবিলের বরাদ্দ হতে এবং এলজিইডির মাধ্যমে চেয়ারম্যানের দেড় বছরের সময়কালে অত্র ইউনিয়নে অনেক ব্রিজ, কালভার্ট, গাইডওয়ালসহ রাস্তা ঘাটের ব্যাপক উন্নয়ন করে যোগাযোগ ব্যবস্থায় মাইলফলক সৃষ্টি করেছেন।

সরেজমিন ঘুরে স্থানীয়দের কাছে জানতে চাইলে পার্বত্যনিউজকে জানান, অতীতে যেটুকু উন্নয়ন হযেছে তার চেয়ে অধিকতর উন্নয়নের ছোঁয়া লেগেছে বর্তমান সরকারের ও চেয়ারম্যান মেহরাজ উদ্দিনের আমলে। দীর্ঘদিন পরে হলেও হারবাংবাসী একজন সঠিক যোগ্য জনপ্রতিনিধি পেয়েছে বলে আজকে উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে পাল্টে গেছে অত্র জনপদের চেহারা। বৃদ্ধি পেয়েছে গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর জীবনমান ও যোগাযোগ ব্যবস্থা। তারা আরো জানান, এখন মানুষ দিনে-রাতে স্বাচ্ছন্দে যাতায়াত করেন। বর্তমানে গ্রামের শিক্ষার্থীরা পাকা রাস্তার সুবাদে সহজেই স্কুল-কলেজে যাতায়াত করতে পারছে। আধুনিক এসব সুবিধায় গ্রামের মানুষের জীবন ধারা পাল্টে গেছে। এখন শহরের মানুষের মতই পাচ্ছেন নানা সুবিধা। অল্প সময়েই পাল্টে গেছে গ্রামের চেহারা ও হারবাংয়ের গ্রামীণ জনপদের জীবন চিত্র।

হারবাং ইউপি চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মেহরাজ উদ্দিন মিরাজ বলেন, হারবাংকে উন্নয়নের মাধ্যমে ঢেলে সাজাতে ও প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার দর্শন বাংলাদেশের উন্নয়ন-গ্রাম হবে শহর সেই পরিকল্পনা হাতে নিয়ে কাজ করে যাচ্ছি। ইতোমধ্যেই বিভিন্ন গ্রামীণ রাস্তা আরসিসি ও কার্পেটিং দ্বারা উন্নয়নের মাধ্যমে শেষ হয়েছে। বর্ষাকালে এলাকার মানুষ অন্তত ভোগান্তি থেকে মুক্তি পাবে। এখনো বিভিন্ন কাজ চলমান রয়েছে তা শেষ হলেই এ ইউনিয়ন হবে জেলার একটি মডেল ইউনিয়ন।

চেয়ারম্যান আরো বলেন, গ্রামের নানামুখী উন্নয়ন ও আধুনিকায়নের জন্য বিভিন্ন প্রকল্প তৈরি করে চকরিয়া-পেকুয়ার সংসদ সদস্য জাফর আলমের আন্তরিক সহযোগিতায় গ্রামকে শহরের আদলে গড়ে তোলার চেষ্টা করে যাচ্ছি। উন্নয়ন কাজের সার্বিক ভাবে তাকে সহযোগিতার জন্য তিনি এমপি জাফর আলমের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন।

Exit mobile version