parbattanews

চকরিয়ায় করোনা দুর্দিনে ভ্রমণ পিপাসুদের জনপ্রিয় স্থান হয়ে উঠেছে ‘নলবিলা’ শাপলা বিল

করোনা দুর্দিনে সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে সরকারি নির্দেশনার আলোকে সারাদেশের মতো কক্সবাজার জেলার সকল পর্যটন জোন বন্ধ রয়েছে বিগত চারমাস ধরে। এতে সবধরণের চিত্র-বিনোদন থেকে যেমন পর্যটক-দর্শনার্থীরা বঞ্চিত হচ্ছেন, তেমনি আর্থিকভাবে চরম দৈন্যদশা অতিক্রম করছেন পর্যটন ব্যবসার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকলে।

তবে সর্বশেষ আশার কথা হচ্ছে, আগামী ১৭ আগস্ট থেকে জেলার সবকটা পর্যটন জোন সচল করার ঘোষণা দিয়েছেন জেলা প্রশাসক মো.কামাল হোসেন।

প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা থাকলেও এবারের কোরবানি ঈদে চকরিয়া উপজেলার ভ্রমণ পিপাসু মানুষকে ঘরে আবদ্ধ রাখা সম্ভব হয়নি। তার প্রমাণ ঘটেছে চকরিয়া উপজেলার লক্ষ্যারচরস্থ নববিলা শাপলা বিল ঘুরে। এখন প্রতিদিন ভ্রমণ পিপাসুদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে জেলার নতুন পর্যটন স্পট চকরিয়ার ‘নলবিলা শাপলা’ বিল।

বাস্তবতা হচ্ছে, পাহাড় ঘেঁষা বিশাল এ বিলে ভ্রমণ পিপাসুদের হাতছানি দিয়ে ডাকছে। হাজার হাজার শাপলার মাঝ দিয়ে নৌকা নিয়ে গেলে মনে হয় শাপলার দেশে যেন এক খণ্ড নৌকা।

প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য্য উপভোগে দর্শনার্থীরা দলবেঁধে ছুটে যায় ‘নলবিলা’ শাপলা বিলে। এখানে সারা বছর শাপলা ফোটার কারণে এটির নামকরণ করা হয় ‘নলবিলা’ শাপলা বিল। শাপলা ছাড়াও এখানে প্রতি বছর শীত মৌসুমে হাজার অতিথি পাখির আগমন ঘটে।

সরেজমিনে জানা গেছে, চকরিয়া উপজেলা সদরের পাশে লক্ষ্যারচর ইউনিয়ন। ছোট্ট এই ইউনিয়নের অপরূপ সৌন্দর্য্য স্থান ঐতিহ্যবাহী ‘নলবিলা’ শাপলা বিল। উপজেলার লক্ষ্যারচর, কাকারা ও কৈয়ারবিল তিনটি ইউনিয়নের মাঝখানে বিশাল অংশজুড়ে এ বিলের বিস্তৃতি। বর্ষা মৌসুমে এই বিলে পাহাড়ি ঢলের পানি ও বন্যার পানি প্রবেশ করে।

বর্ষার পরপরই পানি একটু কমলে প্রতিদিন ভ্রমণ পিপাসুরা নৌকা নিয়ে ঘুরতে যায়। বর্ষার জলরাশির বুকে ঝাঁকে ঝাঁকে শাপলা ফুটে, তার সাথে নৌকার পাল তুলে ঘুরতে কার না মন চায়। বিশেষ করে ঈদ ও কোরবানির সময় ছাড়াও ছুটির দিনে দর্শনার্থীদের আগমনে মুখরিত হয়ে উঠে শাপলা বিল।

কিছুদিন ধরে দুর-দূরান্ত থেকে দর্শনার্থীরা ছুটে আসছে। কক্সবাজার, পেকুয়া, লামা, আলীকদম, লোহাগাড়া থেকে কক্সবাজারের বিভিন্ন স্থান থেকে ভ্রমণ পিপাসুরা ছুটে আসছেন শাপলাবিলে।

বিকেল বেলায় কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়কে বসে শাপলা বিলে হাজার হাজার শাপলা দেখে মুগ্ধ হয়ে যায় দর্শনার্থীরা।

রাস্তার পাশ থেকে বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা পর্যন্ত শাপলা বিলের অপরূপ উপভোগ করা যায়। শাপলা বিলের পাশে চকরিয়া সরকারি কলেজের শিক্ষার্থীরা ক্লাস শেষে ঘুরতে যায়। আস্তে আস্তে শাপলা বিলে সৌন্দর্য্য উপভোগে মানুষ আগ্রহী হয়ে উঠেছে।

ভ্রমণ পিপাসুদের দাবি, যদি প্রশাসনের পক্ষে নানাবিধ সুবিধা দেওয়া হয় তাহলে ‘নলবিলা’ শাপলা বিল পর্যটন কেন্দ্রে পরিণত হবে।

‘নলবিলা’ শাপলা বিল নৌকা নিয়ে বেড়াতে যাওয়া দর্শনার্থী চকরিয়া সিটি হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অধ্যাপক জুবাইদুল হক বলেন, প্রতিবছর বর্ষাকালে ৬-৮ মাস শাপলা বিলে প্রচুর পানি থাকে। এসময় শাপলার ফুলে ফুলে ভরে যায় বিলটি। এতে পর্যটকরা দলবেঁধে ঘুরতে যায়। বিকেল বেলায় শাপলা বিলে ঘুরতে খুব ভাল লাগে।’

তিনি বলেন, চকরিয়ার ঐতিহ্যবাহী ‘নলবিলা’ শাপলা বিল পর্যটন শিল্প বিকাশে ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। সৌন্দর্য উপভোগের উপযুক্ত স্থান হিসেবে দর্শনার্থীদের কাছে আগ্রহও বেড়েছে।

নলবিলা শাপলা বিলে যাওয়ার মাধ্যম: চট্টগ্রাম থেকে যে কোনো বাসে ১৮০ টাকা ভাড়া দিয়ে চকরিয়া সরকারি কলেজ গেট ও কক্সবাজার থেকে ৮০ টাকা ভাড়ায় চকরিয়া কলেজ গেইটে নেমে শাপলা বিলে যাওয়া যায়।

এছাড়াও চকরিয়ার মূল স্টেশন চিরিংগা স্টেশন থেকে রিকশা, টমটম বা সিএনজি নিয়ে সরাসরি যাওয়া যায় নলবিলার নৌকায় ঘাটে। ওইখান থেকে ১-২ ঘণ্টার জন্য ২০০-২৫০ টাকার নৌকা ভাড়া নিয়ে সরাসরি যাওয়া যাবে শাপলা বিলে।

Exit mobile version