চকরিয়ায় কেয়াঘাট পারাপারের টাকা নিয়ে সন্ত্রাসী হামলা : আহত ১০

fec-image

কক্সবাজারের চকরিয়ায় মাতামুহুরী নদীর তরছঘাটস্থ কেয়াঘাট পারাপারে টোল উত্তোলনের টাকা নিয়ে হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের হামলায় অন্তত ৯ জন পথচারী ও স্থানীয় সাধারণ জনতা কমবেশী আহত হয়েছে। আহতদের ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়।

রোববার (২৫ জুলাই) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে চকরিয়া পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের তরছঘাট স্টেশন এলাকায় এ হামলার ঘটনা ঘটে।  হামলায় আহত ব্যক্তিরা হলেন, চকরিয়া পৌরসভা ৩নম্বর ওয়ার্ডের তরছঘাটা এলাকার আবুল মছন ছেলে আবদু সালাম (১৪), নুরুল ইসলামের ছেলে পারভেজ (২৪), আজিজ (৩৫), ফোরকান (৩৩), রফিক (৩৫), স্থানীয় মসজিদের ইমাম সাইফুল ইসলাম (৩৭), রিয়াদ (২৭), শুক্কুর (৩২)।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মাতামুহুরী নদীর তরছঘাটস্থ কেয়াঘাটটি চলতি বছরে সর্বোচ্চ ডাককারী হিসেবে সরকার কর্তৃক ইজারা পেয়েছেন পৌরসভার ৩নম্বর ওয়ার্ডস্থ সিকদার পাড়া এলাকার জসিম উদ্দিনের ছেলে সালাহ উদ্দিন মিনার। তিনি কেয়াঘাট ইজারা পাওয়ার পর থেকে ঘাট ইজারাদার কেয়া ঘাটের দেখভাল ও টোল উত্তোলন আদায়ে কর্মচারী হিসেবে নিয়োজিত করেন দক্ষিণ লক্ষ্যারচর এলাকার নাদির হোছাইনের ছেলে কাইছার উদ্দিনকে।

রোববার সকাল ১০টার দিকে ওই ওয়র্ডের লক্ষ্যারচর কসাইপাড়া এলাকার জুবাইরের ছেলে জয়নাল ও তার কয়েকজন সহপাঠী তরছঘাটাস্থ কেয়াঘাট পারাপার করে নদীর ওপারে যান। এসময় ঘাটের দায়িত্বরত কর্মচারী কাইছার উদ্দিন ঘাটের ধার্য্যকৃত টোলের টাকা দাবি করলে তারা ফেরার সময় দেবে বলে চলে যান। পরে তারা সাড়ে ১১টার দিকে ওই কেয়াঘাট পারপার করে নদীর এই পারে চলে আসলে ঘাটের টোলের নির্ধারিত টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে ঘাটের কর্মচারী কাইছারের সাথে জয়নালসহ তার সহপাঠীর মধ্যে বাকবিতণ্ডা ও তর্কে জড়িয়ে পড়েন ঘাট কর্মচারীর সাথে। ওইসময় জয়নাল তার ভাইসহ ৩০-৩৫ জন সন্ত্রাসীকে মুঠোফোন খবর দিয়ে কসাইপাড়া থেকে দেশীয় তৈরি ধারালো অস্ত্র-শস্ত্র সন্ত্রাসী নিয়ে এসে তরছঘাটা স্টেশন এলাকায় জয়নাল, তার ভাই জমির, মানিক, রানা’র নেতৃতে অতর্কিতভাবে হামলা চালিয়ে বিভিন্ন দোকানপাটে ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও ভাংচুর করে ঘাট কর্মচারী কাইছারসহ স্থানীয় জনতাকে মারধর করে। এসময় সন্ত্রাসীদের হামলায় মসজিদের ইমাম, পথচারীসহ অন্তত ১০ ব্যক্তি আহত হয়। আহতদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। পরে হামলা ও ভাংচুরের খবর পেয়ে স্থানীয় কাউন্সিল বশিরুল আইয়ুব দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে হামলার ঘটনার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।

এঘটনায় হামলার শিকার ও কেয়াঘাটের কর্মচারী কাইছার উদ্দিন বাদী হয়ে ঘটনার দিন (রোববার) বিকেলে পাঁচ জনের নাম উল্লেখ করে আরও ৩৫ জনকে অজ্ঞাতামা দেখিয়ে চকরিয়া থানায় এজাহার দায়ের করেন।

কেয়াঘাটের কর্মচারী ও মামলার বাদী কাইছার উদ্দিন বলেন, কসাইপাড়া এলাকার জুবাইরের ছেলে জয়নাল ও তার সহপাঠী তরছঘাটাস্থ কেয়াঘাট পারাপার হওয়ার পরে ঘাটের ধার্য্যকৃত টোলের টাকা দাবি করলে তারা টোলের নির্ধারিত টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে উল্টো আমার সাথে তর্কে জড়িয়ে হাতাহাতি দেন। পরে জয়নালের নেতৃত্বে তার ভাই জমির, মানিকসহ ৩০-৩৫ জন সন্ত্রাসী কসাইপাড়া থেকে দেশীয় তৈরি ধারালো অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে তরছঘাটা স্টেশন এলাকায় এসে দোকানপাটে ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও ভাংচুর করে হামলা চালায়। এসময় তারা স্টেশনে থাকা বিভিন্ন ব্যক্তিকে মারধর করে হামলা চালায়। এতে তাদের সন্ত্রাসী হামলায় অন্তত ১০জন ব্যক্তি আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় বিকেলে থানায় মামলা দায়ের করা হয়।

এ ব্যাপারে চকরিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) জুয়েল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশের একটি টিম পাঠানো হয়। তারা ঘটনাস্থল পরির্শন করেছেন। অভিযোগ পেলে তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন