চকরিয়ায় বালুদস্যু কর্তৃক যুবলীগ নেতাকে হত্যাচেষ্টা!

চকরিয়া প্রতিনিধি:

কক্সবাজারের চকরিয়ায় ছড়াখাল ও শাখা নদী থেকে ড্রেজার মেশিন (সেলো মেশিন) বসিয়ে অবৈধ বালু উত্তোলনের সংবাদ প্রকাশে কর্মরত এক সংবাদ কর্মীকে সহযোগিতা করার জেরে সন্দেহজনকভাবে মো. ইমরান খান (২৫) নামের এক যুবলীগ নেতাকে বেধড়ক মারধর করে গুরুতর আহত করে হত্যার চেষ্টা চালায় একদল বালুদস্যু সন্ত্রাসী।

আহত ইমরান উপজেলার খুটাখালী ইউনিয়নের পূর্বপাড়া এলাকার মৃত গুরা মিয়ার পুত্র ও ইউনিয়ন যুবলীগের নেতা।

শুক্রবার (২১ জুলাই) রাত ৯টার দিকে ওই ইউনিয়নের পূর্বপাড়া সড়কে এ ঘটনা ঘটে।

আহত যুবলীগ নেতা ইমরানকে স্থানীয়রা ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয় একটি বেসরকারি ক্লিনিকে নিয়ে যায়। পরে তার অবস্থার অবনতি দেখে চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রেরণ করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক।

স্থানীয় ও আহতের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার রাত ৯টার দিকে খুটাখালীস্থ পূর্বপাড়া সড়ক দিয়ে বাড়িতে যাচ্ছিলেন ইমরান। হঠাৎ পূর্ব থেকে ওঁৎপেতে থাকা একদল বালুদস্যু সন্ত্রাসী স্থানীয় ইউপি সদস্য আনোয়ার হোছনের নেতৃত্বে তার চাচাতো ভাই বশির আহমদ ড্রাইভারের পুত্র লিটন ও একই ওয়ার্ডের জালাল আহমদ ড্রাইভারের পুত্র আবদুস শুক্কুর অতর্কিতভাবে হামলা চালায়।

সন্ত্রাসীরা যুবলীগ নেতা ইমরানকে বেধড়ক মারধর করে গুরুতর আহত করে প্রাণে হত্যার চেষ্টা চালায়। এ সময় আহত ইমরানের আর্তচিৎকারে স্থানীয়রা এগিয়ে এসে তাকে ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে। পরে আহত ইমরানের পরিবার তাকে হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করে।

উল্লেখ্য, গত ১৩ ও ১৪ জুলাই খুটাখালীতে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে ছড়াখাল থেকে অবৈধ বালু উত্তোলন নিয়ে স্থানীয় ও জাতীয় পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়। তথ্যবহুল এ সংবাদটি প্রস্তুত করতে সরেজমিনে পরিদর্শন করেন বিভিন্ন পত্রিকার সংবাদ কর্মীরা। এতে ইমরান অবৈধ বালু উত্তোলনকারী ও বালুদস্যু নিয়ে তথ্য দিয়ে সহযোগীতা করেছে সন্দেহে করে ওই বালুদস্যুরা পূর্ব পরিকল্পিতভাবে যুবলীগ নেতার উপর হামলা চালায়। বর্তমানে আহত ইমরান খান চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিসাধীন রয়েছে।

জানা গেছে, উপজেলার খুটাখালীতে ছড়াখাল ও শাখা নদীতে আনোয়ার হোসেন নামের এক ইউপি সদস্যের নেতৃত্বে স্থানীয় প্রভাবশালীর সহযোগীতায় মোটা অংকের মাসোহারা দিয়ে অবৈধভাবে দিব্যি বালু উত্তোলন করে যাচ্ছে। ওই বালু উত্তোলনে স্থানীয় লিটন ও আবদুস শুক্কুরসহ ৬/৭ জনের একদল সিন্ডিকেট রয়েছে। তারা প্রতিনিয়ত ছড়া খাল থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের ফলে ছড়া খালের পার্শ্ববর্তী বসতবাড়ির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হলেও এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার সাহস পাচ্ছে না স্থানীয়রা।

কতিপয় স্থানীয় রাজনৈতিক প্রভাবশালী ব্যক্তির ছত্রছায়ায় এ অবৈধ বালি উত্তোলনের ফলে সরকার কোটি টাকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে বলে স্থানীরা জানায়।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত খুটাখালী ইউপি সদস্য আনোয়ার হোছনের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, তিনি একা বালু উত্তোলন করছেন না। বর্তমানে যারা বালু উত্তোলন করছে তাদের সাথে শেয়ারদার হিসেবে রয়েছেন তিনি। তিনি কোন যুবলীগ নেতার উপর হামলা চালাননি বলেও জানান।

হামলার বিষয়ে জানাতে চাইলে খুটাখালী ইউপি চেয়ারম্যান আবদুর রহমান বলেন, বিষয়টি নিয়ে আমাকে কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে যাচাই করে দেখা হবে।