“মরণনেশা ইয়াবা টাকা জোগাড় করতে এলাকায় ঘটছে চুরি, ডাকাতি, ছিনতাইয়ের মতো নানা ধরণের ঘটনা।”

চকরিয়ায় মাদক বিক্রিতে বাঁধা দেয়ায় কলেজ ছাত্রসহ ৬জনের বিরুদ্ধে মামলা

 

কক্সবাজারের চকরিয়ায় এক ইয়াবা ব্যবসায়ী ও মাদক বিক্রেতাকে বাঁধা দেয়ায় এলাকার সাধারণ লোকজনকে ঘায়েল করতে কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীসহ ৬জনের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী করার অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে চরম নিরপাত্তাহীনতায় ভুগছেন  ভুক্তভোগীরা।

এ ঘটনার বিষয় নিয়ে এলাকার নিরীহ লোকজন ফুঁসে উঠেছে। যে কোন মুহুর্তে ঘটতে পারে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের মতো বড় ধরণের অপ্রীতিকর ঘটনা। ভুক্তভোগী লোকজন সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন প্রশাসনের কাছে তদন্তপূর্বক হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। উপজেলার ডুলাহাজারা ইউনিয়নস্থ বালুরচর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ডুলাহাজারা ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বালুরচর  ও ষোলহিচ্ছা এলাকায় প্রশাসনের চোখকে উপেক্ষা করে দিব্যি মরণনেশা ইয়াবা ও মাদক বিক্রি করে আসছিল ওই এলাকার মনজুর আলমের ছেলে ছাদেক হোছাইন। সে দীর্ঘদিন ধরে তার নিজ এলাকায় ও তার পার্শ্ববর্তী ওয়ার্ডে বখাটে তরুণ যুবকের নিয়ে সিন্ডিকেট তৈরি করে এ অবৈধ ইয়াবা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। তার এহেন নানা অপরাধ ও কর্মকাণ্ডে পুরো এলাকাবাসী অতিষ্ট হয়ে উঠেছে।

ছাদেক এলাকার চিহ্নিত একজন ইয়াবা ব্যবসায়ী বলে স্থানীয়রা দাবি করেছে। ওই এলাকায় মাদকে আসক্ত হয়ে উঠতি তরুণ যুবকরা দিন দিন নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ফের মরণনেশা ইয়াবা টাকা জোগাড় করতে এলাকায় ঘটছে চুরি, ডাকাতি, ছিনতাইয়ের মতো নানা ধরণের ঘটনা। ডুলাহাজারা ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ নুরুল আমিন তার নয়টি ওয়ার্ডকে মাদকমুক্ত রাখতে স্থানীয় তরুণ যুবক ও সামাজিক সংগঠনের দায়িত্বশীল ব্যক্তি দিয়ে প্রতি ওয়ার্ডে সমাজ কমিটি গঠন করে।

যে জায়গায় মাদক বিক্রির কথা শুনা যাবে ওই জায়গায় মাদক বিক্রিতে জড়িতদের বিরুদ্ধে সামাজিক ভাবে প্রতিরোধ করার ঘোষণা দেন তিনি। এরই আলোকে প্রতিটি পাড়া-মহল্লায় তরুণ যুবকরা মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে ডুলাহাজারা বালুরচর ও ষোলহিচ্ছা এলাকায় মাদক বিক্রেতা ছাদেকের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেয়।

গত ২৪ এপ্রিল ডুলাহাজারাস্থ ষোলহিচ্ছা এলাকায় প্রকাশ্যে দিবালোকে ইয়াবা বিক্রি করা খবর পেয়ে স্থানীয় লোকজন জড়ো হয়ে ইয়াবা ব্যবসায়ী ছাদেককে হাতেনাতে ধরে ফেলে। এ সময় স্থানীয়দের সাথে তার বাগবিতন্ডটা ও কথা কাটাকাটি ঘটনা ঘটে। এ ইয়াবা বিক্রির বাঁধা দেয়ার ঘটনাকে ভিন্নখাতে প্রভাবিত করে তাকে মারধর করা হয়েছে মর্মে গত ২৬ এপ্রিল ইয়াবা ব্যবসায়ী ছাদেক নিজে বাদী হয়ে ৬জনকে আসামি করে চকরিয়া থানায় মামলা নং-৫১ একটি  মামলা দায়ের করেন।

এতে আসামি করা হয়েছে, ডুলাহাজারাস্থ ৫নম্বর ওয়ার্ডের ষোলহিচ্ছা এলাকার নুরুল আলমের ছেলে মীর কাসেম, একই এলাকার মনজুর আলমের ছেলে আরিফুল ইসলাম, আবু তাহেরের ছেলে জিয়াবুল করিম, নুরুল আলমের ছেলে মোকাদ্দেছ, মনজুর আলমের ছেলে কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থী ওয়াহিদুর রহমান ও মৃত গুরা মিয়ার ছেলে নুরুল আলমকে।

ভুক্তভোগী আরিফুল ইসলাম সাংবাদিকের বলেন, ডুলাহাজারাস্থ বালুরচর ও ষোলহিচ্ছা এলাকায় মনজুর আলমের ছেলে ছাদেকসহ কয়েকজন যুবক দলবদ্ধ হয়ে দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় ইয়াবাসহ নানা মাদকদ্রব্য বিক্রি করে আসছে। এতে প্রতিবাদ করায় ও ইয়াবা বিক্রি কাজে বাঁধা দেয়ায় আমাকেসহ ৬জনের বিরুদ্ধে উল্টো মিথ্য মামলা দায়ের করেন।

ওই মামলায় কলেজ পড়ুয়া ছাত্রকেও আসামি করা হয়। মামলার স্বাক্ষীদের যোগসাজসে নাটকীয় ভাবে আমাদের বিরুদ্ধে থানায় মিথ্যা অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করে হয়রানী করা হচ্ছে। তিনি জানান, মারধরের ঘটনাটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। এ বিষয়ে স্থানীয় চেয়ারম্যান আলহাজ নুরুল আমিন ও ডুলাহাজারা ৫নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার নুরুল আবচার অবগত রয়েছে।

ছাদেক এলাকার চিহ্নিত একজন ইয়াবা ব্যবসায়ী। সে মিথ্যা মামলা করে এখনো আমাদের বিরুদ্ধে তার সাঙ্গপাঙ্গরা প্রতিনিয়ত বিভিন্ন ভাবে হুমকি ধামকির পাশাপাশি নানা ভয়ভীতি ও ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে বলে ভুক্তভোগী জানান। তিনি এ মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক ঘটনার মামলাটি সুষ্ঠু তদন্তের জন্য সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

এ ব্যাপারে ডুলাহাজারা ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ নুরুল আমিন কাছে; জানতে চাইলে তিনি বলেন, সম্পূর্ণ মিথ্যা একটি ঘটনাকে প্রভাবিত করে এলাকার নিরীহ ব্যক্তিকে জড়িয়ে মামলাটি করা হয়েছে। মাদক বিক্রি কাজে বাঁধা দেয়ায় মূলত এ মিথ্যা মামলা দিয়ে তাদেরকে হয়রানী করা হচ্ছে। প্রকৃতপক্ষে ছাদেক হোছাইন এলাকার চিহ্নিত একজন ইয়াবা ব্যবসায়ী। থানার মধ্যে তার বিরুদ্ধে যথেষ্ট ডকুমেন্ট রয়েছে। পুলিশের অভিযানে তাকে কয়েকবার আটক করা হয়েছিল। মুছলেখা দিয়ে থানা থেকে ছাড়া পাওয়ার পর পরই পুনরায় সে মাদকে জড়িয়ে যায়। এ মামলাটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভাবে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণে পুলিশ সুপারসহ সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কাছে তিনি আহ্বান জানান।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: ইয়াবা, চকরিয়া, মামলা
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন