parbattanews

চকরিয়ায় মা-মেয়েকে ‘গরু চোর’ আখ্যা দিয়ে রশিতে বেঁধে বর্বর নির্যাতন

কক্সবাজারের চকরিয়ায় মধ্যবয়সী এক মা ও তার উঠতি বয়সী মেয়েকে ‘গরু চোর’ আখ্যা দিয়ে জনসম্মুখে একদল দুর্বৃত্ত নির্মমভাবে পিটিয়েছে।

পরে কোমরে রশি বেঁধে মা-মেয়ে দু‘জনকে প্রকাশ্য রাস্তায় হাঁটিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় হারবাং চেয়ারম্যানের ইউপি কার্যালয়ে। সেখানে চেয়ারম্যান মিরানুল ইসলাম নিজে তাদের আবার প্রচণ্ড প্রহার করেন।

একপর্যায়ে তাদের শারীরিক অবস্থার গুরুতর অবনতি ঘটলে পুলিশ এসে মা ও মেয়েকে উদ্ধার করে চকরিয়া সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করে।

শুক্রবার (২১ আগস্ট) দুপুরে উপজেলার হারবাং পহরচাঁদা এলাকায় এ ঘটনা ঘটলেও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শনিবার রাতে ঘটনার ছবি ভাইরাল হয়ে পড়লে পরে জানাজানি হয়।

মা ও মেয়ে চকরিয়া হাসপাতালে বর্তমানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তাদের শারীরিক অবস্থা আশঙ্কামুক্ত নয় বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের চিকিৎসকরা।

এ ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে চকরিয়া থানার হারবাং পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ (পুলিশ পরিদর্শক) মো. আমিনুল ইসলাম জানান, শুক্রবার স্থানীয়রা ফাঁড়িতে খবর দিলে আমরা ফোর্স পাঠাই।

আমাদের ফোর্স গিয়ে গুরুতর অবস্থায় মা-মেয়েকে উদ্ধার করে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে আসি। আমরা তাদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছি।

তিনি আরো জানান, স্থানীয় এক ব্যক্তির দায়ের করা গরু চুরির মামলায় তাদের অভিযুক্ত করা হয়েছে। অভিযুক্তদের মধ্যে মা-মেয়েসহ চার জনের বাড়ি পটিয়া উপজেলার শান্তির হাটে। অপরজনের বাড়ি পেকুয়া লালব্রিজ এলাকায়।

হারবাং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মিরানুল ইসলামের তত্ত্বাবধানে তাদের উপর নির্যাতন হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এমন অভিযোগ ওদের কেউ করেনি।

আমাদের ফোর্স যখন ঘটনাস্থলে যায় তখন সেখানে প্রায় দুই শতাধিক মানুষ উপস্থিত ছিলেন। সেখান থেকে তাদেরকে আমাদের হেফাজতে নিয়ে আসাটাই প্রাধান্য দিয়েছি। আর ভুক্তভোগী কিংবা অন্য কেউ যদি অভিযোগ করে আমরা তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

ঘটনার একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন, একদফা মা-মেয়ের ওপর নির্যাতন চলার পর হারবাং ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যান মিরানুল ইসলাম মিরান পরিষদের চৌকিদার (গ্রাম পুলিশ) পাঠিয়ে তাদেরকে রশিতে বেঁধে তার কার্যালয়ে এনে আবার নির্মমভাবে নির্যাতন করেন।

উপর্যুপরি নির্যাতন শেষে চেয়ারম্যানের লোকেরাই তদন্তকেন্দ্রে ফোন করে পুলিশ এনে তাদের হাতে মা-মেয়েকে মুমূর্ষু অবস্থায় তুলে দেন।

হারবাং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মিরানুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করতে তার মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।

Exit mobile version