parbattanews

চকরিয়ায় হামিদ হত্যা মামলার প্রধান আসামীসহ ২ ডাকাত গ্রেপ্তার, অস্ত্র ও গুলি উদ্ধার

অভিযান চালিয়ে দেশীয় তৈরি দুইটি একনালা লম্বা বন্দুক ও তিনটি তাজা কার্তুজ উদ্ধার করা হয়

কক্সবাজারের চকরিয়ায় চরণদ্বীপ চিংড়ি জোন এলাকায় আধিপাত্য বিস্তার নিয়ে ডাকাতের গুলিতে নিহত আবদুল হামিদ হত্যা মামলা এজাহারনামীয় প্রধান আসামী ও মামলার পাঁচ নম্বর আসামীকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। ওই সসম ধৃত আসামীদের নিয়ে পুলিশ চিংড়ি জোন এলাকায় অভিযান চালিয়ে দেশীয় তৈরি দুইটি একনালা লম্বা বন্দুক ও তিনটি তাজা কার্তুজ উদ্ধার করে।

মামলার এজাহার নামীয় ধৃত আসামীরা হলেন, উপজেলার চিরিংগা ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের চরণদ্বীপ এলাকার মোজাহের আহমদ প্রকাশ ভাইগ্যার ছেলে আবদু সালাম (৩৫) ও একই এলাকার নুরুল আলমের ছেলে এমরান (৩১)। তারা দু’জনই চিরিংগা চিংড়ীঘের এলাকার চিহ্নিত ডাকাত বলে দাবি করেছে পুলিশ।

উপজেলার চিরিংগা ইউনিয়নের চরণদ্বীপ চিংড়ীঘের এলাকায় বৃহস্পতিবার ভোররাত সাড়ে তিনটার দিকে থানা পুলিশের একটি টীম অভিযান চালিয়ে ধৃত আসামীদের গ্রেপ্তার পরবর্তী এ সব অস্ত্র উদ্ধার করা হয়।

সূত্রে জানা গেছে, গত ১৪ জুন চিরিংগা ইউনিয়নের চরণদ্বীপ চিংড়ি জোনে ডাকাত দলের দুই গ্রুপের মধ্যে গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। ইউনিয়নের চরণদ্বীপ চারাইল্যার আগার মাথাস্থ এলাকায় ডাকাত আবদুছ ছালাম তার ভাই আবদুল কাদের ও বাহাদুর গ্রুপের মধ্যে চিংড়ি জোন এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দফায় দফায় গোলাগুলি হয়। ওইদিন বৃহস্পতিবার সকালের দিকে ডাকাত আবদু ছালামের লোকজন এলাকায় এলোপাতাড়ি গুলি করে পালিয়ে যাওয়ার সময় স্থানীয় আবদুল হামিদ নামের এক ব্যক্তিকে তার বসতঘরে ঢুকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে গুলিবিদ্ধ করা হয়। পরে সে ঘটনাস্থলে মারা যায়।

স্থানীয়রা পুলিশকে খবর দিলে পরে চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো: হাবিবুর রহমানের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থল গিয়ে নিহতের লাশ উদ্ধার করেন। এ ঘটনায় নিহতের বড় ভাই আবদুল আজিজ বাদী হয়ে ওইদিন রাত্রে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পুলিশ মামলার পর থেকে এজাহারভুক্ত আসামীদের ধরতে চিরিংগা চিংড়ী জোন এলাকায় কয়েকদফা অভিযান চালায়।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত ২ জুলাই চকরিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) এস এম আতিক উল্লাহর নেতৃত্বে সঙ্গীয় পুলিশ ফোর্স নিয়ে চিরিংগা চিংড়ী জোন এলাকায় অভিযান চালিয়ে রাত সাতটার দিক আবদুল হামিদ হত্যা মামলার প্রধান আসামী আবদু সালাম ও মামলার পাঁচ নম্বর আসামী এমরানকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার পরবর্তী ধৃত আসামীদের নিয়ে চিংড়ী জোন এলাকায় একাধিক অভিযান চালানো হয়েছে বলে পুলিশ দাবী করেছে।

অভিযানে নেতৃত্বে দেয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) এস এম আতিক উল্লাহ বলেন, আবদুল হামিদ হত্যা মামলার প্রধান আসামী আবদু সালাম ও মামলার পাঁচ নম্বর আসামী এমরানকে নিয়ে গ্রেপ্তার পরবর্তী

বৃহস্পতিবার ভোররাতে হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত অন্যান্য আসামীকে ধরতে চিংড়ী জোনে অভিযান চালানো হয়। অভিযানে ধৃত আসামীদের জিজ্ঞাসাবাদে তাদের রক্ষিত অস্ত্র ও গুলি হত্যা মামলার অপর আসামী আবদুল গণির গোয়াল ঘরে রয়েছে বলে তারা স্বীকার করেছে।

পরে থানার উপপরিদর্শক (এস আই) কামরুল হাসান, এস আই মাজহারুল ইসলাম সরকার ও থানার এএসআই আকবর মিয়া, কামাল উদ্দিন, খাইরুল আলমসহ সঙ্গীয় পুলিশ ফোর্স নিয়ে আসামী আবদুল গণির গোয়াল ঘরে অভিযান চালিয়ে খড়ের নিচে সাদা প্লাষ্টিকের বস্তার ভেতরে মুড়ানো দেশীয় তৈরি দুইটি একনালা লম্বা বন্দুক ও তিন রাউন্ড তাজা কার্তুজ উদ্ধার করে জব্ধ করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ধৃত আসামীরা চিংড়ি জোন এলাকার চিহ্নিত ডাকাত। তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অপরাধের একাধিক মামলা রয়েছে।

চকরিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. হাবিবুর রহমান বলেন, পুলিশের একটি টীম থানার তদন্ত কর্মকর্তার নেতৃত্বে চিরিংগা চিংড়ি জোন এলাকায় অভিযান চালিয়ে হামিদ হত্যা মামলার এক ও পাঁচ নম্বর আসামীকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়। পুলিশ তাদের জিজ্ঞাসাবাদে ভিত্তিতে দুইটি অস্ত্র ও তিনটি কার্তুজ উদ্ধার করেন।

ধৃত এক নম্বর আসামী আবদু সালামের বিরুদ্ধে ৩টি হত্যাসহ ৭টি মামলা ও ধৃত পাঁচ নম্বর আসামী এমরানের বিরুদ্ধে ২টি হত্যাসহ ৪টি মামলা রয়েছে। গ্রেপ্তারকৃত আসামীদের দুপুরে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে বলে তিনি জানান।

Exit mobile version