চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে “বৈসাবি ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য” উৎসব অনুষ্ঠিত

fec-image

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় জুম্ম শিক্ষার্থী পরিবারের উদ্যোগে বর্ণিল সাজে ” বৈ-সা-বি ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য উৎসব-২২” অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত পার্বত্য চট্টগ্রাম এবং সমতলের চাকমা, মারমা, রাখাইন, ত্রিপুরা, গারো জাতিসত্তাদের অংশগ্রহণে ঐতিহ্যবাহী ও বর্ণিল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়।

গতকাল শুক্রবার (৮ এপ্রিল) বিকেল ৩ ঘটিকায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্মুক্ত মঞ্চে ” বৈ-সা-বি ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য উৎসব-২২” অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থী সন্তু চাকমা এবং উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের শিক্ষার্থী শ্রেয়া চাকমা। অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য প্রফেসর বেনু কুমার দে। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, কলা ও মানববিদ্যা অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মাহবুবুল হক এবং বিশেষ অতিথি ছিলেন রেজিস্টার প্রফেসর এস এম মনিরুল হাসান, সহকারী প্রক্টর গোলাম কুদ্দুস লাবলু এবং সমাজতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষক মাইদুল ইসলাম এবং যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক আর রাজী সহ অন্যান্য বিভাগের শিক্ষকবৃন্দ।

উদ্বোধক উপ-উপাচার্য প্রফেসর বেনু কুমার দে মহোদয় বলেন, “চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় জুম্ম শিক্ষার্থী পরিবার প্রথমবার বৈ-সা-বি ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য উৎসব করছে। এই বিশ্ববিদ্যালয় বহু জাতিসত্তার বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতির মিলনকেন্দ্র। এই দেশে বসবাসরত সকল জাতিসত্তার সংস্কৃতিকে উর্ধ্বে তুলে ধরতে হবে।” তিনি আয়োজক কমিটি’কে সুন্দর অনুষ্ঠান উপহার দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ এবং প্রতিবছর এই আয়োজনের আহ্বান করেন।

প্রধান অতিথি ড. মাহবুবুল হক ইতিহাসের স্মৃতিচারণা করে বলেন, ব্রিটিশ আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে পাহাড়ি জাতির প্রতিরোধ সংগ্রাম গৌরবের এবং বীরত্বের। এই পাহাড়ি জাতিগুলোর ঐতিহ্য ও বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতি চর্চা, সংরক্ষন বৃদ্ধি এবং দেশবাসীর কাছে তুলে ধরতে হবে।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের জুম্ম শিক্ষার্থী পরিবারের সভাপতি রনেল চাকমা বলেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় জুম্ম শিক্ষার্থী পরিবার ক্যাম্পাসে প্রতি বছর নবীন শিক্ষার্থীদের বরণ, বার্ষিক পিকনিক ও মিলনমেলা আয়োজন, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, পাঠচক্র ও ম্যাগাজিন সম্পাদনাসহ, বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি কোচিং পরিচালনাসহ বন্ধের দিনগুলোতে পাহাড়ের দুর্গম অঞ্চলে শিক্ষা বিস্তার ও মান উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় এবারের ক্যাম্পাসে প্রথমবারের মতন “বৈ-সা-বি ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য উৎসব -২২” অনুষ্ঠিত হয়েছে এবং নতুন সাংস্কৃতিক সংগঠনের আত্নপ্রকাশ করতে যাচ্ছে।

তিনি অনুষ্ঠানকে সাফল্যমন্ডিত করতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, সাংবাদিকবৃন্দ, বন্ধুপ্রতিম সংগঠনবৃন্দ, অতিথিবৃন্দ ও দর্শক-শ্রোতাসহ স্থানীয় ও অতিথি শিল্পীদের সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান এবং প্রতিবছর এই আয়োজন ধারাবাহিকতা রাখার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

পরে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের শেষপর্যায়ে ২৭ সদস্য বিশিষ্ট নতুন সাংস্কৃতিক সংগঠন ” হিল কালচারাল ফোরাম” ঘোষণা করা হয়। এতে নৃবিজ্ঞান বিভাগের ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী প্যাশন চাকমা সভাপতি এবং ফিন্যান্স বিভাগের ১ম বর্ষের মেধাবী শিক্ষার্থী রিক্তা চাকমা সাধারন সম্পাদক নির্বাচিত হন।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন