parbattanews

চন্দ্রঘোনায় দেশের প্রথম অ্যাভিয়ারী পার্কে ক্যাবল কার স্থাপনের কাজ শুরু

Cable Car (Aveary Park)
 
মো. রেজাউল করিম, কাপ্তাই:
পরিবেশ ও বন মন্ত্রনালয়ের উদ্যোগে বাস্তবায়নাধিন রাঙ্গুনিয়া উপজেলার কোদালা বন বিটের সবুজ বনাঞ্চল এলাকায় দেশের প্রথম ও একমাত্র অ্যাভিয়ারি এন্ড রিক্রিয়েশন পার্কের (পক্ষীশালা ও বিনোদন কেন্দ্র) আগামী সেপ্টেম্বরে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করতে যাচ্ছে। উপজেলার চন্দ্রঘোনা ও হোসনাবাদ ইউনিয়নের পার্ক এলাকা ঘিরে দেশে দীর্ঘতম দুই কিলোমিটার পাহাড় বিস্তৃতি ক্যাবল কার স্থাপন হতে যাচ্ছে এই পার্কে।

আন্তর্জাতিক দরপত্রের মাধ্যমে এই পার্কে ক্যাবল কার স্থাপনের কার্যাদেশ পেয়েছে ভারতীয় একটি প্রতিষ্ঠান। কার্যাদেশ পাওয়ার পর পরই প্রতিষ্ঠানটি ক্যাবল কার স্থাপনের কার্যক্রম ইতিমধ্যে শুরু করে দিয়েছে। এর আগে চট্টগ্রাম দক্ষিন বন বিভাগ ও স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর পার্ক এলাকায় প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মান। কৃত্রিম লেক তৈরিসহ, পাখিদের নিরাপদ আবাসস্থল তৈরির আনুষাঙ্গিক কার্যক্রম শেষ করেছে। পার্কটির নামকরণ কয়েছে শেখ রাসেল অ্যাভিয়ারী পার্ক।

পার্কের প্রকল্প পরিচালক ও চট্টগ্রাম দক্ষিন বন বিভাগীয় কর্মকর্তা বখতেয়ার নুর সিদ্দিকী জানান. চট্টগ্রাম দক্ষিন বন বিভাগের কোদালা বন বিটের সংরক্ষিত বনাঞ্চলের প্রায় সাড়ে ৫‘শ একর বনভুমিতে দেশের প্রথম অ্যাভিয়ারি এন্ড রিক্রিয়েশন পার্ক গড়ার পরিকল্পনা গ্রহন করে পরিবেশ ও বন মন্ত্রনালয়। সারা বিশ্বের মধ্যে মালয়েশিয়া এবং ইন্দোনেশিয়ায় রয়েছে এ ধরনের অ্যাভিয়ারি এন্ড রিক্রিয়েশন পার্ক।  রাঙ্গুনিয়ার সাংসদ পরিবেশ ও বন মন্ত্রী ড. হাসান মাহমুদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় প্রায় ২৯ কোটি ব্যয়ে এই প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হচ্ছে।

বিভাগীয় বন কর্মকর্তা বখতেয়ার নুর সিদ্দিকী জানান, এই অ্যাভিয়ারী পার্ক প্রকল্পের ভৌত অবকাঠামো নির্মানের কাজ ইতিমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। কৃতিম লেক প্রতিষ্ঠাও প্রায় সম্পন্ন। আন্তর্জাতিক দরপত্রের মাধ্যমে একটি স্বনামধন্য ভারতীয় কোম্পানী দুই কিলোমিটার ক্যাবলকার স্থাপনের কার্যাদেশ পেয়েছে। ইতিমধ্যে কোম্পানীটি পার্কে তাদের কাজ শুরু করে দিয়েছে।

আগামী সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে প্রকল্পের শতভাগ কাজ সম্পন্ন হবে এবং আনুষ্ঠানিকভাবে দেশের প্রথম এই পক্ষীশালা ও বিনোদন পার্কের যাত্রা শুরু হবে।
এ প্রসঙ্গে পরিবেশ ও বনমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এমপি জানান, পাখীদের অভয়ারন্য তৈরী, জীববৈচিত্র ও পরিবেশ সংরক্ষন এবং এ অঞ্চল থেকে অবৈধভাবে বন ও বৃক্ষ উজার প্রতিরোধের পাশাপাশি মানুষের বিনোদনের বিষয়টি বিবেচনা করে এই অঞ্চলের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যকে কাজে লাগিয়ে এখানে দেশের একমাত্র অ্যাভিয়ারী পার্ক প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেয়া হয়। বাংলাদেশে এই প্রথম দুই কিলোমিটার দীর্ঘ ক্যাবল কার স্থাপন করা হচ্ছে এই পার্কে। দীর্ঘ ক্যাবল কার ও পাখিদের ব্যতিক্রমী অভয়ারন্য দেখার জন্য দেশের বাইরে থেকেও পর্যটকরা এই পার্কে আকৃষ্ট হবে। এতে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা আয়েরও সুযোগ রয়েছে চন্দ্রঘোনা শেখ রাসেল অ্যাভিয়ারী পার্কের মাধ্যমে।

চট্টগ্রাম দক্ষিন বন বিভাগের সহকারী বন সংরক্ষক কৃষ্ণপদ সাহা জানান, দেশে প্রথম প্রতিষ্ঠিত এটি এমন একটি পার্ক যেখানে শুধুমাত্র পাখি ও জীব বৈচিত্র সংরক্ষনের জন্য একটি অভয়ারন্যভিত্তিক বৃক্ষ আচ্ছাদিত সবুজ পাহাড়ি বনে হাজার হাজার বুনো পাখি উড়ে বেড়াবে। তাদের কলতানে মুখরিত হবে সবুজ বন। আর বুনো পথে ঘুড়ে বেড়াবে বিনোদন প্রেমি মানুষ। আকাশ পথে ক্যাবল কারে চড়ে দেখতে পারবে নিচের অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য।

এটি হবে দেশের ব্যতিক্রমী প্রাকৃতিক, অত্যাধুনিক এবং আকর্ষনীয় পর্যটন কেন্দ্র। কোদালা বনবিটের ২১০ হেক্টর বনভুমিতে পার্ক এলাকার ব্যাপ্তি। পার্কের অভ্যান্তরে অন্যান্য বৃক্ষের পাশাপাশি বট, অশ্বথ, পাকুর, আমলকি, ডুমুর, ইত্যাদি পাখি খাদ্য ও বিভিন্ন ফল ফলাদির বৃক্ষচারা বনায়নে বাগান সৃজন ও পাখিকুলের প্রাকৃতিক খাদ্যের ব্যবস্থার মাধ্যমে পাখিদের অভয়রণ্যর পরিবেশ সৃষ্টি করা হয়েছে।

Exit mobile version