চিরনিদ্রায় দেশের র্দীঘ মানব রামুর জিন্নাত আলী

fec-image

বহূল আলোচিত ও দেশের র্দীঘমানব জিন্নাত আলীকে চিরনিদ্রায় শায়িত করা হয়েছে। মঙ্গলবার (২৮ এপ্রিল) বেলা ৩টায় জানাজা শেষে তাকে পারিবারিক কবরস্থানে কবরস্থ করা হয়।

জিন্নাত আলীর পিতা আমির হামজা জানান,তাদের স্থায়ী নিবাস রামু উপজেলার গর্জনিয়া ইউনিয়নের বড়বিলে। গত ২ মাস ধরে নিজবাড়িতে অসুস্থ ছিলো সে। অবস্থা গুরুতর হলে তাকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করা ২১ এপ্রিল মঙ্গলবার। আর্থিক দৈন্যতার মাঝেও তারা টাকা সংগ্রহ করে চিকিৎসা করান নাম মাত্র। সেখানে অবস্থা আরো অবনতি হলে চট্টগ্রাম মেডিকেলে নিয়ে যান তাকে।

তিনি আরো বলেন , চমেক হাসপাতালে র্ভতির পর অবস্থা সংকটাপন্ন হলে তাকে নিউরোলজি বিভাগে র্ভতি করা হয়। নিউরো সার্জারি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক নোমান খালেদ চৌধুরী তাদেরকে বলেন, জিন্নাতের মস্তিষ্কে একটা বড় টিউমার রয়েছে। যেটি ঢাকায় বলা হয়েছিলো।

তিনি আরো বলেন, সোমবার বাদ এশা সে র্মূমুষ হয়ে পড়েন। পরে রাত ৩ টার দিকে জিন্নাত মারা যান। এ সময় তার বয়স ছিলো ২৪ বছর। তার উচ্চতা ছিলো ৮ ফুট ৬ ইঞ্চি।

জিন্নাতের পিতা আক্ষেপের সাথে বলেন, গরিব পরিবারে জন্ম নেয়ায় অনেক কাজ সে সারতে পারেনি। যেমন জিন্নাতের বিয়ে হয়নি। অনেক চেষ্টা করেও তারা বিফল হয়েছিলো, তার জন্য মেয়ে খুঁজে পাওয়া যায়নি। এছাড়া তার সঠিক পরিচর্যাও পরিবারিকভাবে নিতে পারে নি তারা।

কিন্ত দেশের প্রধানমন্ত্রী, এমপি কমল, জেলা প্রশাসক ও রামু উপজেলা নিবর্হিী অফিসার তাদের অনেক সহায়তা করেছেন। মালামালসহ দোকান দিয়েছেন। আধাপাকা ঘর বেধে দিয়েছেন। আরো অনেক সহায়তা করেছেন তারা।

জিন্নাতের বড়ভাই মো. ইলিয়াছ বলেন, ২১ এপ্রিল বাড়ি থেকে বের করার সময় থেকে জিন্নাত কথা বলতে পারেনি কারো সাথে। শেষ পর্যন্ত সেভাবেই মারা যান।

তার জানাজায় এমপি কমল‘সহ কয়েকজন গণ্যমান্য ব্যক্তি উপস্থিত ছিলেন। যার সংখ্য ৮/১০ জন। তবে লোকজন ভীড় করলেও তাদেরকে পুলিশ নিষেধ করায় কেউ আর জানাজায় অংশ নেন নি। মৃত্যুকালে জিন্নাতের পরিবারে জীবিত রয়েছেন মা-বাবা, ২ ভাই ও ১ বোন।

উল্লেখ্য যে, ১৯৯৬ সালে জিন্নাতের জন্ম হয়। ১০ বছর বয়স থেকে জিন্নাতের অবস্থা অস্বাভাবিক হলে পরিবারের লোকজন তাকে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেয়া হয়। জিন্নাত ছিলো পেশায় লেবার। ধানকাটতো, কাঠকাটতো। হতদরিদ্র ঘরের সন্তান হওয়ায় উন্নত চিকিৎসা নিতে পারেন নি তিনি।

এ অবস্থায় ২০১৭ সালের মাঝামাঝি সময়ে এ প্রতিবেদক প্রথমেই তার সন্ধান পেয়ে কয়েকটি দৈনিক পত্রিকায় ফলাওভাবে সংবাদ প্রকাশ করার পর এমপি সাইমুম সরওয়ার কমলের নজরে আসে জিন্নাতের বিষয়টি।

পরবর্তীতে তিনি তাকে নিয়ে গিয়ে ঢাকার বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির ব্যবস্থা করান। আর ২০১৮ সালে জিন্নাতকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথেও সাক্ষাত করিয়েছিলেন তিনি। পরে প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে একটি ঘর ও মালামালসহ একটি দোকানও পেয়েছিলেন তিনি।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: চমেক, বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, রামু
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন