চেয়ারম্যানের স্বাক্ষর জাল করে ‘নিকাহ রেজিস্ট্রার’ নিয়োগের প্যানেল প্রেরণের অভিযোগ

fec-image

কক্সবাজার সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কায়সারুল হক জুয়েল ও ঝিলংজা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান টিপু সুলতানের স্বাক্ষর জাল করে ঝিলংজা ইউনিয়নের ‘নিকাহ রেজিস্ট্রার’ নিয়োগের নিমিত্তে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে প্যানেল প্রেরণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এমনকি, উচ্চ আদালতের আদেশ মতে, ‘স্থিতাবস্থা’ বজায় না রেখে নিয়োগ প্রক্রিয়াটি করেছেন চিহ্নিত জালিয়াতচক্র।

বিষয়টি অবগত হওয়ার পর খোদ দুই চেয়ারম্যান নিজস্ব প্যাডে কক্সবাজার জেলা প্রশাসকের নিকট লিখিত অভিযোগ করেছেন। স্বাক্ষর জালিয়াতির মাধ্যমে তৈরি প্যানেল বাতিল করে জালিয়াতচক্রের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি দিয়েছেন তারা।

গত ২২ সেপ্টেম্বর চেয়ারম্যান টিপু সুলতান এবং ২৬ সেপ্টেম্বর চেয়ারম্যান কায়সারুল হক জুয়েল পৃথক আবেদনে জালিয়াতির বিস্তারিত তুলে ধরেছেন। রেজিস্ট্রার নিয়োগের প্যানেল সংক্রান্তে গঠিত উপদেষ্টা কমিটির অন্যতম সদস্য এই দুই চেয়ারম্যান। গুরুত্বপূর্ণ এই দুই জনপ্রতিনিধির স্বাক্ষর কিভাবে জালিয়াতি করা হলো, তা ভাবিয়ে তুলেছে। ঘটনা তদন্তের দাবি স্থানীয়দের।

অভিযোগ সুত্রে জানা গেছে, ২০২০ সালে ঝিলংজা ইউনিয়নের নিকাহ রেজিস্ট্রার নিয়োগের জন্য দরখাস্ত আহবান করা হয়। তৎকালীন কর্মরত কাজি নছির শাহ মুহাম্মদ ইকবাল (গত ১৩ আগস্ট মারা যান) এ বিষয়ে উচ্চ আদালতে সিভিল পিটিশন নং-১০৮৯/০৫ দায়ের করেন। উক্ত মামলায় স্থিতাবস্থা বজায় রাখার আদেশ দেন বিচারক।

সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কায়সারুল হক জুয়েল বলেন, নিকাহ রেজিস্ট্রার নিয়োগ সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটির সদস্য হিসেবে এই বিষয়ে অবহিতকরণসহ বিরত থাকতে অনুরোধ করি। সম্প্রতি জানতে পারলাম, মোহাম্মদ রমিজ কামাল নামের ব্যক্তি প্রার্থী হিসেবে ১ নম্বরে তালিকাভুক্ত করে আমার স্বাক্ষর জাল করে একটি প্যানেল মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছেন। আমি ছাড়া উপদেষ্টা কমিটির অন্যান্য সদস্যদের স্বাক্ষরও জাল করা হয়েছে বলে জেনেছি।

ঝিলংজা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান টিপু সুলতান বলেন, আমার স্বাক্ষর জাল করে কাজি নিয়োগের প্যানেল পাঠানোর খবরে আমি হতভম্ব। প্রতারক জালিয়াতচক্রের বিরুদ্ধে রুখে না দাঁড়ালে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গঠনের স্বপ্ন ধুলিস্যাৎ হবে।

জালিয়াতির মাধ্যমে প্রেরিত প্যানেল বাতিলপূর্বক সংশ্লিষ্ট চক্রের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছি।

সূত্র জানায়, প্রয়াত কাজি নছির শাহ মুহাম্মদ ইকবালের দায়েরকৃত রিটের উপর জারিকৃত নিষেধাজ্ঞা ২০২১ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত বলবৎ আছে। কিন্তু ২০২০ সালের ২ ফ্রেব্রুয়ারি সদর সাব-রেজিস্ট্রারের কার্যালয় থেকে ৩ সদস্যের প্যানেল পাঠানো হয়। প্যানেলে ১নং ক্রমিকে রয়েছেন মোহাম্মদ রমিজ কামাল। তিনি ঝিলংজা দক্ষিণ হাজিপাড়ার আখতার কামাল নুরীর ছেলে। প্যানেলের অন্য দুইজন হলেন- ঝিলংজা চাঁন্দেরপাড়ার আলী হোছাইনের ছেলে মোহাম্মদ শাহ্ জালাল ও হাজিরপাড়ার ফজল আহম্মদের ছেলে ইমাম হোছাইন।

উপদেষ্টা কমিটির দুইজন সদস্যের স্বাক্ষর জালিয়াতি, তাও আদালতের আদেশ তোয়াক্কা না করে প্যানেল পাঠালো কিভাবে? প্রশ্ন সচেতন মহলের।

এ বিষয়ে জানতে জেলা রেজিস্ট্রার আবদুল বাছেতের ব্যবহারের মুঠোফোনে কল দিলে বন্ধ পাওয়া যায়।

জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদকে ফোন করলে রিসিভ করেন আরেকজন। সে কারণে স্বাক্ষর জালিয়াতির অভিযোগের বিষয়ে কি ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে, তা জানা সম্ভব হয় নি।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন