parbattanews

জঙ্গিদের মরদেহ শনাক্তে সীতাকুণ্ডের পথে অভিভাবকরা

নিজস্ব প্রতিবেদক, বান্দরবান:

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার প্রেমতলা এলাকার জঙ্গি আস্তানা ছায়ানীড় বাড়িতে আত্মঘাতি হামলায় নিহত পাঁচজনের মধ্যে তিনজনের  বাড়ি বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলায়।

নিহতরা হলেন নাইক্ষ্যংছড়ির বাইশারী এলাকার বাসিন্দা কামাল হোসেন, তার স্ত্রী জুবাইরা ইয়াসমিন ও তাদের শিশু সন্তান এবং তার ভাই জহিরুল হক (জসিম) লাশ সনাক্ত ও তাদের লাশ আনতে গেলেন হতভাগ্য দুই পিতা।

পুলিশ সূত্র জানায়, সীতাকুণ্ড থানার বার্তা পেয়ে নিহত কামাল হোসেনের পিতা মোজাফর আহম্মদ ও জুবাইরা ইয়াসমিনের পিতা নুরুল আলম সীতাকুণ্ডের উদ্দেশ্যে বিকালে রওনা দিয়েছেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, জুবাইরা ইয়াসমিন ও তার ভাই জহিরুল হক (জসিম)’র বাড়ি নাইক্ষ্যংছড়ির বাইশারী ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের যৌথ খামার পাড়ায়। তারা সেখানে বসবাসকারী নুরুল আলম ও জান্নাত আরার সন্তান। জুবাইরা ইয়াসমিনের স্বামী কামাল হোসেনের বাড়িও বাইশারীর যৌথ খামারপাড়ায়। নুরুল আলম মহেশখালী থেকে ২০বছর আগে এ এলাকায় বসতি গড়ে তোলেন।

জুবাইরা ইয়াসমিনের মা জান্নাত আরা জানায়, স্বামী কামাল হোসেন ডাক্তার দেখানোর কথা বলে স্ত্রী জুবাইরা ইয়াসমিনকে চট্টগ্রামে নিয়ে যায়। কিছুদিন পর ছেলে জহিরুল হকও তাদের কাছে চলে যায়। সেখানে জুবাইরার সন্তানকে দেখাশুনা করার জন্য আরেক মেয়ে মনজি বেগমকে (১৬) ও চট্টগ্রামে নিয়ে যায়। গত আট মাসে মাঝে মধ্যে মুঠোফোনে জানাত যে, তারা খুব সুখে আছেন। ভালো টাকা পয়সা পাচ্ছেন। এখন জানতে পেরেছে যে জুবাইরা ইয়াসমিন এবং শিশু বোমা বিস্ফারণে মারা গেছে। মনজিরও কোন খবর নেই। তার ৮ ছেলে এবং ৪ মেয়ের মধ্যে ৩জন হারিয়ে গেছে।

স্ত্রী জোবাইদার বড় ভাই জিয়াবুল হক জানান, বোন জোবাইদা এবং জামাতা কামাল উদ্দিনের মরদেহ শনাক্তকরণের জন্য উভয় পরিবারের অভিভাবক হিসেবে তাদের বাবাকে বিকেলে পাঠানো হয়েছে। বোন জোবাইদা এবং জামাতা কামাল উদ্দিনের জঙ্গি কর্মকাণ্ডে আমরা লজ্জিত।

মরদেহ গ্রহণ করা হবে কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে জিয়াবুল হক বলেন, পুলিশের নির্দেশে বাবাকে পাঠানো হয়েছে মরদেহ শনাক্তকরণের জন্য। পরিস্থিতিই বলে দিবে মরদেহ গ্রহণ করবে কি করবে না।

এ ব্যাপারে বাইশারী পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) আবু মুসা বলেন, সীতাকুণ্ড থানার বার্তা পেয়ে অভিভাবকরা লাশ সনাক্ত ও তাদের লাশ আনতে সীতাকুণ্ড রওনা হয়েছেন।

প্রসঙ্গত, চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে জঙ্গি আস্তানা থেকে বিস্ফোরক উদ্ধার ও পাঁচজন নিহতের ঘটনায় চারটি মামলা করেছে পুলিশ।

Exit mobile version