দিনশেষে সন্ধ্যার অন্ধকারে বৈচিত্র্যময় এক পরিবেশ তৈরি হয় বান্দরবানে স্থানীয় মুন্ডির খাবারের দোকানগুলোতে। সব বয়সের মানুষের যেন দৈনন্দিন একটা রীতিমতো খাবার এটি। মুন্ডি ছাড়া যেন কিছু অপূর্ণ রয়ে যায় সারা দিনের মধ্যে।
তাই বান্দরবানে স্থানীয়দের অন্যতম প্রিয় খাবারের নাম মুন্ডি। চালের গুঁড়া দিয়ে তৈরি করা খাবারটি মূলত পাহাড়িদের এক প্রকার স্থানীয় নুডুলস।
বান্দরবান শহরের উজানীপাড়ায় একটি দোকানে মুন্ডির স্বাদ নিতে ব্যস্ত স্থানীয় ও পর্যটকরা।
মুন্ডি নামটি এসেছে মারমাদের কাছ থেকে। বান্দরবানের যে কোনো পাহাড়ি এলাকায় সকাল-বিকেলে খাবারের হোটেলে এ খাবার পাওয়া যায়।
স্থানীয়ভাবে ঐতিহ্যবাহী এই খাবারটি সবার কাছে সুস্বাদু খাবার হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। এটি খেতে খুবই মজা এবং সামান্য টকমিশ্রিত ঝাল। তবে টক-ঝালের পরিমাণ নিজের মত করে দিতে পারে। শুধু পাহাড়ে নয়, বান্দরবানে বেড়াতে আসা অনেক পর্যটকদের কাছেও জনপ্রিয় মুন্ডি।
কিংজাই উ মারমা নামে এ তরুণ বলেন, ছোটবেলা থেকে এটি খেয়ে আসছি। আমাদের কাছে এটি খুবই জনপ্রিয়। প্রতিদিন সকালে অথবা বিকেলে একবার করে দলবেঁধে এই খাবারটা খাওয়া হয়।
শহরের অদুরে শৈলপ্রপাত লাইমি বম পাড়া থেকে বিভিন্ন কাজে শহরে আসেন ম্যানশন বম। তিনি বলেন, নানান কাজের প্রয়োজনে শহরের আসা হয়। কিন্তু একবার আসলে শহরে মধ্যম পাড়া কিংবা উজানী পাড়ার যে কোনো একটি মুন্ডি দোকানে এ খাবারটা খেতে হয়।
ছোট-বড় দোকান বানিয়ে এ ব্যবসার সঙ্গে জড়িতদের মতে, এখানকার মানুষের মুন্ডির খাওয়ার অভ্যাস দীর্ঘ দিনের। এটি মূলত প্রতিবেশী দেশ মিয়ানমারে বেশি চলে। সেখানকার নানান বয়সী মানুষরা প্রচুর পরিমাণে মুন্ডি খান। বিশেষ করে ছোট বাচ্চা ও মেয়েরা বেশি খায়। সকাল ও বিকেলে মুন্ডি হাউসগুলোতে পাওয়া যায় এসব খাবার।
কংরং মুন্ডি হাউসে মুন্ডি খেতে খেতে রাজধানীর পল্টন থেকে বেড়াতে আসা জুয়েল আহমেদ বলেন, বান্দরবানে এ খাবারের নাম অনেকবার শুনেছি। আজকে খুব মজা করে খেয়েছি। ভাল লেগেছে।
এক কথায় বলতে গেলে সবার কাছে বর্তমানে জনপ্রিয় বান্দরবানের এই মুন্ডি।