জাতীয়করণের পরও সরকারি সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত রেজু গর্জনবুনিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়

7 copyআব্দুল হামিদ, বাইশারী:

পার্বত্য বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার দুর্গম জনপদ ঘুমধুম ইউনিয়নের রেজু গর্জনবনিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যায়লটি সরকারের সকল সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত। পাশাপাশি নানা সমস্যায় জর্জরিত এ বিদ্যায়লটি। দেখলে মনে হবে যেকোন মুহূর্তে বিদ্যালয়টি ভেঙে পড়ে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে।

১৯৯২ সালে এলাকাবাসীর সার্বিক সহযোগিতায় বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হলেও বর্তমানে অবস্থা নাজুক।পুরাতন টিনসেট ও ভাঙা বেড়ার ঘর আর জানালা, দরজাবিহীন অবস্থায় এক ঘরে চলছে ৫ম শ্রেণি পর্যন্ত পাঠদান।

সরেজমিনে এই প্রতিবেদক পরিদর্শনে গিয়ে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি উপন্দ্রে লাল কারবারী ও শিক্ষক শিক্ষিকাদের সাথে আলাপকালে তারা দীর্ঘ নি:শ্বাস ছেড়ে বলেন, বর্ষা মৌসুমে শিক্ষার্থীদের বই পুস্তক স্কুলের কাগজ পত্র সব কিছু ভিজে যায় এবং অনেক সময় ছাত্রছাত্রীরা অসুস্থ হয়ে পড়ে।

প্রধান শিক্ষক সৈয়দ হামজা বলেন ১৯৯২ সাল থেকে অত্র বিদ্যালয়টিতে শিক্ষকেরা কঠিন পরিশ্রমের মাধ্যমে বিনা বেতনে ছাত্র ছাত্রীদের পড়া লেখার কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।গত ২০১৩ সালে বিদ্যালয়টি জাতীয়করণের আওতায় আসলেও শিক্ষকেরা এ পর্যন্ত বেতন ভাতাসহ সরকারের কোন ধরনের সুযোগ-সুবিধা পাই নি।

সভাপতি উপন্দ্রে লাল কারবারী বলেন, শুরু থেকেই চার জন শিক্ষক বিদ্যালয়ে নিয়মিত পাঠদান দিয়ে আসলেও জাতীয়করণের সময় উপজেলা কমিটি দুই জন কর্মরত শিক্ষক উক চাইন চাকমা ও পারভিন আক্তার কে বাদ দিয়ে অন্য দুজনের নাম তালিকায় অন্তর্ভুক্তি করে।যারা বর্তমানে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে দায়িত্ব পালন করছেন। এদের মধ্যে একজন শফিউল আলম অপর জন বুলবূল আক্তার।ঘটনাটি উচ্চ পর্যায়ে জনাজানি হওয়ায় বর্তমানে সকল কার্যক্রম বন্ধ থাকে।

স্থানীয়রা জানান গত ২৮শে ফেব্রুয়ারী পার্বত্য চট্রগ্রাম বিষক প্রতিমন্ত্রী বাবু বীর বাহাদুর ও বান্দরবান জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বাবূ ক্য শৈ হ্লা কে ঘুমধুমে সফরকালীন বিষয়টি বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি এবং শিক্ষকেরা অবহিত করেন। তাৎক্ষণিক বিষয়টি আমলে নিয়ে জেলা পরিষদ একটি তদন্ত টিম গঠনের মাধ্যমে সত্যতা যাচাইয়ের নির্দেশ প্রদান করেন বলে কমিটির সদস্যরা জানান।

প্রধান শিক্ষক সৈয়দ হামজা বলেন, দীর্ঘকাল এলাকাবসী ও শিক্ষকদের অর্থায়নে চলছে বিদ্যালয়ের সকল কার্যক্রম।বর্তমানে এ বিদ্যালয়ে শতাধিক ছাত্র ছাত্রী রয়েছে। ২০১১ সাল থেকে পিএসসি সমাপনী পরীক্ষায় শতভাগ পাশসহ বিভিন্ন খেলাধুলায় সুনাম অর্জন করে আসছে।এলাকাবাসীর প্রাণের দাবী দুর্গম জনপদের একমাত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গর্জনবুনিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়টিতে নতুন ভবন নির্মাণ এবং জাতীয়করণের প্রস্তাব প্রেরণের সময় বাদ পড়া শিক্ষক উক চাইন চাকমা ও পারভিন আক্তারকে গেজেট প্রকাশ করে অন্তর্ভুক্তিকরণ।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন