জার্মানির সবচেয়ে বড় মসজিদে প্রথমবারের মতো আযান প্রচার

fec-image

দীর্ঘ অপেক্ষার পর প্রথমবারের মতো জার্মানির কোলন শহরের সর্ববৃহৎ মসজিদে উচ্চস্বরে আজান দেয়া হয়েছে। শুক্রবার জুমার নামাজ উপলক্ষে মাইকে আজান দেয়া হয়। এখন থেকে প্রতি শুক্রবারই উচ্চস্বরে আজান প্রচারিত হবে।

তুরস্ক ভিত্তিক সংগঠন তার্কিশ-ইসলামিক ইউনিয়ন ফর রিলিজিয়াস অ্যাফেয়ার্সের (ডিআইটিআইবি) মধ্যস্ততায় কোলন শহর কর্তৃপক্ষ মসজিদটিতে উচ্চস্বরে আজানের অনুমতি প্রদান করে। এর আগে স্থানীয় মুসলিম সম্প্রদায় ও শহর কর্তৃপক্ষ এ সংক্রান্ত একটি সমঝোতায় পৌঁছায়। এতে বেশকিছু শর্ত শিথিল করে কর্তৃপক্ষ।

এক বিবৃতিতে ডিআইটিআইবি জানায়, গত বুধবার শহর কর্তৃপক্ষের সাথে তাদের দুই বছরের জন্য পরীক্ষামূলক আজান সম্প্রচারের চুক্তি হয়েছে। চুক্তি অনুসারে, লাউডস্পিকারের মাধ্যমে আজান দেয়া হবে এবং তা মসজিদের বাইরে থেকেও শোনা যাবে। তবে আজানের শব্দের মাত্রা ৬০ ডেসিবেলের মধ্যে সীমিত রাখতে হবে। মসজিদটিতে প্রতি শুক্রবার দুপুর ১২টা থেকে বিকেল ৩টার মধ্যে সর্বোচ্চ পাঁচ মিনিট আজান দিতে পারবেন মুয়াজ্জিন।

গত বছরই জুমার আজান দেয়ার সিদ্ধান্তটি নিয়েছিলেন শহরের মেয়র হেনরিয়েট রেকার। কিন্তু এ নিয়ে বিতর্কের কারণে এর বাস্তবায়ন আটকে ছিল। অবশেষে তুর্কি সংস্থা ডিআইটিআইবির উদ্যোগে বৃহস্পতিবার আজান দেয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।

উল্লেখ্য, সেন্ট্রাল মসজিদটি কোলন শহরের ঠিক পশ্চিমে এহরেনফেল্ড জেলার একটি ব্যস্ততম সড়কের পাশে অবস্থিত। মসজিদের দুই পাশে রয়েছে সুউচ্চ দুই মিনার। ফুলের কুঁড়ির আকৃতিতে তৈরি মসজিদটি কাঁচ দিয়ে আবৃত। তাতে রয়েছে প্রাকৃতিক আলো-বাতাস। ফলে দর্শকদের কাছে মসজিদের পাশাপাশি তা অন্যরকম স্থাপনা যা দেখলে চোখ ও মন উভয়টি প্রশান্তিতে ভরে উঠে। এতে একসাথে ১২ শ’ মুসল্লি নামাজ পড়তে পারেন।

তুরস্ক ভিত্তিক সংগঠন তার্কিশ সংগঠন ডিআইটিআইবি মসজিদটি পরিচালনা করে। ২০১৮ সালে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তৈয়ব এরদোগান তা উদ্বোধন করেন।

জার্মানিতে ৫০ লাখের বেশি মুসলিম বসবাস করে, যা দেশটির মোট জনসংখ্যার ছয় শতাংশ। সুউচ্চ ডোম ক্যাথেড্রালের জন্য বিখ্যাত কোলন শহরে লক্ষাধিক মুসলিম জনগোষ্ঠীর বসবাস। ইউরোপের অন্যান্য দেশের তুলনায় জার্মানিতে ধর্মীয় স্বাধীনতার বিষয়ক বিতর্ক বেশ কম।

১৯৮৫ সালে সর্বপ্রথম ডুরেন শহরে লাউডস্পিকারের মাধ্যমে আজান দেয়ার অনুমোদন দেয়া হয়। এরপর ২০২০ সালের এপ্রিলে করোনার প্রাদুর্ভাবে যখন পুরো বিশ্ব থমকে যায়, তখন মানসিক প্রশান্তি তৈরি করতে বার্লিনে প্রথমবারের মতো আজান শোনা যায়। তখন বিষয়টি বিশ্বজুড়ে বেশ প্রশংসিত হয়েছিল।

সূত্র : আলজাজিরা ও টিআরটি অ্যারাবিক

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন