শাহজাহান কবির সাজু, পানছড়ি :
পানছড়ি উপজেলার বিভিন্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোতে এবারের এসএসসিতে হতাশাজনক ফলাফল করেছে বলে জানা যায়। দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলা সদরের বিদ্যালয়গুলো যখন মিষ্টি বিতরণে ব্যস্ত ঠিক তার উল্টো চিত্র ছিল পানছড়ি উপজেলায়। ফলাফল খবরে মিষ্টি বিতরণের মতো কোন ঘটনা না ঘটা পানছড়িতে এই প্রথম বলে জানান অনেকেই। তাই পুরো উপজেলার শিক্ষক-অভিভাবক থেকে শুরু করে ছাত্র-ছাত্রীদের মুখে দেখা গেছে বিষন্নতার চাপ। তবে পানছড়ি ইসলামিয়া সিনিয়র মাদ্রাসার ফলাফল ছিল বরাবরের মতোই সন্তোষজনক। যাদের পাশের হার ৯৫.৫৬%। এর মাঝে তিনটি জিপিএ ফাইভ উপজেলার মান ইজ্জত কোন রকম বাঁচিয়েছে।
এবারের এসএসসিতে স্কুল পর্যায়ে উপজেলায় সবচেয়ে ভালো পানছড়ি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়। তাদের পাশের হার ৯১%। এছাড়াও লোগাং উচ্চ বিদ্যালয়ে ৭৮.৬৫%, পানছড়ি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ে ৯০%, পূজগাং মূখ উচ্চ বিদ্যালয়ে ৮৫.২২%, পানছড়ি বাজার উচ্চ বিদ্যালয়ে ৭৮% ও লোগাং বাজার আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ে ৭২% পাশ করেছে বলে মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়।
তবে এ ফলাফল নিয়ে খুবই শংঙ্কিত অভিভাবক মহল। অনেকেই প্রাইভেট বানিজ্যকে দায়ী করেছেন। ক্ষোভের সাথে কয়েকজন অভিভাবক জানালেন, যে সব বিষয়ে ছাত্র-ছাত্রীরা ফেল করার কথা ছিল সেগুলো কোন প্রাইভেট পড়া ছাড়াই পাশ করেছে। কিন্তু গনিত ও বিজ্ঞানে ফেল করার বিষয়ে তারা মানতে রাজী নয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক অভিভাবক জানালেন, প্রাইভেটটা হলো এক ধরনের ফরমালিটি যা স্যারদের খুশী করা। না হয় সকাল ছয়টা থেকে প্রাইভেট শুরু করে গনিত ও বিজ্ঞানে কিভাবে ফেল করে। তাছাড়া এসব প্রাইভেটধারীদের কাছে পড়ে ভবিষ্যতে ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার স্বপ্ন বোতলবন্দী ছাড়া আর কিছু নয় বলেও অনেকে মতামত প্রকাশ করেন।
এ ব্যাপারে পানছড়ি উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো: শাহজাহান এ প্রতিবেদককে জানান, ছাত্র-ছাত্রীদের মাঝে সব সময় গনিত ও বিজ্ঞান ভীতি কাজ করে। তাছাড়া মানসম্মত গনিত ও বিজ্ঞান শিক্ষকের অভাবও রয়েছে। এসব সমস্যা সমাধান করলেই ভালো ফলাফল করা সম্ভব।
অভিজ্ঞ মহলের ধারনা ভোর পাঁচটা থেকে শুরু হয় প্রাইভেট বানিজ্য। সকাল দশটায় কোন রকম বিদ্যালয়ে এসে প্রাইভেট পড়ুয়া ও পড়িয়েরা থাকে ক্লান্ত। তাছাড়া ঘুমেও অনেক সময় তাদের দুর্বল করে ফেলে বিধায় বিদ্যালয়ে আর তেমন গুরুত্ব দেওয়া হয়না। তাছাড়া প্রাইভেট পড়ুয়ারা বরাবরই প্রাইভেট স্যারদের দয়ায় স্কুল পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করে থাকে। এসব দিকে নজর দিয়ে যদি ছাত্র-ছাত্রীদের স্কুলে পড়ালেখায় মনোযোগী করা যায় তবেই ভবিষ্যতে পানছড়ির ছাত্র-ছাত্রীদের ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার স্বপ্ন বাস্তবে পরিণত হবে বলে তাদের ধারনা।