৫০ লাখ টাকা না পেয়ে ‘ক্রসফায়ার’ দেওয়ার অভিযোগে কক্সবাজারের চকরিয়া থানার ওসি হাবিবুর রহমান ও হারবাং পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (পরিদর্শক) আমিনুল ইসলামের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। এছাড়া অজ্ঞাত পরিচয়ধারী আরো ১০ থেকে ১৫ জনকে এ মামলায় অভিযুক্ত করা হয়েছে।
রবিবার (১৬ আগস্ট) চট্টগ্রামের পটিয়া জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বিশ্বেশ্বর সিংহের আদালতে মামলাটি করেন নিহতের মামা আহমদ নবী।
আদালত অভিযোগ আমলে নিয়ে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি) তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
বাদীর পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন আইনজীবী নুর মিয়া।
এজাহারে বলা হয়, নিহত জাফর একজন ওমান প্রবাসী। গত ১২ মার্চ তিনি দেশে ছুটিতে আসেন। করোনার কারণে ফ্লাইট বন্ধ থাকায় আর বিদেশে যেতে পারেননি।
গত ২৯ জুলাই নিহত জাফরের গ্রামের বাড়ি পটিয়ার কচুয়াই ইউনিয়নের ভাইয়ার দিঘির পাড় এলাকায় আসেন চকরিয়া থানার ওসি হাবিবুর রহমান এবং এসআই আমিনুল ইসলাম।
তারা জাফরের সঙ্গে কথা বলে তাকে গাড়িতে উঠিয়ে নিয়ে যান। পরে চকরিয়ার ওসি জাফরের স্ত্রীর মুঠোফোনে ফোন করে বলেন, জাফর একজন ইয়াবা ব্যবসায়ী। তাকে ছাড়াতে হলে ৫০ লাখ টাকা লাগবে। এত টাকা কোথা থেকে দেবে চিন্তায় পড়ে যায় নিহতের পরিবার।
এ দিকে চকরিয়া থানা থেকে ফোন করে বারবার বলা হয়, টাকা না দিলে ক্রসফায়ারে দেওয়া হবে। নিহতের পরিবার প্রাণভিক্ষা চাইলেও চকরিয়া থানা-পুলিশ তাদের কথায় কর্ণপাত করেনি।
দুই দিন পর ৩১ জুলাই পটিয়া থানা থেকে স্থানীয় এক ইউপি মেম্বারকে ফোন করে জানানো হয় জাফর চকরিয়ার ক্রসফায়ারে নিহত হয়েছেন।
পরে নিহতের পরিবার কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ মর্গে গিয়ে দেখেন লাশ পড়ে আছে। মামলায় নয়জনকে সাক্ষী রাখা হয়।
তবে, চকরিয়া থানার ওসি হাবিবুর রহমান মামলার বিষয়ে অবগত নন বলে জানান।
তার দাবি, ক্রসফায়ারের নামে কারও কাছে ৫০ লাখ টাকা চাননি।
হারবাং পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (পরিদর্শক) আমিনুল ইসলামও জাফর নামে কাউকে চেনেন না দাবি করেন।
এ ঘটনায় কোনোভাবেই তিনি জড়িত নন বলে জানান।
মামলার বাদী ও নিহতের মামা আহমদ নবী জানান, একজন জলজ্যান্ত মানুষকে ইয়াবা ব্যবসায়ী সাজিয়ে ক্রসফায়ারে দেবে তা হয় না। ঘটনায় জড়িত পুলিশ সদস্যেসহ সবার বিচার চান তিনি।