parbattanews

টানা বর্ষণে দীঘিনালায় নিম্নাঞ্চল প্লাবিত, ২ উদ্ধারকর্মী নিখোঁজ

দীঘিনালায় টানা বর্ষণ এবং পাহাড়ি ঢলে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত, ছয় হাজার পরিবার পানিবন্দি, আশ্রয় কেন্দ্রে উঠেছে দু’হাজার পরিবার, দু’জন উদ্ধারকর্মী নিখোঁজ দীঘিনালা-লংগদু এবং দীঘিনালা-বাঘাইছড়ি সড়কে যান চলাচল বন্ধ।

দীঘিনালা প্রতিনিধি:

দীঘিনালায় কয়েকদিনের টানা বর্ষণ এবং উজানি ঢলে প্লাবিত হয়েছে উপজেলার নিম্নাঞ্চল। গত সোমবার রাত দশটায় হঠাৎ করে পানি বাড়তে থাকায় প্রায় ছয় হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। মঙ্গলবার(১২জুন) বন্যার্তদের উদ্ধার করতে গিয়ে দু’জন নিখোঁজ রয়েছে। নিখোঁজদের নাম অনুপম চাকমা এবং শিখা চাকমা। এদিকে বর্ন্যাতের জন্য খোলা হয়েছে আশ্রয় কেন্দ্র। আশ্রয় কেন্দ্রে দু’হাজার পরিবার আশ্রয় নিয়েছে। এদিকে বন্যাকবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছেন, খাগড়াছড়ি থেকে নির্বাচিত সাংসদ টাস্কফোর্স চেয়ারম্যান কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপি, জেলা প্রশাসক মো. রাশেদুল ইসলাম এবং পুলিশ সুপার আলী আহমদ।

সরেজমিনে উপজেলার ১নং মেরুং ইউনিয়নের এক নং কলোনী, সোবহানপুর, হাজাছড়া,  তিন নং কলোনী, বাজার এলাকা, ভুইয়াছড়ি এবং জলিল  টিলা এলাকা ঘুরে দেখা যায়, এলাকার অধিকাংশ বসতবাড়ি পানিতে তলিয়ে যায়। এছাড়া উপজেলার ৩নং কবাখালী ইউনিয়নের মুসলিম পাড়া, দক্ষিণ মিলনপুর, তারাবুনিয়া, দক্ষিণ তারাবুনিয়া, হাচিনসনপুর, পূর্ব হাচিনসনপুর, জয়কুমার কার্বারী পাড়া, শান্তিুপুর, নারিকেল বাগান এলাকা বন্যার পানিতে তলিয়ে যায়। এছাড়া বোয়ালখালী ইউনিয়নের মাস্টার পাড়া, বোয়ালখালী পুরাতন বাজার, দীঘিনালা থানা বাজার তলীয়ে যায়। এতে প্রায় ছয় হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে যায়।

এদিকে বন্যার্তদের উ্দ্ধার করতে গিয়ে দুজন নিখোঁজ রয়েছে। নিখোঁজদের নাম অনুপম চাকমা এবং শিখা চাকমা।  সর্বশেষ নিখোঁজদের কোন সন্ধান পাওয়া যায়নি। অন্যাদিকে বন্যার কারণে দীঘিনালা বাঘাইছড়ি ও দীঘিনালা লংগদু সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকায় ইদকে সামনে রেখে দুরপাল্লার যাত্রীরা বিপাকে পড়েছেন।

এব্যাপারে, কবাখালী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, কবাখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং হাচিনসনপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। দুটি আশ্রয় কেন্দ্রে প্রায় সাড়ে তিনশত পরিবার আশ্রয় নিয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্রে তাদের খাওয়া দাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। তিনি আরও জানান, দীঘিনালা জোন থেকে একটি নৌকা দেওয়ায় আমার এলাকার আটকে পড়া লোকজনদের উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে।

এব্যাপারে মেরুং ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. রহমান কবির রতন জানান, মেরুং ইউনিয়নের আটটি আশ্রয় কেন্দ্রে প্রায় এক হাজার পরিবার আশ্রয় নিয়েছে।

এব্যাপারে উপজেলা মৎস কর্মকর্তা অর্বণা চাকমা জানান, বন্যার কারণে উপজেলার প্রায় এক হাজার পুকুর ও জলাশয়ের মাছ ভেসে গেছে।

এদিকে বিকালে শরনার্থী বিষয়ক টাস্কফোর্স চেয়ারম্যান কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপি, জেলা প্রশাসক মো. রাশেদুল ইসলাম ও পুলিশ সুপার আলী আহাম্মদ খান বন্যা কবলিত বেশ কিছু এলাকা পরিদর্শ করেছেন। পরিদর্শকালে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত লোকজনের সাহায্য সহযোগিতায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য উপজেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছেন। বন্যা পরিস্থিতির চরম অবনতির সত্যতা স্বীকার করে  উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শেখ শহিদুল ইসলাম ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নব কমল চাকমা পানিবন্দি লোকজনকে উদ্ধার এবং বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আশ্রিত লোকজনের খাবারের ব্যবস্থাসহ প্রয়োজনীয় সকল প্রকার পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন।

Exit mobile version