parbattanews

নাইক্ষ্যংছড়িতে টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি

বাইশারি প্রতিনিধি:

বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির নিম্ন এলাকায় পাহাড়ি ঢলে প্লাবতি হয়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। গত তিন দিন ধরে টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে নদীর পানি বৃদ্ধির কারণে উপজেলার নিম্ন এলাকায় অন্তত শতাধিক গ্রামের কয়েক হাজারো মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।

এছাড়াও নাইক্ষ্যংছড়িতে দৌছড়ি সড়ক, বাইশারী-গর্জনীয়া-নাইক্ষ্যংছড়ি সড়কের তিন জায়গায় ব্যাপক ভাঙ্গনে স্থল যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে।

বুধবার (২৫ জুলাই) সকালে নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউনিয়নের আশারতলী, কম্বনিয়া, ধুংরী হেডম্যানপাড়া, বড়ুয়া পাড়া, বাজারপাড়া, উপজেলা পরিষদের নীচ তলা, বিজিবি ক্যাম্প এলাকাসহ বেশ কয়েকটি গ্রাম পরিদর্শণে দেখা যায়, মিয়ানমার সীমান্ত থেকে নেমে আসা নাইক্ষ্যংছড়ির জামছড়ি খালের পানি বৃদ্ধি পেয়ে প্লাবিত হয়েছে। এতে নাইক্ষ্যংছড়ি বাজার, উচ্চ বিদ্যালয় পানিতে ডুবে যায়।

ইউনিয়নের ৭নং ইউপি মেম্বার আলী হোসেন ও ৮নং ওর্য়াডের মেম্বার মো. হাসান জানান, বন্যায় প্লাবিত গ্রাম থেকে পানি নেমে যাওয়ার সাথে সাথে মাটির ঘরগুলো ধসে পড়বে। এই দুই ওয়ার্ডে অন্তত শতাধিক পরিবার ব্যাপকভাবে ও ২ শতাধকি পরিবার আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউপি চেয়ারম্যান তসলিম ইকবাল চৌধুরী জানান, টানা বর্ষণে নতুন নতুন গ্রাম প্লাবিত এবং গ্রামীণ সড়কের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ছালেহ আহমদ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, ওয়ামী একাডেমী, বিজিবি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বিছামারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, আশারতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পানিবন্দি হয়ে আছে। অসংখ্য মসজিদে পানি ঢুকে পড়ায় নামাজ আদায় করতে পারেনি মুসল্লিরা।

এ সময় তিনি বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারে জরুরী ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় বরাদ্দ প্রদানের জন্য সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করেন এবং বন্যা কবলিত এলাকার মানুষের জন্য উপজেলা পরিষদকে আরও সক্রিয় হওয়া প্রয়োজন বলে মনে করেন।

ঘুমধুম ইউপি চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আজিজ জানান, ইউনিয়নের কোনারপাড়া ও তুমব্রু জিরো পয়েন্টে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের বাড়িঘর পানিতে তলিয়ে গেছে।

এদিকে উপজেলার বাইশারী ইউনিয়নের ফারিখাল ও গর্জই খালের পানি বৃদ্ধি পেয়ে নারচিবুনিয়া, পশ্চিম বাইশারী, করলিয়ামুরা, দক্ষিণ বাইশারীসহ পাচঁটি গ্রাম পাহাড়ি ঢলের পানিতে প্লাবিত হয়েছে। বুধবার সকাল থেকে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বীজতলা, গ্রামীণ সড়ক, শাকসবজি ও হাস-মুরগির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ঈদগাও-ঈদগড়-বাইশারী সড়ক, বাইশারী-র্গজনীয়া সড়কের তিনটি জায়গায় ভাঙনের ফলে যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে বলে জানান ইউপি চেয়ারম্যান মো. আলম কোম্পানী।

মহিলা ইউপি সদস্য সাবেকুন্নাহার জানান, ভারী বর্ষণের পর থেকে পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসকারীদের সরে আসতে সতর্ক করা হচ্ছে।

বন্যার সর্বশেষ পরিস্থিতির বিষয়ে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেল নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সাদিয়া আফরিন কচি বলনে, পাহাড়ি এলাকায় এমন বন্যা নিয়ে এলাকার মানুষ চিন্তিত। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দুর্গত এলাকায় সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসকারী পরিবারগুলোকেও নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিতে বলা হয়েছে।

Exit mobile version