parbattanews

টেকনাফের চিংড়ি চাষীরা সন্ত্রাসীদের হাতে জিম্মি 

টেকনাফ প্রতিনিধি:

টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং পশ্চিম ঝিমংখালীর হেলাল ও মিজান বাহিনীর হাতে জিম্মি হয়ে পড়েছে স্থানীয় চিংড়ি চাষীরা। তাদের দাবীকৃত চাঁদা না দিলে চাষীদের উপর শুরু হয় নির্যাতন।

হোয়াইক্যং পশ্চিম ঝিমংখালীর হেলাল এবং মিজানের নেতৃত্বে স্থানীয় লোকজনের বাড়িঘর দখল, চলাচলে বাধা, ভারী অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে চিংড়ি প্রজেক্ট দখল, হামলা চালিয়ে লুটপাত, টেকনাফ-কক্সবাজার সড়কে ডাকাতি, অস্ত্রের ব্যবসাসহ মিয়ানমার থেকে ইয়াবা আনার অভিযোগ বেশ পুরানো।

সম্প্রতি ঝিমংখালীর হাফেজ আহমদ হোছন, আমান উল্লাহ আমান ও সরওয়ারের মালিকাধীন চিংড়িঘের দখল করেছেন মিজান ও হেলাল বাহিনীর লোকজন। বর্তমানে এ বাহিনীর অত্যাচারে বিশাল চিংড়ি ভান্ডারটি অরক্ষিত হয়ে পড়েছে বলে দাবি করেছেন চিংড়ি চাষিরা।

সব মিলিয়ে পুরো মৎস্য ঘের এলাকা এখন যেন সন্ত্রাসের জনপদে পরিণত হয়েছে। এ ছাড়া মৎস্য উৎপাদন মৌসুমজুড়ে রয়েছে দখল-বেদখলের ঘটনা। যে কারণে মৎস্য চাষে জড়িত বেশিরভাগ চাষি পুঁজি বিনিয়োগ করে হাড়ভাঙা পরিশ্রমের মাধ্যমে উৎপাদিত চিংড়ির লভ্যাংশ ঘরে তুলতে ব্যর্থ হচ্ছেন।

প্রাকৃতিকভাবে সৃষ্ট ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট (প্যারাবন) থাকলেও ১৯৭৮ সাল থেকে চিংড়ি চাষ শুরু হলে পর্যায়ক্রমে এসব প্যারাবন নিধন হতে হতে বর্তমানে এর অস্তিত্ব বিলীন হয়ে গেছে। বর্তমানে বন বিভাগের উপকূলীয় প্যারাবন কাগজে-কলমে থাকলেও কার্যত বনভূমি বলতে কিছুই নেই, আছে শুধু চিংড়ি ঘের।

একাধিক চিংড়ি চাষি এ প্রতিনিধিকে জানিয়েছেন, চিংড়ি ঘেরে মাসে দু’বার মাছ ধরা হয়। যাকে চাষিরা স্থানীয় ভাষায় জো বলে থাকেন। প্রতি জো’তে মিজান ও হেলাল বাহিনীকে ১০ একর ঘেরের জন্য এক হাজার টাকা, ২০ একরের জন্য দুই হাজার টাকা, ৩০ একরের জন্য তিন হাজার টাকা করে চাঁদা দিতে হয়।

চাঁদাবাজরা যাকে ‘জিজিয়াকর’ হিসেবে দাবি করে। চাঁদাবাজদের নির্ধারিত পরিমাণ চাঁদা যথাসময়ে পরিশোধ করতে ব্যর্থ হলে জো’তে পাওয়া মাছগুলো লুট হয়ে যায় চোখের সামনে। প্রতিবাদ করলেই আসে বিপদ।

এ ব্যাপারে হেলাল বলেন, তারা কোন সন্ত্রাসী বাহিনী নয়, এটি প্রতিপক্ষের ষড়যন্ত্র।

এ প্রসঙ্গে টেকনাফ মডেল থানার ওসি রনজিত কুমার বড়ুয়া বলেন, চিংড়ি ঘের সংক্রান্ত কোন অভিযোগ কেউ দেয়নি। কেউ অভিযোগ দিলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়া চিংড়ি ঘের এলাকায় যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো নয়। পুলিশ যাওয়ার আগেই অপরাধীরা নৌপথে পালিয়ে যায়। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর জন্য নৌযান বরাদ্দ নেই। ইতিমধ্যে ঘের এলাকায় ত্রাস সৃষ্টিকারীদের আটকের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

Exit mobile version