parbattanews

টেকনাফে কোরবানীর হাটে ক্রেতা-বিক্রেতার উপচে পড়া ভিড়

কোরবানির ঈদ দুয়ারে কড়া নাড়ছে। জমে উঠেছে পশুর হাট। কিন্তু দাম চড়া থাকায় বেচা-বিক্রি জমছেনা। মিয়ানমার থেকে করিডোর দিয়ে গরু না আসায় বিক্রেতারা চড়া দাম হাঁকাচ্ছেন।

ফলে ক্রেতা-বিক্রেতাদের মধ্যে দামের বনিবনা না হওয়ায় ক্রেতারা দরদাম করে ফিরে যাচ্ছেন। চাহিদা মত দাম না পাওয়ায় বেপারী ও খামারীরা গরু ছাড়ছেন না। আর বিক্রি না থাকায় হাটে অলস দাঁড়িয়ে থেকে তাদের মুখভার।

হাটে দুই-আড়াই মনের ছোট আকারের গরুর দাম হাঁকা হচ্ছে ৭০ থেকে ৯০ হাজার টাকা। মাঝারি আকারের গরুর দাম চাওয়া হচ্ছে ৯০ হাজার থেকে দেড় লাখ টাকা। যা গত বছরের তুলনায় লাখ প্রতি ২০/৩০ হাজার অতিরিক্ত মূল্য হাঁকাচ্ছেন।

রবিবার (১৮ জুলাই) দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত উপজেলার টেকনাফ, সাবরাং ও হ্নীলায় কোরবানী উপলক্ষে বসা পশুর হাট ঘুরে এমন চিত্রের দেখা মিললো। তবে দেশি গরুর দিকেই নজর বেশি ক্রেতাদের। তাদের আগ্রহের কেন্দ্র বিন্দুতে রয়েছে দেশি জাতের মাঝারি গরু।

পশুর হাটেই আলাপ হয় গরু নিয়ে আসা মো. ইসমাইলের (৭০) সঙ্গে। তিনি তার মাঝারি সাইজের গরুর দাম হাঁকিয়েছেন ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা। কিন্তু ক্রেতারা দাম করছেন ৮০/৯০ হাজার টাকা। তবে কম দামে গরু বিক্রি করতে রাজি নন তিনি।

জানতে চাইলে পার্বত্যনিউজের প্রতিবেদককে জানান, গরুর লালন-পালন খরচ আগের চেয়ে অনেক বেড়েছে। নির্ধারিত দাম না পেলে তিনি শেষ বাজার পর্যন্ত অপেক্ষা করবেন।

জানা যায়, উপজেলার বাহির থেকে ও বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ক্রেতারা এ হাটে পশু কিনতে ভিড় করছেন। অপেক্ষাকৃত কম মূল্যে গরু মিলবে এমন ভরসা থেকেই মূলত ওইসব ক্রেতারা এ হাটে ছুটছেন। কিন্তু সাধ আর সাধ্যের সমন্বয় না ঘটায় উপজেলার এ গবাদি পশুর হাট থেকে বেজার মুখে ফিরে যাচ্ছেন তারাও।

উপজেলার সাবরাং ইউনিয়নের চান্ডলী পাড়া গ্রামের জহির আহমদ নিজের ছোট আকারের ষাঁড়ের দাম প্রত্যাশা করছেন ৯০-৯৫ হাজার টাকা। কিন্তু ক্রেতারা ৭০ থেকে ৮৫ হাজার টাকার দরদামের বৃত্তে ঘুরপাক খাচ্ছেন। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত চাহিদামতো দাম না পেয়ে গরু নিয়ে বাড়ি ফিরে যান।

তিনি বলেন, হাটে গরু বা ক্রেতা কোনোটিরই অভাব নেই। কিন্তু প্রত্যাশা অনুযায়ী দাম না পাওয়ায় বেশিরভাগ গৃহস্থই গরু বিক্রি করছেন না। দু’একদিনের মধ্যেই হাটের এ চিত্রের পরিবর্তন হবে বলে আশা তাদের।

হাটে গরু কিনতে আসা ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, অন্যান্যবারের চেয়ে এবার গরুর বাজার চড়া। উপজেলার প্রধান গবাদি পশুরহাটে পাশাপাশি বিভিন্ন জায়গায় মৌসুমি গবাদিপশুর হাটের ও একই অবস্থা। তবে অনেকের বাসা-বাড়িতে কোরবানির পশু রাখার মতো জায়গা না থাকায় লালন-পালনের ঝক্কি-ঝামেলা এড়াতেই এখনি কোরবানির পশু না কিনে দরদাম যাচাই-বাছাই করছেন।

হ্নীলা সিকদার পাড়া এলাকা থেকে আসা হাফিজুর রহমান নামের এক ক্রেতার সঙ্গে কথা হলে জানান, গতবারের চেয়ে এবার দাম বাড়তি। ফলে অনেকেই হাটে আসছেন আর দাম যাচাই করে বাড়ি ফিরছেন। নিজেও একইপন্থা অবলম্বন করছেন বলেও জানালেন।

দেখা গেছে, এ হাটে কোন ধরনের বিদেশি গরু নেই। সবই খামারী ও গৃহপালিত মোটাতাজা করা গরু। ক্রেতাদের কাছেও মাঝারি আকারের গরুর চাহিদা রয়েছে। বড় আকারের গরুর দিকে তাদের তেমন আগ্রহ নেই। গরু মোটাতাজা সম্পর্কে ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়েও সতর্ক ও সচেতন রয়েছেন।

সদর ইউনিয়নের বটতলী বাজারের গরু বিক্রেতা অলি আহমদ (৫০) জানান, ক্ষতিকারক ওষুধ খাওয়ালে গরু টিকে না। তাই খড়, ভূষি খাওয়ানো হয়েছে। কোনোরকম ওষুধ খাওয়ালে ধরা খেতে হয়। তাই এবার কোরবানির জন্য ফিট গরুর দিকেই মনোযোগ দিয়েছেন গৃহস্থ ও বেপারীরা।

Exit mobile version