টেকনাফে জেলের জালে ২০০ মণ উলুয়া মাছের ঝাঁক, ২৪ লাখে বিক্রি

fec-image

কক্সবাজারের টেকনাফের চারটি ফিশিং ট্রলারের জেলেরা বঙ্গোপসাগরে জাল ফেলে প্রায় ২০২ মণ উলুয়া (নাগু) মাছ ধরছেন। ৫ থেকে ১৩ কেজি পর্যন্ত ওজনের ১ হাজারের বেশি এসব মাছ বিক্রি হয়েছে প্রায় ২৪ লাখ টাকায়। হঠাৎ মাছের ঝাঁক জালে আটকা পড়ায় স্থানীয় জেলেদের মুখে হাসি ফুটেছে। রাত ৯টার দিকে একে একে চারটি ট্রলার টেকনাফ পৌরসভার কায়ুকখালীয়া ফিশারিজ ঘাটে পৌঁছালে মাছগুলো একনজর দেখার জন্য স্থানীয় লোকজন ভিড় জমান। পরে ট্রলার থেকে ঝুড়িভর্তি করে মাছগুলো ফরিদ আলমের ফিশারিজ ঘাটে বরফ দিয়ে ঢেকে রাখা হয়।

বুধবার (১ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় সেন্টমার্টিনদ্বীপের ছেঁড়াদিয়ার পূর্ব-দক্ষিণের কাছাকাছি বাংলাদেশ জলসীমায় ‘মৌলভীর শীল’ নামের এলাকায় মাছগুলো ধরা পড়ে। টেকনাফ পৌরসভার কায়ুকখালী পাড়া ফিশারিজ ঘাটে আনার পর প্রতি কেজি ৩০০ টাকা দরে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা মাছগুলো কিনে নেন। একটি ট্রলারের মালিক সালেহ আহমদ ও টেকনাফ কায়ুকখালী পাড়া ফিশিং ট্রলার মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আবুল কালাম এসব তথ্য জানিয়েছেন।

মৎস্য বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, টেকনাফের স্থানীয় চারটি ট্রলারে ধরা পড়া এ মাছগুলো জায়ান্ট কিংফিশ বা উলুয়া মাছ। তবে চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষায় এটি ‘নাগুমাছ’ নামে পরিচিত। মাছটির বৈজ্ঞানিক নাম ‘Caranx ignobilis’। ইংরেজি নাম ‘Giant trevally’।

ফিশিং ট্রলার এমভি সালমানের মাঝি আছাবুল ইসলাম ও এমভি আজিজুলের মাঝি নুরুল হাসান জানান, সেন্টমার্টিনদ্বীপের ছেঁড়াদিয়ার পূর্ব-দক্ষিণের কাছাকাছি বঙ্গোপসাগরের বাংলাদেশ জলসীমার মৌলভীর শীল এলাকায় গতকাল বেলা ১১টার দিকে চারটি ট্রলারের জেলেরা জাল ফেলতে শুরু করেন। কয়েক ঘণ্টা অপেক্ষার পর বিকেলের দিকে সাগরের পানি নড়াচড়া করতে দেখে জেলেরা বুঝতে পারেন জালে বড় যেকোনো ধরনের মাছের ঝাঁক আটকা পড়েছে। পরে আশপাশের জেলেদের খবর দিয়ে জাল টানা শুরু করলে নজরে আসে নাগুমাছের ঝাঁক।

মাছ ব্যবসায়ী ফরি আলম, মোহাম্মদ সব্বির ও রশিদুল্লাহ জানান, ঢাকা-চট্টগ্রামের হাটবাজারগুলোতে এ মাছের কদর রয়েছে। তারা কয়েকজন মিলে প্রায় ১৫০ মণ মাছ কিনেছেন। এসব মাছ তাঁরা ঢাকা-চট্টগ্রামে সরবরাহের পাশাপাশি স্থানীয় বাজারে আকারভেদে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করবেন। এ সময়ে সেন্টমার্টিন দ্বীপে বেড়াতে আসা পর্যটকদের খাবারের তালিকায় একটি পছন্দের মাছ এটি। এ মাছের বারবিকিউ পর্যটকের পছন্দের।

টেকনাফ স্থলবন্দরের ব্যবসায়ী এম কায়সার জুয়েল জানান, মাছগুলো দেখে লোভ সামলাতে না পেরে ৪ হাজার ৫০০ টাকায় ১৩ কেজি ওজনের একটি বড় মাছ কিনেছেন। চট্টগ্রামে বসবাসরত পরিবারের জন্য মাছটি পাঠাবেন।

টেকনাফ উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মো. দেলোয়ার হোসেন জানান, বঙ্গোপসাগরে জেলেদের জালে মাছ ধরা পড়ার বিষয়টি অবশ্যই সুখবর। সরকারি বিভিন্ন ধরনের নিষেধাজ্ঞা মান্য করায় বর্তমানে জেলেদের জালে ছোট-বড় প্রচুর পরিমাণে এ মাছ ধরা পড়ছে। মাছগুলো চট্টগ্রাম-ঢাকায় নিয়ে বিক্রয় করতে পারলে আরও ভালো দাম পাওয়া যেত।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন