টেকনাফে বেপরোয়া রোহিঙ্গা চালক

fec-image

কক্সবাজার-টেকনাফের প্রধান সড়কে অবৈধ টমটম ও অটোরিকশার বেপরোয়া গতি ও যত্রতত্র চলাচলের কারণে সাধারণ মানুষ অতিষ্ট হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে প্রয়োজনের তাগিদে কোথাও যেতে এক ঘন্টার স্থলে দুই থেকে আড়াই ঘন্টা পর্যন্ত সময় অতিবাহিত হচ্ছে। এসব টমটম ও অটোরিকশার প্রায় চালক মিয়ানমার হতে বাস্তচ্যুত হয়ে আসা রোহিঙ্গা নাগরিক। এসব টমটম গাড়ি ও রোহিঙ্গা চালকদের নিয়ন্ত্রণের দাবি জানিয়েছে হ্নীলায় বিভিন্ন সড়কে চলাচলরত যানবাহন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ও যাত্রীরা।

টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের দমদমিয়া, জাদিমোরা, লেদা সড়কের টমটম সমিতির সভাপতি কবির আহমদ ও সাধারণ সম্পাদক কামাল হোছন লিখিত আবেদনে জানান, ২০১৭ সালে রোহিঙ্গা নাগরিকেরা ২৭, ২৬, ২৫ ও ২৪ নং রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আশ্রয় নেয়। তারা সরকারি-বেসরকারি সংস্থা প্রদত্ত যাবতীয় সুযোগ-সুবিধাভোগের পরও নামে-বেনামে এবং কাগজপত্র জালিয়াতি করে সিএনজি, মাহিন্দ্রা, টমটম ও অটোরিক্সার মালিক বনে যায়। ক্যাম্প ছেড়ে টেকনাফের প্রত্যন্ত এলাকায় অবাধে চলাচলের পাশাপাশি মাদক ও অবৈধ অস্ত্রাদি বহন করছে। যা বিভিন্ন আইন প্রয়োগকারী সংস্থার অভিযানে মাদক ইয়াবা ও আগ্নেয়াস্ত্র আটক করতে সক্ষম হয়েছে।

এসব রোহিঙ্গাদের জন্য সড়কে স্থানীয় যানবাহন চালকেরা হয়রানির পাশাপাশি নিরাপত্তাহীনতায়  ভুগছেন। সড়কে বিনা বাঁধায় যানবাহন চালালেও ক্যাম্পে স্থানীয় চালকেরা প্রবেশ করতে গেলে নির্দিষ্ট অংকের টোকেন নিয়ে ঢুকতে হয়। যা স্থানীয় চালকদের নিয়ে কতিপয় সুবিধাভোগীদের বাণিজ্যের সামিল। তাই এসব কাগজপত্রবিহীন রোহিঙ্গা চালকদের ক্যাম্পের ভেতরে সীমাবদ্ধ রাখার আহবান জানিয়ে সংশ্লিষ্ট ক্যাম্প ইনচার্জ, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, টেকনাফ মডেল থানার অফিসার্স ইনচার্জ, স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানসহ দায়িত্বশীল সংস্থাসমুহের নিকট লিখিত আবেদন জানিয়েছেন।

এই দাবি বাস্তবায়ন না হলে হ্নীলা ইউনিয়নের বিভিন্ন সড়কে রোহিঙ্গা চালকদের প্রতিহতের ঘোষণা দিয়েছেন হ্নীলা ইউনিয়ন টমটম চালক সমবায় সমিতির সভাপতি আবুল হোছন আবু ও সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ সেলিম, হ্নীলা ষ্টেশন-মৌলভী বাজার রোডের টমটম চালক সমিতির সভাপতি দেলোয়ার হোছন ওরফে সোনা মিয়া, সাধারণ সম্পাদক সরওয়ার আলম,দমদমিয়া-লেদা রোডের সভাপতি কবির আহমদ ও সাধারণ সম্পাদক কামাল হোছন।

এদিকে কতিপয় কিছু এনজিও সংস্থা প্রধান সড়কের পাশে রোহিঙ্গাদের ত্রাণ সামগ্রী ও বাঁশ বিতরণের ফলে প্রায়ই সময় যানজট লেগেই থাকে। এতে আরো অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে যাত্রীরা। এসব ত্রান সামগ্রী প্রধান সড়কের পাশে না দিয়ে ক্যাম্পের অভ্যন্তরে বিতরণ করার দাবি উঠেছে।

এলাকার সচেতনমহল জানান, করোনাকালীন সময়ে এলাকার অনেক জ্ঞানী-গুণী লোক অভাবের তাড়নায় সড়কে টমটম ও অটোরিক্সা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করছে। তার উপরে সরকারি-বেসরকারি সুবিধাভোগী রোহিঙ্গাদের যানবাহন শ্রমবাজার দখলমুক্ত করতে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার আন্তরিক সহায়তা কামনা করেছেন।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: টেকনাফ, রোহিঙ্গা
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন