টেকনাফে ভূয়া ওয়ারিশ সাজিয়ে মেরিন ড্রাইভের জমি অধিগ্রহণের টাকা উত্তোলনের চেষ্টা

 

টেকনাফ প্রতিনিধি:

টেকনাফ উপজেলার বাহারছড়া ইউনিয়নের নোয়াখালীপাড়ার ভূয়া ওয়ারিশ সাজিয়ে মেরিন ড্রাইভের জমি অধিগ্রহণের টাকা উত্তোলনের চেষ্টা করছে একদল ভূমিদস্যু। এতে জড়িত রয়েছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা।

তথ্যনুসন্ধানে জানা গেছে, টেকনাফ উপজেলার বাহারছড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাওলানা আজিজ উদ্দীন ও ৯নং ওয়ার্ডের মেম্বার মো. ইলিয়াছ একাধিক ভূয়া ওয়ারিশ সনদ প্রদান করেছে। তাদের এ সিন্ডিকেটের মধ্যে রয়েছেন, মাও: রফিক উদ্দীন, মাও. আজিজ উদ্দীন, মো. ইলিয়াছ ও আবদুর শুক্কুর।

বাহারছড়া ইউনিয়নের ২০১৭ সালের ১৫৯৮ ও ১৫৯৯ নং স্মারকমূলে ইস্যুকৃত আবদুল কাদের প্রকাশ পেঠান আলীকে একমাত্র ওয়ারিশ সাজিয়ে এবং চেমন খাতুন প্রকাশ ছৈয়দ বানুর ভূয়া নাম ব্যবহার করে ওয়ারিশ সনদ প্রদান করেন বাহারছড়া ইউপি চেয়ারম্যান মৌলভী আবদুল আজিজ ও ৯নং ওয়ার্ডের ইউপি মেম্বার মো. ইলিয়াছ এবং ১৩৮৩ নং স্মারক মূলে চেমন খাতুনের কোন প্রকার প্রকাশ নাম না থাকা সত্বেও চেমন খাতুন প্রকাশ সৈয়দ বানু নামে ভূয়া প্রত্যায়ন দেন।

একইভাবে আবদুল কাদের নামে যে ব্যক্তিকে একমাত্র ওয়ারিশ সনদ প্রদান করেছে তাদের পরিবারের মোট ৮জন ওয়ারিশ রয়েছে। এরা হলেন আবদুল কাদের, জহির আহমদ, নুর আহমদ,ছুরা খাতুন, জুহুরা খাতুন, গুলচেহের, খতিজা খাতুন, তার স্ত্রী ছৈয়দ বানু এবং এরা সবাই ৭১৩ নং বিএস খতিয়ানের মকতুল হোসেন পিতা ছৈয়দ আলীর ওয়াারিশ। যা ২৬/১১/২০১২ তারিখে ২৯৬৬নং কবলামূলে অধ্যাপক নুরুল হককে জমি রেজিস্ট্রি প্রদান করেন। তাও আবদুল কাদের তার অন্য ওয়ারিশ গোপন করে রেজিস্টি প্রদান করেন। আবদুল কাদেরের ভোটার নং-১৬৮.২২১৯৯০৫৮৩৩৫৬ পিতা মকতুল হোসেন মাতা সৈয়দ বানু, নোয়াখালীপাড়া বড়ডেইল, টেকনাফ। রেখে যাওয়া ৮জন ওয়ারিশের মধ্যে ৭জনকে বাদ দিয়ে একমাত্র আবদুল কাদেরকে ওয়ারিশ রেখে যান বলে ওয়ারিশ সনদ দেন।

এছাড়া চেমন খাতুন স্বামী  মকতুল হোসেন মাতা গোলবানুর ওয়ারিশ হলেন ৬জন। এরা হলেন, আবুল কাশেম, ভেলুয়া খাতুন, মলকাবানু, জুলেখা বেগম, গুলজার বেগম, আবুল মনজুর এবং মকতুল হোসেন পিতা ইছা আলী প্রকৃত ওয়ারশি হলেন ৬জন। এরা হলেন, আবুল কাশেম, ভেলুয়া খাতুন, মলকাবানু, জুলেখা বেগম, গুলজার বেগম, চেমন খাতুন।

বাহারছড়া ইউনিয়নের বড়ডেইল মৌজার  বিএস ৫৪৬ নং খতিয়ানের ৬২১৫ দাগের আন্দর .৯৯২৮ একর  (রোয়াদাদ নাম্বার -৪৭৬)নালিশী বিএস ৩২৪ নং খতিয়াানের বিএস ৬২২৯ দাগের আন্দর.২৫ একর মোট.৫৫৪২ একর (রোয়াদাদ নাম্বার -৪৮৫ )নালিশী বিএস ৫৪৬নং খতিয়ানের ৬২৩০ দাগের  আন্দর .১০৩৭ একর (রোয়াদাদ নাম্বার -৪৪৫)  সর্বমোট ১.৬৫০৭ একর জমির টাকা উত্তোলনের জন্য আবদুল কাদেরকে ভূয়া ওয়ারিশ সাজিয়ে কক্সবাজার বিজ্ঞ জজ (২য়) আদালতে ৩৭৯/২০১৭ একটি মামলাও দায়ের করেন।

এ প্রসঙ্গে বাহারছড়া ইউপি চেয়ারম্যান মাও. আজিজ উদ্দীন ভূয়া ওয়ারিশ প্রদান প্রসঙ্গে বলেন, ইউপি মেম্বার মো. ইলিয়াছের স্বাক্ষরে ওয়ারিশ প্রদান করা হয়েছে। পরবর্তীতে ভূল প্রমাণিত হওয়ায় রেজুলেশনের মাধ্যমে তা বাতিল করা হয়েছে এবং চলমান মামলায় আদালতে ওয়ারিশ সনদ প্রসঙ্গে রেজুলেশন কপি ও পত্র প্রেরণ করা হবে।

ভূয়া সিন্ডিকেটের তৎপরতা প্রসঙ্গে অভিযুক্ত টেকনাফ উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মাও. রফিক উদ্দীন,  ইউপি চেয়ারম্যান মাও. আজিজ উদ্দীন, ইউপি মেম্বার মো. ইলিয়াছ ও ইনানীর মৌলভী আবদুর শুক্কুর তা অস্বীকার করেন।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন