parbattanews

টেকনাফে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে যাচাই-বাছাই করছে মিয়ানমার প্রতিনিধি দল

প্রত্যাবাসন ইস্যুতে ফের কক্সবাজারের টেকনাফে এসেছে মিয়ানমার প্রতিনিধি দল। তবে এবার রোহিঙ্গাদের সঙ্গে আলোচনার জন্য নয়; মূলত প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ার আওতায় চলছে রোহিঙ্গাদের যাচাই-বাছাই কার্যক্রম।

বুধবার (১ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মো. সামছু-দ্দৌজা।

তিনি বলেন, মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) মিয়ানমারের ৩৬ সদস্যের প্রতিনিধি দল টেকনাফ আসে। প্রতিনিধি দলটি দু’ভাগে বিভক্ত হয়। একটি দল রোহিঙ্গাদের ৮০টি পরিবারের যাচাই-বাছাই কার্যক্রম করে এবং আরেকটি দল ১০০টি পরিবার প্রধানের সঙ্গে প্রত্যাবাসন বিষয়ে আলোচনা করে। পরে সন্ধ্যায় তারা কোন ধরণের সিদ্ধান্ত ছাড়া মিয়ানমারের ফিরে যায়। বুধবার সকাল সাড়ে ৮টায় নদীপথ পাড়ি দিয়ে মিয়ানমারের ২৮ সদস্যের প্রতিনিধি দল টেকনাফ জেটিঘাটে পৌঁছায়। এসময় তাদেরকে স্বাগত জানানো হয়। এরপর তাদেরকে সরকারি রেস্ট হাউসে আনা হয়। সেখানে রোহিঙ্গাদের ৬০টি পরিবারের যাচাই-বাছাই কার্যক্রম চলছে। যা বিকেল নাগাদ চলবে। তবে আজকে যারা এসেছে মূলত তারা রোহিঙ্গাদের যাচাই-বাছাই করতে এসেছে।”

মিয়ানমার প্রতিনিধি দল আগমনকে কেন্দ্র করে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে টেকনাফ রেস্ট হাউস এলাকায়। এপিবিএন, পুলিশের পাশাপাশি রয়েছে বিজিবিও।

এদিকে মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) তৃতীয় দফায় টেকনাফ আসে মিয়ানমারের ৩৪ সদস্যের প্রতিনিধি দল। ওই সময় মিয়ানমার প্রতিনিধি দলটির নেতৃত্ব দেন রাখাইন প্রাদেশিক সরকারের ইমিগ্রেশন ডিরেক্টর স নাইং। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে নেতৃত্ব দেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মিয়ানমার বিষয়ক সেলের মহাপরিচালক মিয়া মো. মাইনুল কবির। এ সময় শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মো. মিজানুর রহমান, অতিরিক্ত আরআরআরসি মো. সামছু-দ্দৌজাসহ এপিবিএন পুলিশের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

প্রত্যাবাসন চুক্তির পর, ২০১৮ সালের ১৫ নভেম্বর ও ২০১৯ সালের ২৩ আগস্ট দিনক্ষণ ঠিক হলেও তা ভেস্তে যায় মিয়ানমারের ছলচাতুরিতে। এরপর চলতি বছর চীনের মধ্যস্থতায় নতুন করে আলোচনায় আসে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন। ৩ দফায় দেশটির প্রতিনিধি দল আসলেও প্রশ্নের মুখেই রয়েছে মিয়ানমারের অবস্থান।

এর আগে চলতি বছর দু’বার মিয়ানমার প্রতিনিধি দল আসে টেকনাফে। গত ১৫ মার্চ প্রথম দফায় এবং গত ২৫ মে দ্বিতীয় দফায় রোহিঙ্গাদের সাথে মতবিনিময় করতে মিয়ানমার প্রতিনিধি এসেছিলেন। এরই মধ্যে গত ৫ মে বাংলাদেশের ৭ সদস্য এবং রোহিঙ্গাদের ২০ সদস্যের প্রতিনিধি দলও মিয়ানমারের মংডুর পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করতে গিয়েছিলেন।

২০১৮ সালে কয়েক দফায় ৮ লাখের বেশি রোহিঙ্গার তালিকা মিয়ানমারকে হস্তান্তর করে বাংলাদেশ। তারমধ্যে মাত্র ১ লাখ ১ হাজার রোহিঙ্গার তালিকা ভেরিফাই করে মিয়ানমার সরকার। কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের ৩৩টি ক্যাম্পে ১২ লাখের বেশি রোহিঙ্গা আশ্রয়রত রয়েছেন। কিন্তু গত ছয় বছরে একজন রোহিঙ্গাকেও ফেরত নেয়নি মিয়ানমার।

Exit mobile version