parbattanews

টেকনাফে সদ্যবিবাহিত সৌদি প্রবাসীর মৃত্যুর খবরে মিশ্র প্রতিক্রিয়া: স্ত্রী গ্রেফতার

unnamed copy

টেকনাফ প্রতিনিধি:

টেকনাফ উপজেলার বাহারছড়ার ইউনিয়নের বড়ডেইল এলাকায় সদ্যবিবাহিত সৌদি প্রবাসী মাওলানা আনোয়ার হোসাইনের মৃত্যুর খবরে এলাকায় মিশ্রপ্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।

এ ঘটনায় নিহতের বড়ভাই মোহাম্মদ হোসাইন বাদী হয়ে কক্সবাজার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত (টেকনাফ) বরাবর সিআর মামলা নং- ৩৩/২০১৭ইং রুজু করেন। এ মামলায় ভিকটিমের স্ত্রী সুফিয়া আফরিন লু’ফা প্রধান করে ২/৩ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামী করা হয়েছে।

জানা যায়, ২০ জানুয়ারি সকাল ১০টার দিকে বাদীর মা, স্ত্রী  ও প্রথম কন্যাসহ পাশ্ববর্তী এলাকায় পারিবারিক দাওয়াতে বেড়াতে যায়। বিকাল ৪.০৭ মিনিটের দিকে বাদীর ২য় কন্যা মোকাররমা আক্তার হীরামনি (১৪) তার পিতাকে মোবাইল ফোনে জানায়, তার মেঝ আব্বু খাটের নিচের পাশে পড়ে আছে এবং শ্বাস-প্রশ্বাস নেই। তাৎক্ষনিক তারা বাড়ির রুমে ঢুকে দেখতে পান, ভিকটিমের কপাল, কানের নিচে, পিছনের ঘাড়ে আঘাতের চিহ্ন, কপাল ও কান দিয়ে রক্ত বাহির হচ্ছে।

ঘটনার বিষয়ে আসামীর নিকট জিজ্ঞাসা করিলে ভিকটিমের স্ত্রী জানায়, দরজা জানালা বন্ধ করে দুইজনই ঘুমিয়ে ছিলেন। ঘুমানোর এক পর্যায়ে ভিকটিম খাঁট থেকে পড়ে অজ্ঞান হয়ে পড়েছে। পরে তাকে উদ্ধার করে দ্রুত টেকনাফ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স’র কর্তব্যরত মেডিকেল অফিসার ভিকটিম মাওলানা আনোয়ার হোছাইনকে মৃত ঘোষনা করেন। ভিকটিমের স্ত্রীর সরল কথা বিশ্বাস করে দাফন সম্পন্ন করেন।

পরে ঢাকায় অবস্থান করা ভিকটিমের ছোটভাই ডা.শাহাদাত হোছাইন স্থানীয় লোকজনের মুখে ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া শুনে বাদী ও ভিকটিমের রুমে বিভিন্নভাবে তল্লাশী করে খাটের উপরে বালিশ ও তোষকে ভিকটিমের রক্তভেজা কাপড় ও খাটের মাথার অংশে তোষকের নিচে ৭-৮ ইঞ্চি ধারালো ছোরা, ১০-১২ ইঞ্চির একটি রক্তমাখা লোহার হাতল দেখতে পান।

উল্লেখ, বাদীর ছোটভাই ভিকটিম মাওলানা আনোয়ার হোসাইন (৩৫) দীর্ঘ ১৪ বছর যাবত সৌদি আরব অবস্থান করে একটি সৌদি মসজিদে ইমামতি করেছিলেন। দেশে এসে ৮ ডিসেম্বর ২০১৬ পারিবারিকভাবে তাদের বিবাহ সম্পন্ন হয়।

এবিষয়ে ভিকটিমের পরিবার দাবী করেছেন, সদ্য বিবাহিত স্ত্রীর সাথে পর পুরুষের সহিত কথা হত এবং অনেকবার বারণ করা হলেও প্রায় সময় ঝগড়া বিবাদে লিপ্ত থাকত। এব্যাপারে বাদী আসামীর পিতাকে মৌখিকভাবে ও মোবাইল ফোনে জানিয়ে সমাধানের চেষ্টা করে। পিতা মেয়েকে চাপ দিলে সে মানসিকভাবে নির্যাতন শুরু করলে ভিকটিম লোক লজ্জার ভয়ে সদ্য বিবাহিত হওয়ায় লোকজনের নিকট আড়াল করার চেষ্টা করেছিল।

এ প্রসঙ্গে টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জানান, প্রাথমিক তদন্তে স্ত্রী জড়িত থাকার আলামত পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় স্ত্রীকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং কক্সবাজার আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।

Exit mobile version