কক্সবাজারের টেকনাফে পৃথক অভিযান চালিয়ে ১ লাখ ১০ হাজার পিস ইয়াবা ট্যাবলেট, ৯৭ বোতল মদ এবং ৩৬০ ক্যান বিয়ার উদ্ধার করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
টেকনাফ ২বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. মহিউদ্দীন আহমেদ (বিজিবিএমএস) গণমাধ্যমকে এসব নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, রবিবার (১৬ এপ্রিল) ভোরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানা যায়, টেকনাফ ২বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধীন উনচিপ্রাং বিওপি’র দায়িত্বপূর্ণ বিআরএম-১৭ থেকে ৪ কিলোমিটার পশ্চিম দিকে (সীমান্তের শূন্য লাইন হতে আনুমানিক দেড় কিলোমিটার বাংলাদেশের অভ্যন্তরে উনচিপ্রাং গ্রামের সাইফুলের ঘের দিয়ে মাদকের একটি চালান মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে আসতে পারে। এমন তথ্যের ভিত্তিতে উনচিপ্রাং বিওপি’র একটি চোরাচালান প্রতিরোধ টহলদল বর্ণিত স্থানে গমন করে আইলের পিছনে আঁড় নিয়ে কৌশলগত অবস্থান গ্রহণ করে। টহলদল কিছুক্ষণ পর দুই ব্যক্তিকে একটি প্লাস্টিকের ড্রাম হাতে নিয়ে আইলের উপর দিয়ে বর্ণিত স্থানের দিকে আসতে দেখে। তাদের চলাচলের গতিবিধি সন্দেহজনক পরিলক্ষিত হওয়ায় পূর্ব থেকেই কৌশলগত অবস্থানে থাকা বিজিবি টহলদল বর্ণিত ব্যক্তিদেরকে চ্যালেঞ্জ করলে তারা দ্রুত দৌড় দেওয়ার সময় তাদের হাতে থাকা প্লাস্টিকের ড্রামটি মাছের ঘেরে ফেলে রাতের অন্ধকারের সুযোগে জঙ্গলের ভিতরে পালিয়ে যায়। টহলদল উল্লেখিত স্থানে পৌঁছে তল্লাশি অভিযান পরিচালনা করে ফেলে যাওয়া ড্রামটি উদ্ধার করতে সক্ষম হয়। উদ্ধারকৃত ড্রামের ভিতর থেকে ১ লাখ ১০ হাজার পিস ইয়াবা ট্যাবলেট জব্দ করা হয়। পরবর্তীতে টহলদল কর্তৃক উক্ত এলাকায় সকাল পর্যন্ত অভিযান পরিচালনা করা হলেও কোন চোরাকারবারি কিংবা তাদের সহযোগীকে আটক করা সম্ভব হয়নি। চোরাকারবারিদেরকে সনাক্ত করার জন্য ব্যাটালিয়নের গোয়েন্দা কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
অপরদিকে, গোপন তথ্যের ভিত্তিতে জানা যায় যে, অত্র ব্যাটালিয়নের অধীন সাবরাং বিওপি’র দায়িত্বপূর্ণ বিআরএম-৫ থেকে আনুমানিক দেড় কিলোমিটার দক্ষিণ দিকে জিন্নাহখাল নামক এলাকা দিয়ে মাদকদ্রব্যের একটি চালান মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে পাচার হতে পারে। এমন সংবাদের ভিত্তিতে সাবরাং বিওপি থেকে একটি চোরাচালান প্রতিরোধ টহলদল বর্ণিত এলাকায় গমন করে কৌশলগত অবস্থান গ্রহণ করে। পরবর্তীতে টহলদল সীমান্তের শূন্য লাইন থেকে আনুমানিক ৫০০ গজ বাংলাদেশের অভ্যন্তরে জিন্নাহখাল নামক এলাকা দিয়ে ৪/৫ জন ব্যক্তিকে নাফনদী পার হয়ে বস্তা কাঁধে নিয়ে বেড়ীবাঁধ অতিক্রম করার সময় চ্যালেঞ্জ করে। উক্ত ব্যক্তিরা দূর থেকে বিজিবি টহলদলের উপস্থিতি অনুধাবন করা মাত্রই তাদের কাঁধে থাকা বস্তাগুলো ফেলে রাতের অন্ধকারের সুযোগে দ্রুত দৌঁড়ে পার্শ্ববর্তী গ্রামের দিকে পালিয়ে যায়। এরপর টহলদল উক্ত স্থানে পৌঁছে তল্লাশি অভিযান পরিচালনা করে ৬টি প্লাস্টিকের বস্তা উদ্ধার করে। উদ্ধারকৃত বস্তার ভিতর থেকে ৯৭ বোতল বার্মিজ মদ এবং ৩৬০ ক্যান আন্দামান গোল্ড বিয়ার জব্দ করতে সক্ষম হয়। উক্ত স্থানে অন্য কোন অসামরিক ব্যক্তিকে পাওয়া যায়নি বিধায় চোরাকারবারিদের সনাক্ত করা সম্ভব হয়নি।
তিনি আরো জানান, উদ্ধার মালিকবিহীন ইয়াবা, মদ ও বিয়ারগুলো বর্তমানে ব্যাটালিয়ন সদরের স্টোরে জমা রাখা হয়েছে এবং প্রয়োজনীয় আইনি কার্যক্রম গ্রহণ করে পরবর্তীতে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধি, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও মিডিয়া কর্মীদের উপস্থিতিতে ধ্বংস করা হবে
