টেকনাফ থেকে চট্টগ্রাম বন্দর ও মিয়ানমারের মংডু থেকে সিটউই পর্যন্ত জাহাজ চলাচল চালু করতে এমওইউ প্রেরণ
মুহাম্মদ ছিদ্দিকুর রহমান, টেকনাফ:
২০১১ সালের ডিসেম্বরে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মিয়ানমার সফরে যোগাযোগ ও বাণিজ্য সম্প্রসারণে বেশকিছু চুক্তি হয়। ওই সব চুক্তি অনুযায়ী দুই দেশের মধ্যে সরাসরি বিমান ও উপকূলীয় যোগাযোগ ব্যবস্থা শুরু হওয়ার কথা রয়েছে।
বর্তমানে বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের থাইল্যান্ড ও সিঙ্গাপুর ঘুরে মিয়ানমারে যেতে হয়। এটি বিবেচনায় নিয়ে চট্টগ্রাম থেকে ইয়াংগুন পর্যন্ত আকাশপথে যোগাযোগের বিষয়টি গুরুত্ব পায়। এছাড়া মিয়ানমারের মংডু থেকে সিটউই ও বাংলাদেশ অংশে টেকনাফ থেকে চট্টগ্রাম বন্দর পর্যন্ত জাহাজ চলাচল চালু করতে একটি এমওইউ পাঠানো হয়েছে এবং আগামী ১২ জুন বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের আসন্ন সপ্তম বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
এতে রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানসহ দ্বিপক্ষীয় সব ইস্যুতে সম্পর্কোন্নয়নে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে জোর দেয়া হবে। বৈঠকে দুই দেশের অমীমাংসিত ও দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের সব ইস্যু নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশ নিকটতম প্রতিবেশী হিসেবে মিয়ানমারের সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নের বিষয়টিতে বেশি জোর দিচ্ছে।
মিয়ানমারের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট পরিবর্তনের কারণে বিশ্বের অনেক দেশ এখন সেখানে বাণিজ্য-বিনিয়োগসহ দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কোন্নয়নের সুযোগগুলো খতিয়ে দেখছে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ অন্যতম প্রতিবেশী হিসেবে এখনো সম্পর্কোন্নয়নে তেমন কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। এ প্রেক্ষাপটে দেশটির সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নে এখনই কিছু করতে চায় সরকার। রোহিঙ্গা ইস্যুতে দীর্ঘদিন ধরে দুই দেশের মধ্যে কিছুটা দূরত্ব রয়েছে। তাই এ ইস্যুটিকে জোর দিচ্ছে বাংলাদেশ।
দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কোন্নয়নে ইস্যুর পাশাপাশি অন্য ইস্যুতে ও গুরুত্ব দেয়া হবে। এরই মধ্যে জাপানসহ বিশ্বের প্রধান বিনিয়োগকারী রাষ্ট্রগুলোর কাছে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে মিয়ানমার। ফলে প্রতিবেশী দেশ হওয়ায় এ সুযোগ কাজে লাগাতে চায় বাংলাদেশ। পাশাপাশি মিয়ানমারের ধর্মীয় দাঙ্গা ও সহিংসতা বন্ধ করার জন্য নিরলস ভূমিকা পালন করতে চায় বাংলাদেশ। এর মূল কারণ হলো, মিয়ানমারে দাঙ্গা হলে তার প্রভাব প্রতিবেশী বাংলাদেশেও পড়ে।
জানা গেছে, রোহিঙ্গা ইস্যু সমাধান, সীমান্তপথে মাদকসহ সব ধরনের চোরাচালান বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা, দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য বৃদ্ধি, আঞ্চলিক সহযোগিতা, আঞ্চলিক যোগাযোগ ও বাণিজ্য সম্প্রসারণ ছাড়াও দুই দেশের মধ্যে সরাসরি ফ্লাইট চালু এবং নৌ-প্রটোকল নিয়ে আলোচনা হবে। এছাড়া বৈঠকে গ্যাস ও বিদ্যুৎ খাতে উভয় দেশের সহযোগিতার বিষয়টি গুরুত্ব দেয়া হবে বলে জানা গেছে।