টেকনাফ বাহারছড়া ইউনিয়নের নোয়াখালী পাড়ার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অনিয়ম ও অর্থ আত্মসাতে তদন্ত টিম

টেকনাফ (কক্সবাজার) প্রতিনিধি:

অর্থ আত্মসাতে ও স্বাক্ষর জালের বিষয়ে টেকনাফ বাহারছড়া নোয়াখালী পাড়ায় সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তদন্ত টিম পরিদর্শন করেছে। ৯ আগষ্ট শনিবার সকাল ১০ টার দিকে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সেলিনা কাজীর নেতৃত্বে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা সৈয়দ হুমায়ুন মোর্শেদ, সমবায় কর্মকর্তা কবির আহাম্মদ ও প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সুব্রত কুমার ধর বিদ্যালয় পরিদর্শন করেন।

এ সময় তদন্ত টিম বিদ্যালয়ে মেরামত কাজ ও ব্যাংক হিসাব দেখেন। এতে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি আব্দুর রহমান বাহার, বাহারছড়ার স্থানীয় ইউপি সদস্য মৌঃ আমির হোসেন, পরিচালনা কমিটির সাবেক সভাপতি মোঃ ইলিয়াছ, সাবেক সহ সভাপতি আজগর হোসেন, স্থানীয় মৌলভী ফরিদ আহাম্মদ, সামসুল আলমসহ গন্যমান্য ব্যাক্তিরা উপস্থিত ছিলেন। এদিকে তদন্ত টিম অর্থ আত্মসাত ও স্বাক্ষর জালের বিষয়ে প্রতিবেদন জমা দিলে উপজেলা নির্বার্হী কর্মকর্তা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবেন বলে জানা গেছে।

বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি আব্দুর রহমান বাহার জানান, তদন্ত টিম প্রধান শিক্ষকের কাছ থেকে গত ৫ বছরের হিসাব-নিকাশ চান, বিদ্যালয়ে টিন মেরামতের হিসাব করে ২০ হাজার টাকা স্থানীয় ইউপি সদস্যকে জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। তাছাড়া বর্তমান এসএমসি কমিটির ১১ জনের মধ্যে উপস্থিত ৯ জনের স্বাক্ষর নেওয়া হয়েছে আগের জাল স্বাক্ষরের সাথে তার কোন মিল পাওয়া যায়নি। তবে তদন্ত টিমের কাছে প্রধান শিক্ষক ভুল স্বীক্ষার করেছেন বলে জানিয়েছেন।

এদিকে বাহারছড়া নোয়াখালী পাড়া প্রাঃ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক ও সদস্য সচিব মোহাম্মদ ফেরদৌস গত মে মাসের রেজ্যুলেশন জমা দেয়। এতে সভাপতির স্বাক্ষর জাল করা হয়। এ রেজ্যুলেশনের মাধ্যম বিদ্যালয় মেরামত ও ¯ি¬প তহবিল বাবদ ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা বরাদ্ধ দেওয়া হয়। তাছাড়া প্রধান শিক্ষক মাসিক সভা না করে এসএমসি কমিটির সভাপতিসহ অন্যান্যদের স্বাক্ষর জালিয়তি করে সাবেক সভাপতি ও সদস্য সচিবের নাম দিয়ে উপজেলা প্রাঃ শিক্ষা অফিস থেকে সোনালী ব্যাংক লিঃ টেকনাফ শাখার ১ লাখ ৩০ হাজার টাকার চেক বুঝে নিয়ে উত্তোলন করে। এ বিষয়টি কমিটির সভাপতি শিক্ষা কর্মকর্তাকে মোখিক ভাবে জানানো হলেও তা কোন কর্নপাত করেনি। তাছাড়া উক্ত প্রধান শিক্ষক ক্রয় কমিটি না করে কমিটির অজান্তে স্বেচ্ছায় কিছু ঢেউটিন দিয়ে মেরামত করে। এ মেরামত কাজে সরকারী অর্থ আত্মসাৎ করা হয়। এ ব্যাপারে প্রতিকার চেয়ে বিদ্যালয় সভাপতি আব্দুর রহমান বাহার জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকতাসহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দায়ের করে ।

সাবেক সভাপতি মোঃ ইলিয়াছ জানান, গত ৩ বছর আমাকে অন্ধকারে রেখে উক্ত প্রধান শিক্ষক সহ সভাপতির নামে ব্যাংক হিসাব খুলে অর্থ আত্মসাৎ করেছে। উপজেলা প্রাঃ শিক্ষা অফিসে জমাকৃত রেজ্যুলেশনে ভূঁয়া স্বাক্ষর দিয়ে সব কাজ চালিয়ে যান। এমনকি সাবেক সহ সভাপতির ছবি দিয়ে সভাপতির জাল স্বাক্ষর দেওয়া হয়েছে। তবে স্থানীয়রা প্রধান শিক্ষক কর্তৃক বই বিতরন, উপবৃত্তিসহ নানা অজুহাত দেখিয়ে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নেয় বলে জানিয়েছেন ।

নোয়াখালী পাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফেরদৌস জানান, সরকারী বরাদ্ধের টাকায় বিদ্যালয় মেরামত কাজে কমিটির সাথে একটু ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। তাই সহকারী কমিশনার (ভূমি) বিদ্যালয়টি সরজমিন পরির্দন করে কাজের মান যাচাই করেছেন বলে জানিয়েছেন।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন