parbattanews

টেলেন্টপুলে বৃত্তি পেলো পানছড়ির অসহায় দ্বীপলী

DEPLI PIC

পানছড়ি প্রতিনিধি:

ছোট বেলা থেকে বাবা নেই। বাবা মারা যাওয়ার পর মা আশ্রয় নেয় বাপের বাড়ী। দ্বীপলী তখর খুব ছোট। তেমন মনে নেই তার শিশু বেলার স্মৃতি। অবশেষে একটু  বুঝতে শিখলে খালার বাড়ীতে স্থান হয় দ্বীপলীর। গৃহবধু খালা আর দিন মজুর খালুর অভাবের সংসার। বোনের মেয়ের জন্য মায়ায় বশীভূত হয়েই দ্বীপলীকে নিয়ে তারা দেখে উজ্জল ভবিষ্যত।  হতাশ করেনি দ্বীপলীও খালা-খালুর কষ্টের ফলকে। খুশীর সাগরে ভাসিয়ে তোলে অষ্টম শ্রেণীর টেলেন্টপুল বৃত্তি। শুধু খালা-খালু নয় পানছড়ির একমাত্র নারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পানছড়ি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়েও খুশীর বন্যা।

সরেজমিনে জানা যায়, দীঘিনালা উপজেলার কবাখালি ইউপির শান্তিপুর গ্রামের মৃত কল্পজয় চাকমা ও প্রমিতা চাকমার মেয়ে দ্বীপলী চাকমা। পরিবারের বেহাল দশা দেখে পানছড়ি উপজেলার সদর পানছড়ি ইউপির সত্যধন পাড়ার মনিন্দ্র চাকমার সহধর্মিনী পারুমিতা চাকমার আদরে বড় উঠে দ্বীপলী।  শান্ত শিষ্ট স্বভাবের দ্বীপলীর কাজ শুধু পড়ালেখা আর নিয়মিত বিদ্যালয়ে আসা যাওয়া। পানছড়ি বালিকা বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা জানান, নিয়মিত বিদ্যালয়ে উপস্থিতি ও লেখাপড়ায় মনোযোগীর দিক দিয়ে বিদ্যালয়ে দ্বীপলীই সেরা। তাই শিক্ষকদেরও শতভাগ বিশ্বাস ছিল সে বৃত্তি পাবেই। শিক্ষকদেরও স্বপ্ন পুরণ হয়েছে বলে জানান উপস্থিত শিক্ষকরা।

এ ব্যাপারে দ্বীপলীর সাথে আলাপকালে সে জানায়, ৬ষ্ঠ শ্রেণী থেকেই আমাকে বিদ্যালয়ে বিনা বেতনে পড়া, কোচিংসহ যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা বিদ্যালয় থেকে দিয়েছে। তাই আমি অনেকটা চিন্তামুক্ত থাকতাম। তাছাড়া আমার খালা-খালু কখনো বই, খাতা, কাগজ কলমের অভাব চোখে পড়তে দেয়নি। ভবিষ্যতে একজন আদর্শ শিক্ষক হওয়ার স্বপ্ন দেখছে দ্বীপলী। কিন্তু দ্বীপলীর এখন একটাই ভয় নবম-দশম শ্রেণীতে অনেক খরচ। খালা-খালুর অভাবের সংসারে কোন কিছু চাইতেও খুব লজ্জা বোধ হয়।

উল্লেখ্য ২০১৪ সালের অষ্টম শ্রেণীর বৃত্তি পরীক্ষায় পানছড়ির বিভিন্ন বিদ্যালয়ের দশ জন ছাত্র-ছাত্রী বৃত্তি লাভ করেছে। এদের মধ্যে পানছড়ি বাজার উচ্চ বিদ্যালয়ে টেলেন্টপুলে দুই জন ও সাধারন গ্রেডে তিন জন, পানছড়ি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে টেলেন্টপুলে এক জন, পূজগাং মুখ উচ্চ বিদ্যালয়ে টেলেন্টপুলে এক জন ও সাধারন গ্রেডে এক জন, লোগাং বাজার আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় ও লোগাং উচ্চ বিদ্যালয়ে সাধারণ গ্রেডে একজন করে বৃত্তি লাভ করেছে। ওয়েব সাইডের মাধ্যমে এ ফলাফল জেনেছেন বলে বিভিন্ন বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সাথে আলাপকালে জানা যায়।

 

Exit mobile version