তাইন্দং-এ হামলাকারীদের রক্ষায় বিজিবি’র একপেশে বিবৃতির প্রতিবাদে ঢাবি’তে বিক্ষোভ মিছিল ও সামবেশ

PCP protest in Dhaka2

প্রেস বিজ্ঞপ্তি:

খাগড়াছড়ি জেলার মাটিরাংগা উপজেলায় তাইন্দং-এ পরিকল্পিতভাবে অপহরণ নাটক সাজিয়ে কয়েকটি পাহড়ি গ্রামে হামলা, ভাংচুর, লুটপাট ও বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ এবং বৌদ্ধ বিহার ও মুর্তি ভাংচুরের সাথে জড়িত চিহ্নিত হামলাকারীদের রক্ষায় বিজিবি’র দেয়া একপেশে বিবৃতির প্রতিবাদে আজ ২৫ আগস্ট বৃহত্তর পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এক বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে।

দুপুর ১২টায় মুধুর ক্যান্টিনের সামনে থেকে মিছিলটি শুরু হয়ে পুরো ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ শেষে টিএসসি’র রাজু ভাস্কর্য্যরে সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করে। সামবেশে সভাপতিত্ব করেন বৃহত্তর পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি থুইক্যসিং মারমা। সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের তথ্য প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক এসিংমং মারমা, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের ঢাবি’র যুগ্ম আহ্বায়ক ফয়সাল মাহমুদ, হিল উইমেন্স ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি নিরূপা চাকমা। সভা পরিচালনা করেন পিসিপি’র কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক বিনয়ন চাকমা।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, তাইন্দং ঘটনা ছিল পুরোপুরি পূর্বপরিকল্পিত ও ষড়যন্ত্রমূলক। ঘটনার দিন মোটর সাইকেল চালক মো: কামাল হোসেনকে কথিত অপহরণ -এর গুজব অত্যন্ত সু-পরিকল্পিতভাবে বিদ্যুৎ গতিতে ছড়িয়ে দেয়া হয়। গুজব ছড়ানোর পর পর বিভিন্ন মসজিদের মাইক ব্যবহার করে সেখান থেকে পাহাড়ি গ্রামে হামলার নির্দেশ দেয়া হয়। এর পরপরই পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন গ্রাম থেকে সেটলার বাঙালিরা সংঘবদ্ধভাবে পাহড়িদের গ্রামে হামলা করতে শুরু করে। কয়েক ঘন্টাব্যাপী চলা এ ঘটনায় পাহাড়িদের ৩৬ বাড়িঘরে অগ্নি সংযোগ করা হয়, বৌদ্ধ মন্দির ও মূর্তি ভেঙে ফেলা হয় এবং বাড়িঘরে লুটপাট ও ভাংচুর করা হয়।

বক্তারা বলেন, পাহাড়িদের ঘরবাড়িতে হামলা, ভাংচুর, লুটপাট এবং জ্বালিয়ে ছাই করে দেয়ার পর কথিত অপহৃত কামাল হোসেন সন্ধ্যার আগে সম্পূর্ণ অক্ষত অবস্থায় আত্মগোপন থেকে বের হয়ে আসে।  এ ষড়যন্ত্রের সাথে অওয়ামী-লীগ, বিএনপি ও জামাতের লোকজন প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত ছিল। পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ এবং পহাড়ের জনগণ তাইন্দং ঘটনা নিয়ে ঘৃন্য রাজনীতি সহ্য করবে না বলেও সমাবেশ থেকে বক্তারা হুশিয়ারী উচ্চারণ করেন।

বক্তারা তাইন্দং ঘটনা নিয়ে বিজিবি’র দেয়া ব্যাখ্যা বা বক্তব্যকে মিথ্যা ও অগ্রহণযোগ্য আখ্যায়িত করে বলেন, ঘটনাস্থল বিজিবি ক্যাম্প থেকে স্বল্প দুরত্ব হলেও ঘটনার দিন বিজিবি’র সদস্যরা হামলাকারী সেটলার বাঙালিদের কোন প্রকার বাধা প্রদান করেনি। অথচ, পাহাড়িরা যাতে ভারতীয় সীমান্তে গিয়ে আশ্রয় নিতে না পারে তার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করেছে। কাজেই, বিজিবি’র ব্যাখ্যা কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। তাদের এ ব্যাখ্যা বা বক্তব্য হামলাকারীদের রক্ষা করবে এবং পরবর্তীতে আরো এ ধরণের হামলার জম্ম দেবে।

সমাবেশ থেকে বক্তারা তাইন্দং ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারীদের চিহ্নিত করে তাদেরসহ ঘটনার সাথে প্রত্যক্ষভাবে জড়িতের দ্রুততম সময়ে গ্রেফতার ও বিচার এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি, ক্ষতিগ্রস্তদের পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ, ক্ষতিগ্রস্ত পাহাড়ি জনগণকে গৃহনির্মান সামগ্রী ও নির্মান ব্যয়সহ সোলার প্যানেল-টেলিভিশন-আসবাবপত্রসহ লুন্ঠনকৃত গৃহসামগ্রীর ক্ষতিপুরণ এবং আগামী তিন মাসের রেশন দেয়ার দাবী জানান।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

One Reply to “তাইন্দং-এ হামলাকারীদের রক্ষায় বিজিবি’র একপেশে বিবৃতির প্রতিবাদে ঢাবি’তে বিক্ষোভ মিছিল ও সামবেশ”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন