parbattanews

তিনদিন সাগরে ঘুরিয়ে দেড়শ রোহিঙ্গাকে উপকূলে ছেড়ে দিল পাচারকারীরা

রোহিঙ্গা বোঝাই একটি বড় ইঞ্জিন চালিত নৌকা কক্সবাজারের টেকনাফ সমুদ্র সৈকতে ভাসছে। সাগরপথে অবৈধভাবে মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়া নিয়ে যাওয়ার কথা বলে তিনদিন সাগর ঘুরিয়ে উপকূলে এনে ছেড়ে দিয়ে পালিয়েছে পাচারকারীরা। নৌকাটিতে পুরুষ, নারী ও শিশুসহ কমপক্ষে দেড়শ রোহিঙ্গা ছিল বলে জানিয়েছেন স্থানীয় লোকজন ও নৌকায় থাকা রোহিঙ্গারা।

সাগরে তিনদিন কাটানোর পর বৃহস্পতিবার (৯ নভেম্বর) ভোরে সাগরে ভাসমান একটি বোট দেখে জেলেরা টেনে টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সৈকতে মহেষখালী পাড়া ঘাটে নিয়ে আসেন।

তারপর যাত্রীরা কান্নাকাটি করে নেমে পড়েন। এতে স্থানীয় দালালরা অনেককে জোর পূর্বক পাহাড়ে নিয়ে য়াওয়ার চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ রোহিঙ্গাদের।

এসব তথ্য নিশ্চিত করেন টেকনাফ সদর ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার ও মহেষখালী পাড়ার নিবাসী জহীর আহমদ। তিনি বলেন, ‘সাগরে যাত্রীবাহী একটি বড় কাঠের ইঞ্জিন বোট ভাসমান দেখে জেলারা টেনে উপকূলে নিয়ে আসেন। বড় বোটে অন্তত দেড়শ যাত্রী ছিল। তারা সকলেই ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়া যাওয়ার জন্য বোটে উঠেছিলো।

সবাই বিভিন্ন ক্যাম্পে বসবাসকারী মিয়ানমারের রোহিঙ্গা। এদের মধ্য বেশির ভাগই নারী ও শিশু ছিল। ঘাটে ওই ট্রলারটি এখনো ভাসমান অবস্থায় রয়েছে। তবে রোহিঙ্গারা যে যার মতো চলে গেছেন। বিষয়টি আমি সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে অবহিত করেছি।

কাঠের ইঞ্জিন নৌকা থেকে নেমে মেরিন ড্রাইভ সড়কে অপেক্ষমান রোহিঙ্গা হামিদ হোসেন বলেন, তিনি উখিয়া বালুখালীর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাসিন্দা। ক্যাম্পের পরিস্থিতি খুব খারাপ প্রতিদিন খুনাখুনি হচ্ছে। সে কারণে ক্যাম্পে বেরিয়ে উন্নত জীবনের আশায় সাগরপথে মালয়েশিয়া পাড়ি দিচ্ছিলাম।

আমরা বড় বোটে প্রায় দেড়শ জন ছিলাম। সেখানে আমার শিশু সন্তানসহ ৬ জন পরিবারের সদস্য। তিনি আরো জানান, ক্যাম্প জীবন ছেড়ে আমরা জীবন রক্ষার জন্য সাগরপথে মালয়েশিয়া যাওয়ার চেষ্টা করছিলাম। প্রথমে ক্যাম্প থেকে বের হয়ে দালালদের মাধ্যমে টেকনাফের একটি পাহাড়ে ৫ দিন ছিলাম। সেখান থেকে ছোট নৌকা নিয়ে সাগরে থাকা এ বড় ইঞ্জিন বোটে উঠি। বড় বোটে আমার মতো অনেকে ছিল। এরপর মাঝিরা ইন্দোনেশিয়া নিয়ে যাওয়ার কথা বলে সাগরে তিন দিন ঘুরাঘুরি করে। এক পর্যায়ে কূলের কাছকাছি এসে মাঝিমল্লারা ঝাপ দিয়ে পালিয়ে যায়। পরে দুটি ছোট নৌকায় আমাদের ভাসমান বড় নৌকাটি টেনে কূলে নিয়ে আসেন। মূলত আমরা মালেশিয়ার উদ্দেশ্যে ইন্দোনেশিয়া যাত্রা করেছিলাম।’

টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ জোবাইর সৈয়দ বলেন, ‘সাগরপথে মালয়েশিয়াগামী একটি যাত্রীবাহী ট্রলার টেকনাফে উপকূলে ফিরে আসার খবর শুনেছি। তবে বিষয়টি কোস্ট গার্ড দেখছেন।

বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড টেকনাফ স্টেশন কর্মকর্তা লে.কমান্ডার সোলেমান কবির জানান, ‘এ ধরনের একটি সংবাদ আমরা পেয়েছি। ঘটনাস্থলে যাত্রীবিহীন ট্রলারের সন্ধান পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে আমার খোঁজ খবর নিচ্ছি।’

Exit mobile version