parbattanews

তিন চাকার বিয়ারিং গাড়িতেই সচল পানছড়ির জলফা সাঁওতাল


নিজস্ব প্রতিবেদক, পানছড়ি:

পানছড়িবাসীর নিকট দীর্ঘদিনের পরিচিত একখানা মূখ প্রতিবন্ধী জলফা সাঁওতাল। পানছড়ি লোগাং সড়কের পথচারীরা চলাচলের সময় উপভোগ করে জলফার দু’হাত দিয়ে তিন চাকার বিয়ারিং গাড়ী ঠেলে ঠেলে চলার দৃশ্য। বয়সের ভারে এখন ন্যুয়ে পড়েছেন। তাই চোখে-মুখে ক্লান্তির চিহ্ন দিয়ে বুঝাতে চাইছে বয়স হয়েছে অনেক- আর পারছি না।

উপজেলার কানুনগো পাড়া এলাকার প্রধান সড়কে দেখা হলে সে জানান, রাঙামাটি জেলার বন্ধুকভাঙ্গা এলাকার মৃত জদ সাঁওতাল তার পিতা। কাপ্তাই বাঁধ নির্মাণের পর পরই পানছড়িতে আসা। নিজের কোন জায়গা-জমি নেই। পরের জায়গাতেই বর্তমানে বসবাস। দু’ পা নেই তা ভিক্ষা ছাড়া কোন উপায় ছিল না। কিন্তু পা ছাড়া ভিক্ষা করাও তো যায় না। অনেক ভেবে চিন্তে তিনটি বিয়ারিং কিনে কাঠের টুকরোয় পেরেক মেরে নিজেই তৈরী করেন তিন চাকার গাড়ী। গাড়ীতে বসে দু’হাতে কাঠের তৈরি জুতো লাগিয়ে ঠেলে ঠেলে চড়ে বেড়ায় পানছড়ির এমাথা-ওমাথা।

১ ছেলে ও ২ মেয়ের জনক জলফা জানান, ভিক্ষা আর ছয়শত টাকা প্রতিবন্ধী ভাতাই আয়ের উৎস। বৃষ্টি বাদল হলেতো ভিক্ষা করাও কষ্টকর। এবারের শীতে পেয়েছে মাত্র দু’খানা শীতবস্ত্র। তাই শীত নিবারণেও কষ্ট হচ্ছে। গত ২০ ডিসেম্বর’১৮ ইং তারিখে পানছড়িতে সনাতন সমাজ কল্যাণ পরিষদের ত্রি-বার্ষিক কাউন্সিলে আসা স্থানীয় সাংসদ কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা’র দেয়া শীতবস্ত্র ও টাকা পেয়ে সে খুব খুশী।

এলাকার বয়োবৃদ্ধ খুকুনি সাঁওতাল ও রিংপি সাঁওতাল জানান, ভিক্ষা করে দু’শ আড়াইশ টাকা যা পায় তা দিয়েই কোন রকমে সংসার চলে। স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. মতিউর রহমান ও প্রতিবন্ধী কল্যাণ সংঘের সভাপতি মো. হাসানুজ্জামান বলেন, পরিবারটি খুবই দরিদ্র। এখন তার বয়স হয়েছে আগের মতো হাতে ঠেলে  বিয়ারিং গাড়ী চালাতে না পারলেও অভাবের কারণে নিত্য বেরিয়ে পড়ে।  বিত্তবানরা একটু সহযোগিতার হাত বাড়ালেই বুড়ো বয়সে জলফা পাবে একটু সুখের পরশ।

Exit mobile version