parbattanews

তিন বছর পর প্রান ফিরে পেয়েছে নাইক্ষ্যংছড়ির নদী, খাল-বিল ও ছড়া

দীর্ঘ তিন বছর পর প্রান ফিরে পেয়েছে নাইক্ষ্যংছড়ির নদী,খাল, বিল এবং ছড়া। গেল ১২ ঘন্টার টানা বৃষ্টির পানি ও পাহাড়ি ঢলে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে ।

শুক্রবার (৪ আগস্ট) সকাল থেকে বিকাল নাগাদ উপজেলার প্রধান নদী বাঁকখালী আর সদর এলাকা দিয়ে প্রবাহিত হওয়া নাইক্ষ্যছড়ি খালসহ অপরাপর খাল-বিলগুলোর খবরাখবর নিয়ে এসব তথ্য পান এ প্রতিবেদক।

সূত্র আরো জানান, নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার প্রধান নদীর নাম বাঁকখালী। এটি বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমানা পৃথক করা নাইক্ষংছড়ি উপজেলার দৌছড়ি ইউনিয়নের বুচি পাহাড় থেকে সৃষ্ট। যেটি দৌছড়ি ইউনিয়নের কামিছড়া হয়ে ছাগলখাইয়া দিয়ে প্রবাহিত হয়ে নিচে নেমে যায়। পরে কক্সবাজার জেলা হয়ে বঙ্গোপসাগরে পতিত হয়।

বর্তমানে এ নদীতে পানি চোখে পড়েছে ৩ বছর পর। পুরো নদী যেন প্রান ফিরে পেয়েছে। পানিতে দু’কূল ভরে গেছে। যা গত ৩ বছরে চোখে পড়েনি। একই দৃশ্য
নাইক্ষ্যংছড়ি খাল, গর্জন খাল,লংগদু খাল, আলিয়ান খাল, ফাঁসিয়াখার খাল, কামি খাল, দৌছড়ি খাল, জামছড়ি খাল, রেজু খাল ও নাফনদীর আগা তথা তুমব্রু খালসহ অপরাপর সব খাল।

এদিকে, নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলায় বাঁকখালী নদী ছাড়া সবচেয়ে বেশী খাল রয়েছে দোছড়ি ও বাইশারী ইউনিয়নে। এ দু”ইউনিয়নের চেয়ারম্যান যথাক্রমে মো. ইমরান ও মোহাম্মদ আলম কোম্পানী এ প্রতিবেদককে বলেন, গত ৩ বছর আশানুরূপ বৃষ্টি হয়নি তাদের এলাকায়। এ কারণে মানুষ কষ্ট পেয়েছে সীমাতীত। বিশেষ করে কৃষকদের ধান, বাগান ও অন্যান্য ক্ষেতে দেখা দিয়েছিলো অনাবৃষ্টির প্রভাব। খরাতে খুবই কষ্ট পেয়েছিলো গেল ৩ বছর।

তারা আরও বলেন,এভাবে বৃষ্টি না হওয়ায় উঁচু ভূমিতে চাষাবাদ করতেই পারে নি এ সময়। এ কারণে অনেক কৃষকের পরিবারে বছরের খাবার জোগাড় করতে হিমশিম খেতে হয়েছিলো দীর্ঘদিন। ঠিক এ বছরও তারা মনে করেছিলো আগের বছরের দশা নেমে আসবে তাদের কপালে।

কিন্তু দেরীতে হলেও ১১ শ্রাবণ থেকে বৃষ্টির দেখা মিলে এখানে। তাদের এলাকায় থাকা সব খাল, ছড়া, ঝিরি ও বিল এখন পানিতে সতেজ হয়েছে। নদী-খাল-যেন প্রাণ ফিরে পেয়েছে।

নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার নৃ-গোষ্ঠীর নেতা উপজেলা পরিষদের ভাইস-চেয়ারম্যান মংহ্লা ওয়াই মার্মা বলেন, গত ৩ বছর ধরে নাইক্ষ্যংছড়িতে বৃষ্টি হয়েছে খুব কম। খালে-বিলে পানির দেখা মিলে তেমন।

কিন্তু শ্রাবণের শেষে এসে বৃষ্টি হচ্ছে। বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার ২ দিনে মুষলধারে বৃষ্টি হয়েছে নাইক্ষংছড়িতে। এ কারণে এখানকার নদী,খাল, বিল পানিতে ভরে গেছে-যেন হারানো যৌবন ফিরে পেয়েছে সবগুলোই।

এছাড়া কৃষি পরিবার গুলোতে খুশির জোয়ার বইছে। তারা খরিপ-২ এর এ মৌসূমে রোপা আমনে মাঠে নেমে গেছে।

তিনি আরও বলেন, উপজেলার মাঝি, জেলে ও নদী-খাল নির্ভর ব্যবসায়ীরা আশার আলো দেখতে পেয়েছে খালের পানিতে। শুক্রবার সন্ধ্যা নাগাদ এ সংবাদ লেখাকাল অবধি বৃষ্টি হচ্ছে থেমে থেমে। যেন আদর্শ শ্রাবণ।

ব্যবসায়ী আবু তালেব জানান, পানির অভাবে তারা কাঠ ব্যবসা বন্ধ করে দিয়েছিলো। কারণ দোছড়ি খালের কম পানিতে কাঠ আনতে পারছিলো না তারা। যাতে লেন-দেনেও ছিলো হতাশা।

এভাবে প্রতিটি পেশার মানুষ যেহেতু নদী ও খাল নিভর্র, সুতরাং এ বৃষ্টিতে সকলে আশার আলো দেখতে পাচ্ছে। নদী-খালের পানি ভরা রূপ দেখে সকলের যেন প্রান ফিরে এসেছে।

Exit mobile version