parbattanews

তিন যুগের গ্রামীণ সড়ক কেটে যোগাযোগ বন্ধ: দূর্ভোগে জারুলিয়াছড়ির ২শ পরিবার

নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউনিয়নের জারুলিয়াছড়ির তিনযুগের গ্রামীন সড়কটি কেটে দখল করার অভিযোগ উঠেছে। এই পরিস্থিতিতে কয়েকমাস ধরে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন ওই গ্রামের অন্তত ২শ পরিবারের প্রায় ৫শ মানুষ।

বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউনিয়নের জারুলিয়াছড়ির জনগুরুত্বপূর্ণ এই সড়কের কর্তৃত্ব নিয়ে এখন এলাকার জনগণ ও দখলকাদারদের মধ্যে বিরোধ চলছে। এর আগেও বহুবার সড়কটি দখলের চেষ্টা হয় বলে এলাকার বাসিন্দা ও জনপ্রতিনিধিরা জানিয়েছেন।

সরেজমিনে দেখা যায়, জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার সদর ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের জারুলিয়াছড়ি গ্রামের একমাত্র চলাচলের গ্রামীণ সড়ক দিয়ে কম্বনিয়া, বিজিবি ক্যাম্প ভায়া ফুলতলীসহ উপজেলা সড়কের সঙ্গে মিলিত হয়েছে। ইতোপূর্বে ইউনিয়ন পরিষদ একাধিকবার কর্মসৃজনের মাধ্যমে সড়কটি রক্ষণা বেক্ষণ করা হয়। কিন্তু হঠাৎ করেই গত কয়েকমাস ধরে প্রায় তিনযুগের পুরনো সেই গ্রামীণ সড়কটি রাতের আধারে এস্কেভেটর দিয়ে কেটে তামাক চাষের জন্য জমি বের করেছে স্থানীয় বাসিন্দা সুরুত আলম।

এই প্রসঙ্গে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জারুলিয়াছড়ি এলাকার প্রবীণ বাসিন্দা মো: জামাল, মো: আয়ুব, মনিরুজ্জামান, রুস্তম আলী, আবুল হোসেন। জন্মের পর থেকে পরিবার-পরিজন নিয়ে এই গ্রামে বসবাস করছেন। এই গ্রাম ও সড়ক ব্যবহার করেই তাদের বেড়ে উঠা। কিন্তু প্রায় তিন যুগের পুরনো সড়কটি এলাকার প্রভাবশালী সুরুত আলম স্কেভেটর দিয়ে কেটে কিছুদিন ধরে বন্ধ করে দিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে চলাচল করতে না পারায় বিভিন্ন মালামাল আনা-নেয়ায় ভোগান্তি তৈরি হয়েছে মানুষের। কখনো মাথায় আবার কখনো কাঁধে করে চলাচলকারীদের মালামাল বহন করতে হচ্ছে। ফলে অসহনীয় দুর্ভোগে পড়েছেন জারুলিয়াছড়ি গ্রামবাসী।

এই প্রসঙ্গে নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান তসলিম ইকবাল চৌধুরী জানান- চেয়ারম্যান থাকাকালীন জারুলিয়াছড়ি গ্রামের মানুষের চলাচলের সুবিধার্থে রাস্তাটি তিনি সরকারি অর্থে সংষ্কার করেছিলেন। রাস্তাটি অনেক পুরনো। এলাকার মানুষের সহজ চলাচল নিশ্চিত করা প্রত্যেকের দায়িত্ব। সেক্ষেত্রে চলাচল সড়ক নিয়ে কাউকে রাজনীতি না করার জন্য অনুরোধ জানান। রাস্তাটি বহু বছরের পুরনো বলে স্বীকার করেছেন সদর ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের মেম্বার আলী হোসেনও।

স্থানীয়রা জানান, ব্যাক্তি স্বার্থে বহু বছরের রাস্তাটি অন্যদিকে ঘুরিয়ে দেওয়ার জন্য পুরনো রাস্তাটি কেটে দেওয়া হয়েছে। ফলে দূরত্ব যেমন বাড়বে, তেমনি মূল সড়কের সঙ্গেও সংযুক্ত হবে না নতুন সড়কটি। এছাড়া নতুন করে অন্যদিকে রাস্তা হলে সেখানকার অসহায় গরীব মানুষের জমিও বেদখল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

এই বিষয়ে নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল আবছার বলেন- রাস্তাটি দীর্ঘদিনের সমস্যা। কয়েকমাস পূর্বে কর্মসূচীর মানুষ দিয়ে আমি রাস্তাটি নতুনভাবে করে দিয়েছিলাম। কিন্তু আবারো শুনলাম, ওই গ্রামের মানুষকে চলাচলে বাধা দেওয়া হচ্ছে। তাই পুনরায় ঘটনাস্থলে না-গেলে মূল বিষয়-কি, তা বলা যাচ্ছে না। তবে নতুন রাস্তাটির শেষ প্রান্তে ১০-১৫হাত ঘুরে এবং একটি কালভার্ট প্রয়োজন রয়েছে বলে জানান তিনি।

এদিকে মানুষের চলাচলে জনদূর্ভোগের বিষয়টি জানতে পেরে তাৎক্ষণিকভাবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য স্থানীয় চেয়ারম্যানকে নির্দেশ দিয়েছেন নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সাদিয়া আফরিন কচি।

এই বিষয়ে তিনি বলেন- ইতোপূর্বে ওই এলাকায় সরকারি প্রকল্প পরিদর্শনে গিয়ে সড়কটির বিষয়ে তিনি জেনেছেন এবং সেখানকার মানুষের দূর্ভোগ নিরসনে একটি কালভার্ট স্থাপনের জন্য চেয়ারম্যানকে বলেছেন।

Exit mobile version