parbattanews

তুমব্রু সীমান্তে সিসি ক্যামেরা


নিজস্ব প্রতিবেদক, বান্দরবান:

সীমান্তে সার্বক্ষনিক পর্যবেক্ষণ বাড়াতে বান্দরবান জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার তমব্রু সীমান্তে শুক্রবার(১মার্চ) প্রথম বারের মত তিনটি ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরা লাগিয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। ৩৪ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মঞ্জুরুল হাসান খান বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান।

মিয়ানমার গত বৃহস্পতিবার সীমান্তে ভারী অস্ত্র নিয়ে অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন করলে সীমান্তে উত্তেজনা দেখা দেয়। পরে অতিরিক্ত সেনা সরিয়ে নেওয়া হলেও পরিস্থিতি এখনও থমথমে রয়েছে। পরিস্থিতি সার্বক্ষনিক পর্যবেক্ষন করতে সীমান্তে সিসি ক্যামেরা লাগিয়েছে বিজিবি। সীমান্তে অতিরিক্ত বিজিবি মোতায়েন করা না হলেও বিজিবি সদস্যরা সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। সীমান্ত পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন জেলা প্রশাসন ও বিজিবি কর্মকর্তারা।

শুক্রবার তুমব্রু সীমান্তে নিরপেক্ষ এলাকা পরিদর্শন করেছেন বান্দরবান জেলা প্রশাসক দিলিপ কুমার বণিক, ৩৪ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যাস্ট কর্নেল মঞ্জুরুল হাসান খান, বান্দরবান লামা উপজেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আব্দুস সালাম, নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এন সরয়ার কামাল প্রমুখ।

জেলা প্রশাসন ও বিজিবিপরিদর্শন শেষে জেলা প্রশাসক দীলিপ কুমার বলেন, নিরপেক্ষ এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। সতর্ক অবস্থায় বিজিবি অবস্থান নিয়েছে। আজ বিকাল ৩টায় বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে।

একটি সূত্র জানায়, নিরপেক্ষ রেখায় অবস্থানরত সাড়ে ছয় হাজার রোহিঙ্গা যাতে মিয়ানমারে ফেরত যেতে আগ্রহী না হয় এবং ফেরত পাঠানোর পুরো প্রক্রিয়াটি অনিশ্চিত করতে অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন করেছে মিয়ানমার।

বৃহস্পতিবার সকালে তুমরু সীমান্তে নিরপেক্ষ রেখায় সীমান্তে ৭টি পয়েন্টে কাঁটাতারের বেড়া পার হতে মই বসিয়েছে মিয়ানমার সেনা। মই দিয়ে রাতে নিরপেক্ষ রেখায় ঢুকে রোহিঙ্গাদের হামলা চালানোর চেষ্টা করে তারা। সেই সাথে নিরপেক্ষ রেখায় অবস্থান করা রোহিঙ্গাদের অবৈধ উল্লেখ করে সরে যেতে মাইকিং করে। ফলে রোহিঙ্গাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

ওই ক্যাম্পের রোহিঙ্গা প্রতিনিধি মোহাম্মদ আরিফ বলেন, বৃহস্পতিবার সকালে বিজিপি সদস্যরা কাঁটাতারের বেড়ার কাছে এসে অস্ত্র তাক করে রোহিঙ্গাদের সরে যেতে হুমকি দেয়। তারা মই দিয়ে কাঁটাতারের বেড়া পেরিয়ে ক্যাম্পে হামলারও চেষ্টা চালায়। দুপুরের পর বাংলাদেশ সীমান্তে বিজিবির অবস্থান জোরদার করা হলে মিয়ানমারের সীমান্ত রক্ষীরা ভারী অস্ত্র-শস্ত্র সরিয়ে নেয় বলেও জানান তিনি।

রাত ৮টার দিকে মিয়ানমারের বিজিপির একটি দল কাঁটাতারের বেড়া ডিঙ্গিয়ে ক্যাম্প ঢোকার চেষ্টা করে। এসময় ক্যাম্পের রোহিঙ্গারা দা-ছোরা আর লাঠি-সোঁটা নিয়ে এগিয়ে গেলে তারা ফিরে যায়। এর পরপরই সীমান্তের ওপার থেকে গুলির আওয়াজ পাওয়া যায়। গুলির ঘটনার পর থেকেই রোহিঙ্গা ক্যাম্প লক্ষ্য করে মিয়ানমারের দিক থেকে থেমে থেমে ঢিল ছোঁড়া হয়।

উল্লেখ্য, গত বছরের ২৫ আগস্ট থেকে মিয়ানমারের রাখাইনে সেনা বাহিনী নিপীড়ন ও গণহত্যা শরু করলে সাত লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়।

Exit mobile version