parbattanews

তুমব্রু সীমান্ত থেকে আরও ২৭৬ রোহিঙ্গাকে কুতুপালং ট্রানজিট ক্যাম্পে নেওয়া হচ্ছে

বান্দরবান জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের তুমব্রু গ্রামে জিরো লাইন থেকে বাস্তুচ্যুত হয়ে আসা রোহিঙ্গাদের ৩য় দফায় কুতুপালং ট্রানজিট ক্যাম্পে নেওয়া শুরু করেছে।

বুধবার (৮ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদে ক্যাম্প ৫’র সিআইসি প্রীতম শাহ উপস্থিত থেকে ৩য় দফায় মোট ২৭৬ জন রোহিঙ্গাকে কুতুপালং রাবার বাগানস্থ ট্রানজিট ক্যাম্পে নেওয়া শুরু করেছে।

ক্যাম্প ৫’র সিআইসি প্রীতম শাহ পার্বত্যনিউজকে জানান, বেলজিয়ামের রানি ও জাতিসংঘ মহাসচিবের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার (এসডিজি) দূত মাটিল্ডা কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনে আসার কারণে গতকাল একদিন স্থানান্তর কার্যক্রম বন্ধ ছিল বিধায় আমরা আজকে ৩য় দফায় তুমব্রুতে আশ্রেয় থাকা ২৭৬ জন রোহিঙ্গাকে ট্রানজিট ক্যাম্পে নিয়ে যাচ্ছি এবং যাদের নিবন্ধন রয়েছে তাদেরকে স্ব-স্ব ক্যাম্প ও অনিবন্ধিতদের নিবন্ধন করে বিভিন্ন ক্যাম্পে পাঠানো হবে বলে জানিয়েছেন সিআইসি প্রীতম শাহ।

এ সময় শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) মিজানুর রহমান বলেন, “এখানে আগত যেসব রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে অপরাধে জড়িত থাকার তথ্য পাওয়া যাবে, তাদের ব্যাপারে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে অবহিত করা হবে।

এছাড়াও অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার শামসুদ্দোজা জানান, বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ঢুকে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের যাচাই-বাছাই করার জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনের সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠিত হয়। সেই কমিটি ২ হাজার ৯৭০ জনের একটি তালিকা তৈরি করে। তাদের প্রথমে উখিয়ার বালুখালী ট্রানজিট ক্যাম্পে নিয়ে আসছে। পরে সেখান থেকে যারা আগে থেকেই নিবন্ধিত তাদের উখিয়া-টেকনাফের স্ব স্ব ক্যাম্পে পাঠানো হবে। বাকিদের নিবন্ধন করে বিভিন্ন ক্যাম্পে আশ্রয় দেওয়া হবে।

নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রোমেন শর্মা বলেন, “তুমব্রুতে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের গণনা শেষে ৫ ফেব্রুয়ারী আনুষ্ঠানিক ভাবে প্রশাসন, আরআরআরসি, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও আন্তর্জাতিক সংস্থা প্রতিনিধিরাসহ জাতীয় টাস্কফোর্স কমিটির মাধ্যমে ৩৬ পরিবারের ১৮৬ জন সদস্য কে ট্রানজিট ক্যাম্পে হস্তান্তর করা হয়েছে। ধাপে ধাপে সকল রোহিঙ্গাদের স্থানান্তরিত করা হবে বলেও তিনি জানান।

চেয়ারম্যান জাহাঙ্গির আজিজ সন্ধ্যায় প্রতিবেদককে বলেন, বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের কোনারপাড়ার শূন্যরেখা থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গারা প্রথমবার বাস্তচ্যুত হন ২০১৭ সালের আগষ্টে। দ্বিতীয়বার হয়েছে ১৮ জানুয়ারী শূন্যরেখা থেকে। তারা শেষবারে আশ্রয় নেন তুমব্রু সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন এলাকায়। সেখান থেকে গত ৫ ফেব্রুয়ারি থেকে ঘুমধুমস্থ ট্রানজিট ক্যাম্পে নেয়া হয়েছিল। বুধবার ছিলো স্থানান্তরের তৃতীয় দিন। এ দিন ৫০ পরিবারের ২৭০ রোহিঙ্গাকে (২ টি বাস আর ২ টি ট্রাকে করে মালামালসহ ট্রানজিট ক্যাম্পে পাঠানো হয়। এর আগে ৫ ফেব্রুয়ারী তারিখে পাঠানো হয় ৩৬ পরিবারের ১৮৪ জন রোহিঙ্গা।

উল্লেখ্য, ১ম দফায় ১৮৬, ২য় দফায় ১২৭৩ জনসহ ৩য় দফায় ২৭৬ জনকে তুমব্রু সীমান্ত থেকে কুতুপালং ট্রানজিট ক্যাম্পে নেওয়ার কার্যক্রম শুরু করেছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

Exit mobile version