থানচিতে আতঙ্ক কেটেছে গবাদি পশু মালিক ও স্থানীয় খামারীদের   

unnamed (8) copy

থানচি প্রতিনিধি :

থানচিতে বিভিন্ন সবজি ও জুমের ঘাসে বসকোয়াট কীটনাশক বা আগাছানাশক বিষক্রিয়ায় মারা গিয়েছিল গবাদি পশু গরু। তবে শুকর সোয়াইন ফ্লু রোগে মারা গিয়েছিল বলে দাবি করেন, উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. কাজী আসফুল ইসলাম ও সংশ্লিষ্টরা। রবি থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত প্রায় শতাধিক গবাদি পশুকে প্রতিষেধক ভ্যাকসিন, পিপিআর টিকা ইনজেকশন দেয়া হয়। প্রতিদিন সকাল ৮টা হতে উপজেলা সদরের বিভিন্ন  পাহাড়িদের  ঘরে গিয়ে এ ভ্যাকসিন দেয়া হয়। ফলে এখন আতঙ্ক অনেকটাই কেটেছে গবাদি পশু মালিক ও স্থানীয় খামারীদের।

রবিবার থানচিতে আতঙ্ক, অজ্ঞাত রোগে মরছে গবাদিপশু শিরোনামে মিডিয়ায় সংবাদ প্রকাশিত হয়। একই সংবাদে উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তার দপ্তরটি তালা ঝুলানো থাকায় কোনো কর্মকর্তাকে পাওয়া যায়নি বলে উল্লেখ করা হলে, রবিবার বিকাল থেকে উপজেলা প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তরে কর্মকর্তা ডা. কাজী আসফুল ইসলাম ভেটোরিনারি সার্জন ডা. খন্দকার মঈনুল হুদা নেতৃত্বে টিএনটি পাড়া, ছাংদাক পাড়া, বয়ক হেডম্যান পাড়া, থানচি বাজার, মরিয়ম পাড়াসহ বেশ কয়েকটি পাড়া ঘুরে সরেজমিনে ঘরে ঘরে গিয়ে শতাধিক গরু, ছাগল ,হাঁস ,মুরগী, শুকরের প্রতিষেধক ভ্যাকসিন দেয়া হয় । আগামী এক সপ্তাহ পর্যন্ত এই প্রতিষেধক হিসেবে টিকা দেয়ার কার্যক্রম চলবে বলেও জানা গেছে।

জানা গেছে, থানচি বাজার বাসিন্দা সামশু ইসলামের ২, টিএডটি পাড়া নিবাসী নুরুল আমিনের ১, কামরুল ইসলামে ১, থানা পাড়া নিবাসী মোস্তাক আহম্মদ ১, ফজল মিঞা ১, ছাংদাক পাড়া নিবাসী পুলুখয় মারমা ১, উচিংমং মারমা ১, বাজার পাড়া সিরাজ সওদাগর ১, নজির আহম্মদ ১, বয়ক হেডম্যান পাড়া  রানি দাশ ১, থানা পাড়া নিবাসী প্রেম কুমার ১টি গবাদি পশু বসকোয়াট কীটনাশক বা আগাছানাশক বিষক্রিয়ায় মারা যায়।

থানচি বাজার পরিচালনা কমিটি সাবেক সম্পাদক জসিম উদ্দিন, বয়ক হেডম্যান পাড়া কারবারী চিংক্য ম্রো, ছাংদাক পাড়া শিক্ষক উসাইনশৈ মারমা জানান, আগাছানাশক সবজি ক্ষেতে ব্যবহার করার পর গবাদি পশু ঘাস খাওয়ায় বিষক্রিয়াতে মারা যায়। এতে কেউ কেউ গবাদি পশুর মৃত দেহ মাটিতে দাফন করেছে আবার কেউ কেউ জবাই করে মাংস বিক্রয় করেছে।

উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. কাজী আসফুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, অতীব তাপমাত্রা ও আগাছানাশকের বিষক্রিয়ায়  কয়েকদিনে ২০-২৫টা গরু মারা গেছে  তা সত্য, তবে ওই সময় বৌদ্ধ পূর্ণিমা উপলক্ষ্যে সরকারি ছুটি ছিল। এ অঞ্চলে গবাদিপশুদের অজ্ঞাত রোগ কিংবা তড়কা ভাইরাস রোগ নেই। তড়কা রোগ হলে মৃত গরুর মাংস  মানুষ খেলে সেও মারা যাবে নিশ্চিত।

তিনি আরও বলেন, এ অঞ্চলে কৃষকদের প্রয়োজনে জুম, ফলদ বাগান, সবজি ক্ষেতে আগাছানাশক  প্রচুর পরিমাণে ব্যবহার করে। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে কীটনাশক ব্যবহারের আগে ও পরে গবাদিপশুকে  নাগালের বাইরে রাখার জন্য প্রচার করা হলে এ ক্ষতি হতো না। ভবিষ্যতে গণসচেতনতার জন্য এ কৃত্রিম কীটনাশক ব্যবহারের উপর কৃষক, খামারী ও গবাদিপশু মালিকদের নিয়ে সভা সেমিনারের মাধ্যমে উপজেলা প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি, কৃষি বিভাগ ও প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তাদের যৌথ সমন্বয়ের প্রচার প্রচারণা করা হলে  এ ধরনের ঘটনা প্রতিরোধ করার সম্ভব বলে পরামর্শ দেন তিনি।

 

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন