থানচি প্রতিনিধি:
থানচিতে সু-চিকিৎসার অভাবে অর্ধ-শতাধিক গৃহপালিত গরু, ছাগল ও শুকরের মৃত্যু হয়েছে। বুধবার থেকে শনিবার পর্যন্ত হঠাৎ করে সুস্থ অবস্থায় পশু গুলি মারা যাওয়ার ফলে উপজেলা ৪ ইউনিয়নের প্রায় শতাধিক মহল্লা আদিবাসীদের ভয় ও অতংঙ্ক বিরাজ করছে। গরু-ছাগল ও শুকর মালিকদের হতাশা শেষ নেই ।
এ দিকে উপজেলা প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা কর্মচারীদের কার্যালয়ের দির্ঘদিন ধরে অনুপস্থিতির কারণে গৃহপালিত গরু, ছাগল ও শুকর গুলি ভ্যাকসিন টিকা দিতে অপরাগতায় ও তাপমাত্রা বেশির কারণে এ সব গরু, ছাগল ও শুকর মারা যাওয়ার ঘটনা ঘটতে পারে বলে ধারনা করছেন অনেকে ।
খোঁজ নিয়ে জানা গেচ্ছে, বুধবার থানচি বাজারে ব্যবসায়ী সামশু ইসলামে ২টি, টিএডটি পাড়া নিবাসী নুরুল আমিনের ১টি, কামরুল ইসলামের ১টি, থানা পাড়া নিবাসী মোস্তাক আহম্মদ ১টি, ফজল মিঞা ১টি, ছাংদাক পাড়া নিবাসী পুলুখয় মারমা ১টি, বাজার পাড়া সিরাজ সওদাগর ১টি, নজির আহম্মদ ১টি, বয়ক হেডম্যান পাড়া রানি দাশ ১টি গরু হঠাৎ সুস্থ অবস্থা মারা যায়। বয়ক হেডম্যান পাড়া নিবাসী চিংক্য ম্রো জানান, নাইন্দারী পাড়া, ছাংদাক পাড়া, মরিয়ম পাড়া, বয়ন হেডম্যান পাড়া, টিএন্ডটি পাড়া, বাজার পাড়া, থানচি হেডম্যান পাড়াসহ আশে পাশে পাড়া গুলি গৃহপালিত গরু, ছাগল ও শুকরের হঠাৎ করে অজানা রোগে সুস্থ অবস্থা ২০-৩০ মিনিট মধ্যে মারা যায়।
থানচি বাজার পরিচালনা কমিটি সাবেক সাধারণ সম্পাদক জসিম উদ্দিন জানান, দীর্ঘদিন থেকে প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ও কর্মচারী উপস্থিত না থাকায় দুই তিন বছর ধরে গরু, ছাগল ,হাস-মুরগী, শুকর গুলিকে ভেকসিন টিকা দেয়া সম্ভব হচ্ছে না।
থানচি ইউনিয়নের সাবেক মেম্বার স্বপন কান্তি দাশ জানান, উপজেলা পরিষদের ন্যস্ত বিভাগের কর্মকর্তাদের উপস্থিতির নিশ্চিৎ করে সেবা প্রতিষ্ঠান গুলিতে সেবা বাড়ানো জন্য চেয়ারম্যান ও জনপ্রতিনিধিদের বহুবার বলছি কিন্তু কাজের কাজ হলনা। আমি গত একমাস ধরে প্রতিদিন একবার করে প্রাণী সম্পদ কার্যালয়ের ধরনা দিয়েছি কিন্তু একদিনও তাদের পেলাম না ।
সরেজমিনে গিয়ে উপজেলা প্রাণী সম্পদ কার্যালয়ের মোট ৬জন কর্মকর্তা কর্মচারী রয়েছে। ডা. কাজী আসরাফুল ইসলাম, প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা, ডা. খন্দকার মঈনুল হুদা ভেটারিনারি সার্জন, নাজিম উদ্দিন, ভেটারিনারি ফিল্ড এ্যাসিস্টেন ( ভিএসএ) মানষ কুমার দে, অফিস সহকারী, মো. জাহেদুল ইসলাম কৃত্রিম প্রজন্ম, ও মনিকা তংচংগ্যা কম্পনদার, তাদের এলাকাবাসী চিনেন না যোগাযোগ করা হলে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান চসাথোয়াই মারমা বলেন, ২০১৪ সালে আমি দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে তাদের কাউকে দেখা হয়নি এবং চিনিওনা।
যোগাযোগ করা হলে মো. জাহেদুল ইসলাম বলেন, অতিরিক্ত তাপ মাত্রা কারণে গরু-ছাগল ও শুকরের এক ধরনে ভাইরাস হতে পারে তা গরু ,ছাগল হলে পকড়া রোগ , শুকর হলে খঁড়া ( এসএমডি)রোগ হতে পারে এ রোগে সুস্থ অবস্থা থেকে হঠাৎ হয়। সুস্থ অবস্থা ভেকসিন টিকা দিলে প্রতিরোধ করার সম্ভব ।
তিনি আরও বলেন, তার কার্যালয়ের বিদ্যুৎ ও বিশুদ্ধ পানির অভাবের ফ্রিজ চালানো সম্ভব না হওয়ার পর্যাপ্ত পরিমান ভেকসিন টিকা রাখা সম্ভব নয়। সোলার প্যানেল দিয়ে দুই একটা টিকা স্টোক আছে। যোগাযোগ করা হলে প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. কাজী আসরাফুল ইসলাম বলেন, আমি গত মাসের যোগদান করছি কার্যালয়ের বিদ্যুৎ ও বিশুদ্ধ পানির অভাব ও অফিস করার মত পরিবেশ না থাকায় চলে আসছি, এখন ছুটিতে অবস্থান করছি। আগামীকাল থেকে সব কর্মকর্তা -কর্মচারী থানচিতে যাবে সাথে পর্যাপ্ত ভেকসিন টিকা ও অন্যান্য ঔষধ নিয়ে যাচ্ছি। সকল গরু, ছাগল ও শুকর মালিকদের সাথে জনসচেতনতা মূলক সভা সেমিনার করার প্রস্তুতি নিয়েছি।