parbattanews

দর্শনার্থীদের পদভারে মুখর মাটিরাঙ্গা সেনা জোন স্টল

15.04.2017_Matiranga Zone Stall NEWS Pic-05

নিজস্ব প্রতিবেদক, মাটিরাঙ্গা:

বাংলার চিরায়ত ঐতিহ্যের বড় ধরনের অনুসঙ্গ পুতুল নাচ, বানর খেলা, সাপ খেলাসহ পৃথক তিন তিনটি স্টল দিয়ে চমক তৈরি করেছে ১৭ ফিল্ড রেজিমেন্ট আর্টিলারী মাটিরাঙ্গা জোন। মাটিরাঙ্গা সেনা জোন পরিচালিত স্টলগুলো যেন বাঙ্গালী ঐতিহ্যের পরিচায়ক হয়ে দাঁড়িয়েছে মেলায় আগত দর্শনার্থীদের কাছে। তিন দিনের মেলার প্রথম দিনেই দর্শনার্থীদের পদভারে মুখর হয়ে উঠেছে মাটিরাঙ্গা সেনা জোনের তিনটি স্টল।

স্টলগুলোর প্রবেশ মুখেই রয়েছে নারিকেল ধরে থাকা নারিকেল গাছ, জলে ভাসা পদ্মফুল, গরুর গাড়ী, টার্কি। আছে পাকা কলা সমেত কলা গাছ। যা স্টলগুলোকে নবরুপে সাঁজিয়েছে। ঘুরে ফিরে অনেকেই ছুটে আসছে টার্কি আর পদ্মফুল দেখতে। চিরায়ত গ্রামীণ পরিবেশের আদলে তৈরি স্টলগুলোর সামনে দাঁড়িয়ে ছবি তোলায় ব্যস্ত দেখা গেছে অনেককেই।

পুতুল নাচ দেখতে শিশুদের পাশাপাশি নারীরাও ছুটছে সেনা জোন পরিচালিত ছোট্ট প্যান্ডেলে। দশ টাকার বিনিময়ে তারা পুতুল নাচ প্রত্যক্ষ করছে। মেলায় আগত শিশুদের আনন্দের বড় খোরাক হয়ে দাঁড়িয়েছে পুতুল নাচ। তারা কোন মতেই পুতুল নাচ মিস করতে চাচ্ছেনা। মেলায় আসবো আর পুতুল নাচ না দেখেই চলে যাবো এটা কি হয় এভাবেই বললেন, বরের হাত ধরে মেলায় আসা এক নববধূ। তার মতে জীবনে প্রথমবার সরাসরি দেখলাম পুতুল নাচ। নিরাপত্তাবাহিনীর কল্যাণেই এটা সম্ভব হলো বলে তাদেরকে কৃজ্ঞতা জানাতে ভুল করেননি এ নববধূ।

পাশেই রয়েছে দেশীয় ঐতিহ্যবাহী পোশাক নিয়ে ‘সেনা সম্ভার’। দেশীয় পোশাকের এক অনন্য ভাণ্ডার। স্বল্পমূল্যে নিজেদের পছন্দের পোশাকটি নিয়ে যেতে মেলায় আসা নারী দর্শনার্থীদের ভীড় দেখা গেছে সেনা সম্ভারে। তার পাশেই রয়েছে মাটিরাঙ্গা জোন পরিচালিত খাবারের দোকান। যেখানে মাটিরাঙ্গা জোনের ঐতিহ্যবাহী মিষ্টিসহ দেশীয় খাবারের এক অপূর্ব সম্মিলন ঘটেছে। মেলা ঘুরে পরিবারের সবাইকে নিয়ে এখানেই ভোজনে মেতে উঠছে দর্শনার্থীরা।

অন্যদিকে মাঠের এক কোনে জটলা করে দাঁড়িয়ে শিশু-নারীসহ নানা বয়সী দর্শনার্থীদের সাপ খেলা ও বানর নাচ দেখতে দেখা গেছে। মাটিরাঙ্গা সেনা জোন কোন ধরনের টাকা ছাড়াই মেলায় আগত দর্শনার্থীদের সাপ খেলা ও বানর নাচ দেখার সুযোগ তৈরি করে দিয়েছে।

গুইমারা রিজিয়নের তিন দিনব্যাপী বৈশাখী মেলা মাঠ ঘুরে কথা হয় ১৭ ফিল্ড রেজিমেন্ট আর্টিলারী মাটিরাঙ্গা জোনের জোনাল স্টাফ অফিসার ক্যাপ্টেন তাইনজিম হোসাইন‘র সাথে। গ্রামীণ ঐতিহ্যকে ফুঁটিয়ে তুলতে কোন ধরনের কার্পণ্য করা হয়নি বলেও জানালেন তিনি। আমাদের ঐতিহ্য আর সংস্কৃতিকে জনগণের সমানে তুলে ধরাই মূল উদ্দেশ্য বলেও জানান তিনি।

সব মিলিয়ে নানা রঙ আর নানা বর্ণে হাজারো দর্শকের উপস্থিতিতে মুখরিত হয়ে উঠছে গুইমারা সেনা রিজিয়ন আয়োজিত তিন দিনব্যাপী বৈশাখী মেলা। কোথায় যেন তিল ধারনের ঠাঁই নেই। উৎসবে মুখর মানুষের বাঁধ ভাঙ্গা জোয়ার মেলা মাঠের দিকে। যেন পাহাড়ের মানুষের সম্প্রীতির কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে গুইমারা রিজিয়ণ স্পোর্টস কমপ্লেক্স।

Exit mobile version