দর্শনীয় হয়ে উঠেছে মানিকপুর পর্যটন জোন : পরিদর্শনে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের পরিচালক

fec-image

কক্সবাজারের চকরিয়ায় নতুন পর্যটন স্পট পাহাড়ের সাথে নদীর মিতালিতে অপরূপ উপজেলার মানিকপুর। একে ঘিরে এই অঞ্চলের মানুষের মাঝে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির পাশাপাশি অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জনের উজ্জল সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। বান্দরবানের আলীকদমের পাহাড় থেকে শুরু হওয়া প্রমক্তা মাতামুহুরী নদী চলার পথে মানিকপুর পাহাড়ের পাদদেশে অসম্ভব মিতালীতে মেতেছে।

একদিকে পাহাড়ের নৈগর্সিক সৌন্দর্য অন্যদিকে পাহাড়ের নীচে বেড়ে চলা মাতামুহুরী নদীর বিশাল জলরাশি গোধুলি বেলায় ভ্রমনপিপাসুদের মাঝে অন্যরকম দর্শনীয় হয়ে উঠেছে। পাহাড় নদীর এই মিতালী স্বচক্ষে উপভোগ করতে এবং প্রকৃতির অপরূপ সানিধ্য পেতে এখন প্রতিদিনই মানিকপুর ছুটে যাচ্ছেন ভ্রমনপিপাসু সববয়সের মানুষ।

মানিকপুরের এই দর্শনীয় পর্যটন জোনকে সত্যিকার অর্থৈ ভ্রমন পিপাসু মানুষের জন্য আরো আকর্ষনীয় করে তুলতে চকরিয়া উপজেলা প্রশাসন সম্প্রতি সময়ে পর্যটন জোনের উন্নয়নে প্রদক্ষেপ নিয়েছেন। এরই অংশ হিসেবে কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের সার্বিক তত্তাবধানে ইতোমধ্যে চকরিয়া উপজেলা প্রশাসন প্রকল্প অনুমোদন সাপেক্ষে পরিকল্পিতভাবে অবকাঠামোগত উন্নয়নের মাধ্যমে মানিকপুর পর্যটন জোনকে ঢেলে সাজাতে কাজও শুরু করেছেন। এরই মধ্যে মানিকপুরের পর্যটন জোনটি বর্তমানে শৈল্পিকতায় ছোঁয়ায় নতুন রূপ পেতে শুরু করেছে।

এদিকে মঙ্গলবার (২২ ডিসেম্বর) চকরিয়া উপজেলা প্রশাসনের আহ্বানে মানিকপুর পর্যটন জোনের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড ও নতুন পর্যটন জোনের অপরূপ লোকেশন স্বচক্ষে দেখতে এসেছেন প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের পরিচালক ও কক্সবাজারের জেলা প্রশাসকের সহধর্মিণী গুলশান আরা।

এসময় সঙ্গে ছিলেন কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো.মাসুদুর রহমান মোল্লা, চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সৈয়দ সামসুল তাবরীজ ও চকরিয়া উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভুমি) মো.তানভীর হোসেন। উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসনের পরিবার সদস্যরা।

এদিন সকালে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের পরিচালক গুলশান আরা মানিকপুর পর্যটন জোনে পৌঁছালে তাকে স্বাগত জানান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সৈয়দ সামসুল তাবরীজ ও সুরাজপুর-মানিকপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আজিমুল হক আজিম।

সুরাজপুর-মানিকপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আজিমুল হক আজিম বলেন, পরিদর্শনকালে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের পরিচালক মহোদয় মানিকপুর পর্যটন জোনের প্রতিটি লোকেশন ঘুরে ঘুরে দেখেছেন। তিনি পাহাড়-নদীর মিতালীতে ভরপুর এই পর্যটন জোন দেখে অভিভুত হয়েছেন। পাশাপাশি পর্যটন জোনের সৌন্দর্য্যবর্ধনে চকরিয়া উপজেলা প্রশাসনের গৃহিত উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের ভুয়সী প্রশংসাও করেছেন। আশাকরি নতুন এই পর্যটন জোনের বদৌলতে একটি সম্ভাবনার নতুন সুরাজপুর-মানিকপুর দেখবে দেশবাসি।

ইউপি চেয়ারম্যান বলেন, অপরূপ মানিকপুরকে ঘিরে নতুন পর্যটন জোনের উজ্জল সম্ভাবনা দেখায় গত অক্টোবর মাসে সরেজমিন মানিকপুর পর্যটন স্পট পরিদর্শনে আসেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)। পরে বিষয়টি আমি চকরিয়া উপজেলা পরিষদের মাসিক উন্নয়ন সমন্বয় সভায় উপস্থাপন করি এবং মানিকপুরকে পর্যটন কেন্দ্র বা পর্যটন জোন ঘোষণার দাবি জানাই।

সভায় উপস্থিত সকলের মতামতের ভিত্তিতে ইউএনও মহোদয় সুরাজপুর-মানিকপুর ইউনিয়নকে নতুন পর্যটন জোন হিসেবে ঘোষণা দেন। একইসঙ্গে তিনি আগামী দুই মাসের মধ্যে সুরাজপুর মানিকপুরকে পর্যটকদের জন্য ভ্রমণ উপযোগী করার আশ্বাস দেন। এরই আলোকে বর্তমানে পর্যটন জোনের আধুনিকায়নে কাজ শুরু করেছেন চকরিয়া উপজেলা প্রশাসন।

চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সৈয়দ সামসুল তাবরীজ বলেন, মানিকপুরের পর্যটন জোনকে সত্যিকার অর্থে ভ্রমন পিপাসু মানুষের জন্য আরো আকর্ষনীয় করে তুলতে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এরই আলোকে জেলা প্রশাসনের তত্তাবধানে আমরা সম্প্রতি সময়ে পর্যটন জোনের উন্নয়নে কাজ শুরু করেছি।

তিনি বলেন, পর্যটন জোনটি ঢেলে সাজানো হচ্ছে সরকারি জমিতে। বিশেষ করে জেলা প্রশাসনের এক নম্বর খাস খতিয়ানের জমিতেই নতুন পর্যটন জোনকে বিকশিত করা হচ্ছে। এখানে বেশ কটি পরিবার অবৈধভাবে বসবাস করলেও তাদেরকে আমরা স্থায়ীভাবে জমি বন্দোবস্তি দেয়ার মাধ্যমে পুনর্বাসনের আওতায় নিয়ে আসছি। সেই লক্ষ্যে ইতোমধ্যে প্রশাসনিক কাজও শুরু হয়েছে। আশা করি এলাকাবাসি সবাই পর্যটন জোনের বিকাশে যার যার অবস্থান থেকে জেলা প্রশাসনকে সহযোগিতা করবে।

ইউএনও সৈয়দ সামসুল তাবরীজ বলেন, আমাদের বিশেষ আহবানে মানিকপুর পর্যটন জোনের সার্বিক কার্যক্রম দেখতে এসে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের পরিচালক গুলশান আরা মহোদয় পর্যটন জোনের প্রতিটি স্পট ঘুরে দেখেছেন। তিনি পর্যটন জোনের সৌন্দর্য্য ও গৃহিত উন্নয়ন কর্মকাণ্ড দেখে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। আশাকরি সবার সহযোগিতা থাকলে আমরা নতুন এই পর্যটন জোনকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যেতে পারবো।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: কক্সবাজার, চকরিয়া, পর্যটন
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন