parbattanews

দলীয় কোন্দলে প্রতিপক্ষের হামলায় গুরুতর আহত খাগড়াছড়ি আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক

Khagrachari Picture 01 copy

নিজস্ব প্রতিবেদক:

দলের আভ্যন্তরীন কোন্দলের জের ধরে প্রতি পক্ষের হামলায় খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নির্মলেন্দু চৌধুরী গুরুতর আহত হয়েছেন। তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। প্রতিবাদে খাগড়াছড়ি শহরের লাঠি মিছিল ও আওয়ামী লীগের অপর অংশের অফিসে হামলা ও ভাংচুর হয়েছে। নির্মেলেন্দু চৌধুরীর হামলার ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়েছে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংগঠন।

বৃহস্পতিবার বেলা ১২টার দিকে নারিকেল বাগান এলাকায় খাগগড়াছড়ি জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদ সদস্য নির্মলেন্দু চৌধুরীর উপর হামলার  ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শী আলমগীর হাসান পার্বত্যনিউজকে জানান, জাহেদুল আলমের উপস্থিতিতে একদল দুর্বৃত্ত নির্মলেন্দু চৌধুরীর মোটরসাইকেলের গতিরোধ করে। এক পর্যায়ে নির্মলেন্দু চৌধুরীকে লাথি মেরে মোটরসাইকেল থেকে ফেলে দিয়ে  মারধর করে। নির্মলেন্দু চৌধুরী এক পর্যায়ে আত্মরক্ষার্থে পালিয়ে রাস্তার পশ্চিম পাশে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মো. শানে আলমের বাসায় আশ্রয় নিলে মেয়র রফিকুল আলম তাকে শার্টের কলার ধরে বের করে নিয়ে আসেন এবং হাসপাতালে নিয়ে যান।

নির্মেলেন্দু চৌধুরীর উপর হামলার ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়লে খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপিসহ শত শত নেতাকর্মী হাসপাতালে ভীড় করেন।

খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাক্তার নয়ন ময় ত্রিপুরা পার্বত্যনিউজকে জানান, নির্মলেন্দু চৌধুরীর নাক দিয়ে রক্ত যাচ্ছে। শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।তিনি কথা বলতে পারছেন না। অবস্থা নাজুক হওয়ায় তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।

এদিকে হামলার প্রতিবাদে শহরে লাঠি মিছিল বের করে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপির অনুসারীরা। জাহেদুল আলম ও রফিকুল আলমের বিরুদ্ধে নানা শ্লোগান দিয়ে মিছিলটি শাপলা চত্বরে গেলে পুলিশের বাধার মুখে পড়ে। নেতাকর্মীরা পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙ্গে আওয়ামী লীগের অপর অংশের কার্যালয়ে হামলা চালায়। এ সময় কয়েকটি দোকানে হামলা ও কয়েকটি টমটম ভাংচুর হয়। এতে আতঙ্কে শহরের অধিকাংশ দোকানপাট ও যানবাহন সাময়িকভাবে বন্ধ হয়ে যায়।

জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি রণবিক্রম ত্রিপুরা এ হামলার জন্য, বহিষ্কৃত জেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. জাহেদুল আলম এবং তার ছোট ভাই খাগড়াছড়ি পৌর মেয়র রফিকুল আলমকে দায়ী করেন। তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন, জাহেদুল আলম।

এদিকে কেন্দ্রীয় সমাজ কল্যাণ পরিষদের প্রধান উপদেষ্টা ও পূজা উদযাপন কমিটি সিনিয়র সহ-সভাপতি আওয়ামী লীগ নেতা ও জেলা পরিষদ সদস্য  নির্মলেন্দু চৌধুরীর উপর হামলার ঘটনায় নিন্দা, প্রতিবাদ ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বিভিন্ন সংগঠন ও প্রতিষ্ঠান।

খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কংজরী চৌধুরী, কেন্দ্রীয় পূজা উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক তরুন কুমার ভট্টাচার্য, কেন্দ্রীয় সমাজ কল্যাণ পরিষদের সভাপতি এডভোকেট বিধান কানুনগো, সিনিয়র সহ-সভাপতি নির্মল কান্তি দাশ ও সহ-সভাপতি  সত্যজিত চৌধুরী পৃথকভাবে এ ঘটনায় নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে অবিলম্বে সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছেন।

খাগড়াছড়ি সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তারেক মোহাম্মদ আব্দুল হান্নান পার্বত্যনিউজকে জানান, পরিস্থিতি এখন শান্ত। হামলায় যাদের নাম এসেছে তাদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।

প্রসঙ্গত, পৌরসভা নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী মনোনয়ন দেওয়াকে কেন্দ্র করে খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামী লীগ দুইভাবে বিভক্ত হয়ে পড়ে। এর পর থেকে প্রতিনিয়ত খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপি ও সাধারণ সম্পাদক জাহেদুল আলমের অনুসারীদের পাল্টা-পাল্টি হামলা, মামলা ও ভাংচুরের ঘটনা ঘটছে।

Exit mobile version